ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
প্র: গানের পাশাপাশি ব্যবসাটা তাল মিলিয়ে চালাচ্ছেন, সমস্যা হচ্ছে না?
উ: সত্যিই... মাঝে মাঝে ভাবি একটা গানের জায়গা এ ভাবে গদিঘর হয়ে গেল (জোরে হাসি)! না, তবে একটু সমস্যা হচ্ছে। টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে হোমওয়র্ক করতে হচ্ছে। যেটা আগে কোনও দিন করিনি। লোকের কথার উপর নির্ভর করতে হয়। একটা কাজ শেষ করতে লোকে এক মাস বলে দু’মাস কাটিয়ে দেয়... তার উপর ঘুরতে ভালবাসি। ফলে সব মিলিয়ে তালগোল পাকিয়ে আছি (হাসি)।
প্র: অনেক দিন আপনার গান প্লেব্যাকে বা অ্যালবামে শোনা যাচ্ছে না...
উ: কেউ ডাকে না তো! লোকে হয়তো ভাবছে, লোপামুদ্রা বুড়ো হয়ে গিয়েছে। ওকে গান দিয়ে কী হবে, কমবয়সি কাউকে দেওয়াই ভাল! আমি অতটা বুড়ো হইনি কিন্তু। যখন শুরু করেছিলাম, তখন আমার মতো গলা নায়িকাদের লিপে মানাতে একটু মুশকিল হতো, সেটা মানছি। কিন্তু এখন তো সে সব কোনও ব্যাপার নেই। ভারী গলায় গাইছে অনেকেই। এটাও ঠিক যে, আমার প্লেব্যাক করায় প্রচণ্ড উৎসাহ নেই। তবে এ বছর চারটে গান রিলিজ় করব ভেবেছি। অ্যালবাম করব কি না জানি না। হয়তো অনলাইনেই ছাড়ব। শ্রীকান্ত (আচার্য), জয় (সরকার) সুর করছে। এগুলো কিন্তু একটু আগের দিকে বানানো গান। শ্রীকান্তর গানটা আমি ফেলে রাখতে চাই না। কারণ এত সুন্দর গান, যে কেউ রেকর্ড করে ফেলত। আর জয়কে বলেছি, আমার গানটা অন্য কাউকে দিলে গুলি করে দেব (হাসি)!
প্র: তা হলে আপনি কি শুধু শো করেই সন্তুষ্ট?
উ: একেবারেই নয়। একই গান গাইতে হয় সব শোয়ে। আমার একটু নতুন গান গাইতে ভাল লাগে।
প্র: মাঝে শোনা গিয়েছিল জয় সরকারের সঙ্গে আপনার বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে... আপনারা কি আবার সম্পর্কে ফিরেছেন?
উ: সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের কোনও দিন বিচ্ছেদ হয়নি। মাঝে জয় আর আমার সঙ্গে গিটার বাজাচ্ছিল না। তখন কিছু লোক মনে করেছিল, আমাদের বুঝি ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে! কিন্তু ওকে মিউজ়িক ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করার দিকে আমিই ঠেলেছিলাম। কত দিন শুধু আমার সঙ্গেই গিটার বাজাবে... ও এত ট্যালেন্টেড! গুজবটা রটে যাওয়ার আর একটা কারণ হল, আমি খুব ঝগড়ুটে। প্রকাশ্যেও ঝগড়া করি জয়ের সঙ্গে। ওর সঙ্গে তো কাজ করতে গেলেই ঝগড়া! বর-বউয়ের মধ্যে ইগো কনফ্লিক্ট ভীষণ! আর গুজব রটবেই। এক বার শুনেছিলাম, কবীর সুমনের সঙ্গে নাকি আমার বিয়ে (জোরে হাসি)!
প্র: মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রির কোন বদলগুলো সবচেয়ে অপছন্দের?
উ: আমি তো অনেক শো করি। দেখতে পাই, বাঙালির মধ্যে বড্ড গিভ অ্যান্ড টেক মনোভাব এসে গিয়েছে। টাকা দিয়েছি মানে আর কিচ্ছু মানি না... এ রকম একটা ব্যাপার। দুঃখ হয়। যখন তখন যা খুশি বলে দেওয়ার সাহস কিন্তু লোকের আগে ছিল না। ‘আপনার গানটা খুব খারাপ হয়েছে...’ সরাসরি কেউ বলত না আগে এ রকম। এখন বলে। আসলে সোশ্যাল মিডিয়া আসায় সেলেব্রিটিরা খুব সহজলভ্য হয়ে গিয়েছেন। আমি তো ইদানীং শোয়ের পরে সেলফিও তুলি না! সবচেয়ে দুঃখের হল, কোথাও বাংলা গান না চলা। সিনেমার গানের কথা বলছি না। কিন্তু বেসিক বাংলা গানের জন্য কারও কোনও উৎসাহ নেই।
প্র: এখন তো সিনেমার গান আর বেসিক গানের কথা-সুরে তেমন কোনও তফাত হয় না...
উ: তার কারণ সিনেমায় এখন একচ্ছত্র অধিপতি শ্রীজাত। ফলে বাংলা গানে আধুনিক কবিতার ছাপ থাকবেই। এই জেনারেশনের মধ্যে কোথাও না কোথাও কবীর সুমন, নচিকেতা, অঞ্জন দত্তের প্রভাব রয়ে গিয়েছে। ওগুলো তো বেসিক গানই। সেগুলো শুনেই তো এই জেনারেশন বড় হয়েছে। সিনেমায় তারই প্রতিফলন ঘটছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy