বিদিশা দে মজুমদার। ছবি ফেসবুক।
চার বছর ফ্যাশন শ্যুটের দুনিয়ায়। আয় ভালই ছিল। ফ্যাশন শ্যুটের পাশাপাশি নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন বিদিশা দে মজুমদার। ফলে, অর্থাভাব তাঁর ছিল না। শেষের দিকে কাজের চাপে পড়াশোনাতেও মন দিতে পারতেন না! এমনটাই জানা গিয়েছেন সদ্য মৃত মডেলের ঘনিষ্ঠদের সূত্রে। সাফল্য যাঁর প্রায় মুঠোয়, হঠাৎ তিনি কেন জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন? তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাংশ বলছেন, পল্লবী দে-র মতো তাঁরও নাকি সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। সম্প্রতি কাছের এক জনকে বলেছিলেন, ‘‘পল্লবীর মতো ফুরিয়ে যেতে ইদানীং আমারও খুব ইচ্ছে করে!’’ তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এ কথা জানিয়েছেন।
অথচ এই বিদিশাই পল্লবীর মৃত্যুর খবর ফেসবুকে ট্যাগ করে লিখেছিলেন, ‘মানে কী এ সব, মেনে নিতে পারলাম না’। ওই ঘটনার ১০ দিনের মাথায় নাগেরবাজারের ফ্ল্যাট থেকে তাঁরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! তিনি কি অবসাদে ভুগছিলেন? বিদিশার ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিলেন। কাজে ততটা মন ছিল না। অকারণে উদাসী। তাঁর পোস্ট করা ইনস্টাগ্রামের রিল ভিডিয়োর নেপথ্য-গান তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। সেখানে শুধুই বিরহ। ঘনিষ্ঠ ওই সূত্রের দাবি, এক নয়, একাধিক সম্পর্ক ছিল বিদিশার। এ কথা জানতেন হাতেগোনা কয়েক জন। তাঁরা জানতেন, বিদিশা প্রথমে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন রাজারহাটের এক যুবকের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের পরে অজানা কারণে তিনি ‘অতীত’।
এর পর বিদিশার জীবনে আসেন পেশায় শরীরচর্চার এক প্রশিক্ষক। ফর্সা, পেশিবহুল চেহারা। মুখে সযত্নে ছাঁটা হাল্কা দাড়ি-গোঁফ। তাঁকে নাকি চোখে হারাতেন বিদিশা। সুযোগ পেলেই ফোন। দেখাসাক্ষাৎ। ঘনিষ্ঠ ওই সূত্রের দাবি, বিদিশা সম্প্রতি চিকিৎসকের কাছেও গিয়েছিলেন। ঋতুস্রাবের সমস্যা ছিল তাঁর। চিকিৎসক তাঁকে আলট্রা সোনোগ্রাফির পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের চাপে নিজের চিকিৎসা করারও সময় ছিল না তাঁর। এর মধ্যেই ওই প্রশিক্ষকের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বলে বিদিশার ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি।
কাজের চাপে বিদিশা ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতেন না বলে জানিয়েছেন তাঁর এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। তাঁর দাবি, এতে তাঁর রক্তচাপ কমে যায়। প্রায়ই মাথা ঘুরত। তবে ওই প্রশিক্ষকের ‘চাপে’ তিনি আবার খাওয়াদাওয়া নিয়মিত করা শুরু করেন। এর মধ্যেই সম্পর্কে বিচ্ছেদ। বিদিশা বিষণ্ণতায় ডুবেছেন। ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, তিনি নিয়মিত নেশা করতেন। ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর কাছে অনুযোগ জানিয়েছিলেন, তিনি প্রেমিককে ছেড়ে থাকতে পারেন না। অথচ প্রেমিক ইদানীং সেটাই দিব্যি পারছেন! ইনস্টাগ্রামে নিজের ছবি দিয়ে বিদিশা লিখেছেন, ‘কী অদ্ভুত পরিস্থিতি! ও আমার হবে না, কোনও দিন। আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারব না, কোনও দিন!’
বিদিশার ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য, একতরফা ভালবাসা ছিল তাঁর। প্রায়ই দামি উপহার দিতেন প্রেমিককে। বিদিশার উপার্জন ভাল থাকায় প্রেমিকের পাশাপাশি নিজের পরিবারকেও দেখতেন। বাবা বেসরকারি কর্মী। মা সংসার সামলান। বাড়িতে বিদিশা ছাড়া তাঁর বছর ১২-১৩-র এক বোন রয়েছে। সবার সব দায়িত্ব তিনি হাসিমুখে পালন করতেন। তার পর খরচ করতেন নিজের জন্য। সম্প্রতি প্রেমিকের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। সে কথা জানিয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ জনকে। কী কথা হয়েছে, সে কথা বলতে ফোনও করেন মঙ্গলবার। তবে ওই ঘনিষ্ঠ সেই ফোন ধরতে পারেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই পরিচিত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘যদি সে দিন ফোনটা ধরতে পারতাম! মনের ভিতরে জমে থাকা যন্ত্রণা অনেকটাই হয়তো হালকা হত। বিদিশাকে হয়তো মাত্র কুড়িতেই তা হলে ফুরিয়ে যেতে হত না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy