Famous Photographer Jagdish Mali was found semi-nude wandering in the Mumbai Streets dgtl
bollywood
মেয়ে নায়িকা, মুম্বইয়ের রাজপথে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায় এই বিখ্যাত ফোটোগ্রাফারকে
বিখ্যাত আলোকচিত্রীর এই করুণ পরিণতির কথা প্রকাশ হতেই শোরগোল পড়ে যায়। স্বভাবতই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় মেয়ে অন্তরাকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ১৩:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
তারকাদের জনপ্রিয় করতে আলোকচিত্রিদের ভূমিকা সব সময়েই অনস্বীকার্য। আশি ও নব্বইয়ের দশকে সে রকমই এক জন আলোকচিত্রী ছিলেন জগদীশ মালি। বহু বলিউড তারকার উজ্জ্বলতার নেপথ্য-কারিগর ছিল তাঁর হাতের লেন্স।
০২১৯
জগদীশের জন্ম ১৯৫৪ সালের ১৮ জানুয়ারি। স্কুলের পড়ায় কোনওদিনই মন বসত না তাঁর। মুম্বইয়ের বান্দ্রার মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া জগদীশের ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল ফোটোগ্রাফার হওয়া।
০৩১৯
আশির দশকে ‘সিনে ব্লিৎজ’ পত্রিকায় যোগ দেন জগদীশ। সে সময় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তিনি ছিলেন রেখার বিশেষ পছন্দের আলোকচিত্রী।
০৪১৯
‘গুলাম’ ছবির সময়ে তাঁর তোলা আমির খানের ছবি সব মহলে প্রশংসিত হয়েছিল। বলিউডের বাকি নামী আলোকচিত্রী গৌতম রাজাধ্যক্ষ, আশোক সালিয়ানের সঙ্গে একই সারিতে বসানো হয় জগদীশ মালিকে।
০৫১৯
আশি ও নব্বইয়ের দশকে বলিউডে এমন তারকা বিরল, যিনি জগদীশ মালির ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। তাঁর হাতে লেন্সবন্দি হওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন তারকারা।
০৬১৯
অনুপম খের, শাবানা আজমি, নীনা গুপ্ত, ইরফান খান, মনোজ বাজপেয়ী-সহ অসংখ্য তারকার সঙ্গে কাজ করেছেন জগদীশ। শত্রঘ্ন সিংহ তাঁকে ছাড়া আর কারও কাছে ছেলে লবের পোর্টফোলিয়ো বানাতে রাজি ছিলেন না।
কিন্তু কোনওদিন অন্তরা জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রথম সারিতে আসতে পারেননি। অভিনেত্রী হিসেবে পিছিয়ে পড়ে চেষ্টা করেছিলেন পরিচালনাতেও। ২০০৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর পরিচালনায় ‘মিস্টার ইয়া মিস’।
০৯১৯
কিন্তু সেখানেও সাফল্য অধরাই ছিল অন্তরার কাছে। ধীরে ধীরে তিনি হারিয়ে যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে। তার আগে বিস্মৃত হয়ে গিয়েছেন তাঁর বাবা, আলোকচিত্রী জগদীশ মালিও।
১০১৯
বেশ কয়েক বছর পরে, ২০১৩ সালের গোড়ায় স্বল্পখ্যাত নায়িকা মিঙ্ক ব্রার চিনতে পারেন জগদীশকে। সে সময় মিঙ্ক রাস্তায় দুঃস্থ ও ভবঘুরেদের মধ্যে কম্বল বিলি করছিলেন। মিঙ্কের দাবি, জগদীশ সে সময় প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে মুম্বইয়ের ভারসোভার পথে পথে ঘুরছিলেন।
১১১৯
বিখ্যাত আলোকচিত্রীর এই করুণ পরিণতির কথা প্রকাশ হতেই শোরগোল পড়ে যায়। স্বভাবতই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় মেয়ে অন্তরাকে।
১২১৯
সলমন খান তো সরাসরি কর্কশ ভাষায় আক্রমণ করেন অন্তরাকে। সলমনের বক্তব্য ছিল, অন্তরা উদ্যোগী হয়ে সাহায্য করলে তাঁর বাবার এই অবস্থা হত না।
১৩১৯
যদিও অন্তরা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, জগদীশ মালি ডায়াবেটিক ছিলেন। তাঁকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হত। কিন্তু ইনসুলিনের ডোজ একটু এ দিক ও দিক হলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
১৪১৯
সে সময়ে নাকি জগদীশ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন যখন তখন। তিনি যে বাবার দেখভালের ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন, সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন অন্তরা।
১৫১৯
মেয়ের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না জগদীশ মালিরও। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, তিনি আদৌ অসুস্থ নন। তাঁর এবং তাঁর মেয়ের কারও কাছ থেকে কোনও সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
১৬১৯
২০১৩ সালের ১ মে নিজের বাড়ির শৌচাগারে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন জগদীশ। তাঁকে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৭১৯
১২ দিন ধরে চলে তাঁর চিকিৎসা। হাসপাতালেই মাল্টি অর্গ্যান ফেলিয়োর হয়ে ১৩ মে প্রয়াত হন জগদীশ। মাত্র ৫৯ বছর বয়সে।
১৮১৯
বলিউডের প্রায় কোনও তারকাই হাসপাতালে যাননি জগদীশকে দেখতে। শুধুমাত্র পরিচালক অশোক পণ্ডিত এবং অভিনেত্রী সর্বাণী মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর পাশে।
১৯১৯
কার্যত সবার অগোচরেই চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় জগদীশ মালির হাতের ক্যামেরা। তাঁর বন্ধু অশোক পণ্ডিত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জাগতিক সব বিষয়েই উদাসিন ছিলেন জগদীশ। প্রথম জীবনে সুরাসক্ত থাকলেও পরে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছিলেন। ঘনিষ্ঠ এই বন্ধুর কথায়, জগদীশ ছিলেন সংসারে থাকা এক ফকিরের মতোই।