Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
arjun chakrabarty

Arjun Chakraborty: ‘এখানে কাজ করে যে শান্তি আছে, সেটা হিন্দিতে পাব না’

দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ার পরে তাঁর আগামী ছবি এ শহরে মুক্তি পাচ্ছে। কথা বললেন অর্জুন চক্রবর্তী

অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী।

অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share: Save:

প্র: প্রায় দু’বছর অপেক্ষার পরে মুক্তি পাচ্ছে আপনার ছবি। অপুর চরিত্র কি বাড়তি চাপ তৈরি করেছিল?

উ: হ্যাঁ, অপু বলেই একটা বাড়তি চাপ যেমন ছিল, উত্তেজনাও ছিল। তবে চুল-দাড়ি বাড়ানো ছাড়া আর বিশেষ কিছু করতে হয়নি। ২০১৯-এর নভেম্বরে শেষ হয়ে গিয়েছিল ‘অভিযাত্রিক’-এর শুটিং। দু’বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সকলেই অধৈর্য হয়ে যাচ্ছিলাম। ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের একেবারে শেষ অংশটা, যেটা সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে ছিল না, ‘অভিযাত্রিক’-এ সেই জায়গাটাই ধরতে চেয়েছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। সত্যজিৎ যেমন লীলার চরিত্রটা দেখাননি, এখানে সেটা রয়েছে। অপর্ণার চরিত্রটাও এসেছে একেবারে অন্য রকম ভাবে। পুরো ছবিটা সাদাকালোয় বলে সেটা আরও বেশি করে নস্ট্যালজিয়া উসকে দেবে বলেই আমার বিশ্বাস। রঙিন হলে এ ছবি ঠিক জমত না।

প্র: সম্প্রতি অরিন্দমের শীলের ছবি ‘খেলা যখন’-এর শুট করে এলেন ওড়িশায়...

উ: হ্যাঁ... প্রায় পুরোটাই বারিপদার বেলগড়িয়া প্যালেসে শুট করলাম। ছবিটায় আমি র এজেন্টের চরিত্রে। এমনিতেই আমার আর্মি বা সেই ধরনের চরিত্রের প্রতি আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। আর এই চরিত্রটা যেন একেবারে আমার জন্যই তৈরি! প্রচুর অ্যাকশন, ছোটখাটো স্টান্ট ছিল... যেগুলো করে খুবই মজা পেয়েছি।

প্র: আপনি তো প্রায়ই জিমে ঘাম ঝরানোর ছবি পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়...

উ: এক সময়ে শাহরুখ খানের মতো সিক্স প্যাকস বানাতে হবে বলে অনেকে জিমে আসতেন। এখন সকলেই জানেন, ফিট না থেকে উপায় নেই। আয়ুষ্মান খুরানার অ্যাবস রয়েছে বলে তিনি সফল, এমনটা কিন্তু নয়। কিন্তু একজন অভিনেতা হিসেবে তিনি জানেন, সব ধরনের চরিত্র করতে গেলে নিজের চেহারা সে ভাবেই মেনটেন করতে হবে।

প্র: এখন কীসের শুটিং করছেন?

উ: সৌমিক হালদার পরিচালিত হইচই-এর একটা ওয়েব সিরিজ় ‘মহাভারত মার্ডারস’-এর শুট চলছে। এ ছাড়া সম্প্রতি জ়ি ফাইভে ‘মুক্তি’ বলে একটা পিরিয়ড পিস করেছি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘এক্স=প্রেম’ আর ‘খেলা যখন’-এর কাজও অল্প বাকি রয়েছে।

প্র: এখন তো টলিউডের বহু অভিনেতা হিন্দি সিরিজ়-সিনেমায় কাজ করছেন। আপনার সে রকম কোনও ভাবনা আছে?

উ: এক কথায় বলতে গেলে, না। আমি এখনও অবধি যা পেয়েছি, সেটা তো এই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্যই। এখানে পরপর কাজ করছি, বেশ ভালই আছি। তার মানে এই নয় যে, এটা আমার কমফর্ট জ়োন হয়ে গিয়েছে কিংবা এখানে ১১ বছর ধরে কাজ করছি বলে নিজের জায়গা ছেড়ে যেতে চাই না। বাংলার জন্য আজ যতটুকু হতে পেরেছি, সেটা অবহেলা করাটা ঠিক নয়। এখানকার কমিটমেন্টটাই আমার কাছে প্রাধান্য পাবে সব সময়ে। তবে অবশ্যই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে চাইব। সে রকম সুযোগ এলে নিশ্চয়ই করতে যাব। কিন্তু আমার বেস শিফট করার উৎসাহ নেই খুব একটা।

প্র: এক সাক্ষাৎকারে সব্যসাচী চক্রবর্তী একবার বলেছিলেন, মুম্বইয়ে পরপর কাজ করলেও সেখানে তিনি থিতু হতে চাননি কারণ, তা হলে তাঁর নাটক করা বন্ধ হয়ে যেত...

উ: এখন বেশির ভাগ মানুষের ওই ‌আত্মিক সংযোগও নেই, থিয়েটারের মতো একটা চালিকাশক্তিও নেই। মঞ্চে অভিনয় আমিও খুব বেশি করিনি, তবে একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি। হয়তো ভেতো বাঙালি বা ঘরকুনোর মতো শোনাবে। তবুও বলব, এখানে কাজ করে যে শান্তিটা পাই, সেটা ওখানে কখনওই পাব না। হতে পারে ওখানে গেলে অনেক টাকা পেলাম, কিন্তু সেটাই যদি একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তা হলে তো একটা-দুটো কাজের পরে হতাশ লাগবে। কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র করলেই তো আর মুম্বইয়ে থিতু হয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে ওখানে অডিশনের পদ্ধতি খুব স্বচ্ছ। যিশুদা (যিশু সেনগুপ্ত), পরমদা (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়), বুম্বামামুর (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) মতো অনেকেই পরপর কাজ করছেন এখন। এখানকার প্রতিভা জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি পাচ্ছে, এটা খুবই সদর্থক বিষয়। বাবা মুম্বইয়ের প্রায় সব বড় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছিলেন বহু আগেই। আর যত কাজ করেছেন, তার প্রায় তিনগুণ ‘না’ বলেছেন। এমনকি দিনকয়েক আগেও আমি এই ‘না’ বলার ঘটনাই শুনলাম বাড়িতে। কোন প্রজেক্ট, সেটা আর বলতে চাই না।

প্র: সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার মেয়ের ছবি পোস্ট করেন, তার চেহারা আড়ালে রেখে...

উ: আসলে ব্যক্তিগত ভাবে আমি ওভার শেয়ারিং পছন্দ করি না। এটা আমার আর শ্রীজার (স্ত্রী) সচেতন সিদ্ধান্ত। যাঁরা সেটা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই একেবারেই। যখন মেয়ের ছবি দিতে খুব ইচ্ছে করে, স্ট্র্যাটেজিক্যালি দিই। সোশ্যাল মিডিয়া যদি আমাদের পেশার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ না হত, আমি বোধহয় থাকতাম না।

অন্য বিষয়গুলি:

arjun chakrabarty Bollywood Tollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy