Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

‘সত্যি বলতে কী, ‘ভুটু ভাইজান’ এতটা হিট করবে ভাবিনি’

‘হামি’ সিনেমার ‘ভুটু ভাইজান’ ব্রত জনপ্রিয়। কিন্তু পর্দার ভুটু ছাড়াও রয়েছে গানের ওপারের আরেক ভুটু। পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রেয়ান ভট্টাচার্যের ‘হামি’ কাহিনি শুনলেন বরুণ দে ‘হামি’ সিনেমার ‘ভুটু ভাইজান’ ব্রত জনপ্রিয়। কিন্তু পর্দার ভুটু ছাড়াও রয়েছে গানের ওপারের আরেক ভুটু। পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রেয়ান ভট্টাচার্যের ‘হামি’ কাহিনি শুনলেন বরুণ দে

গানের রেকর্ডিংয়ে শ্রেয়ান। নিজস্ব চিত্র

গানের রেকর্ডিংয়ে শ্রেয়ান। নিজস্ব চিত্র

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০১:০২
Share: Save:

প্রশ্ন: ‘ভুটু ভাইজান’ গাওয়ার সুযোগ এল কি ভাবে? কী ভাবে জানলে?

উত্তর: অনিন্দ্যদা ফোন করেছিলেন। ‘হামি’র সঙ্গীত পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। বাবা-মায়ের কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারি। বাবা-মা বললেন যে রেকর্ডিং আছে। কলকাতায় যেতে হবে। তো গেলাম। এর দিন কয়েক আগেই মুম্বই থেকে ফিরেছিলাম।

প্রশ্ন: ছবিতে প্লে ব্যাক তো আগেও করেছ?

উত্তর: সিনেমায় প্রথম প্লেব্যাক বছর দুয়েক আগে। ‘খুঁজে বেড়াই তারে’ ছবিতে। ‘চাঁদের পাহাড়’ ছবিতে একটা গান গেয়েছিলাম। তবে সেটা কোরাস ছিল। ‘ধূমকেতু’ ছবিতে গান গেয়েছি। এখনও মুক্তি পায়নি এটা। আরেকটা গান রেকর্ডিং হয়েছে। তবে সিনেমার নাম এখনও ঠিক হয়নি।

প্রশ্ন: মুম্বইয়ে সুযোগ মিলেছে তো?

উত্তর: অরিজিৎ সিংহের ছবিতে। রেকর্ডিং হয়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন: ‘ভুটু ভাইজান’ গাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?

উত্তর: নতুন অভিজ্ঞতা। সাধারণত, রেকর্ডিং যখন হয় তখন টিউনটা ফোনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাতে আগেভাগে বোঝা যায়। ভুটু ভাইজানে আমি কিচ্ছু জানতাম না। রেকর্ডিং করতে গিয়েই লিরিকস প্রথম হাতে পেয়েছি। আর অরিন্দমদা ভীষণ সাহায্য করেছে। আমার ওই গানটার ট্র্যাক তখনও তৈরি হয়নি। গিটারের স্ট্রোকে রেকর্ডিং হয়। ট্র্যাকটা রেকর্ডিংয়ের পরে হয়েছে।

প্রশ্ন: ‘হামি’তে তো আরও গান আছে?

উত্তর: আরেকটা গানের ট্র্যাকটা তৈরি করা ছিল। ওটা কোরাস ছিল। গানটা করতে একটু সময় লেগেছিল।

প্রশ্ন: ব্রত, তিয়াসদের কথা বলো?

উত্তর: ‘হামি’ টিমের সবাই খুব ভাল। শিবপ্রসাদ আঙ্কল খুব ভাল। উনি ভীষণ ডাউন টু আর্থ। আর ভীষণ সাপোর্ট করেন আমাদের সবাইকেই। ব্রত (ভুটু), তিয়াসার সঙ্গেও বন্ধুত্ব হয়েছে। সবার সঙ্গেই আলাপ হয়েছে।

প্রশ্ন: খুব ব্যস্ত এখন?

উত্তর: পরপর প্রোমোশন চলছে। কলকাতার বড় বড় হলে প্রোমোশন হচ্ছে। ছবি শেষ হচ্ছে। ছবির টিমের সকলে হলে ঢুকছেন। লাইভ গাইছি। শোগুলো হাউসফুল। ভাল লাগছে।

প্রশ্ন: এরকম জনপ্রিয়তা ভেবেছিলে?

উত্তর: সত্যি বলতে কী, ‘ভুটু ভাইজান’ এতটা হিট করবে ভাবিনি। রেকর্ডিংয়ের সময় অরিন্দমদা বলছিলেন, দেখবি, গানটা হিট করবে। আমি গান গাইতে হয় গেয়ে দিয়েছি। শুনেছি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গান দশ লক্ষ ভিউ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আরও আরও ভিউ হোক। লোকজন বলছে, এখনও পর্যন্ত গানটি বছরের সেরা ‘পার্টি সং’।

প্রশ্ন: এফএম-এ তো প্রায়ই গানটা শোনা যাচ্ছে?

উত্তর: দিন কয়েক আগের কথা। একদিন একটা প্রোমোশনের পরে আরেকটা প্রোমোশনে যাচ্ছিলাম। শিবু আঙ্কলের গাড়িতে আমরা সবাই একসঙ্গে যাচ্ছিলাম। শিবু আঙ্কেল এফএম চালিয়েছেন। চ্যানেলে বলল, হামি ৫- এর মধ্যে ৪ নম্বর পেয়েছে। গানটা বাজতে সবাই গাড়ির মধ্যে কত মজা করেছিলাম। মেট্রোয় আমার গান বাজছে, দেখেছি।

প্রশ্ন: ‘হামি’তে তো অভিনয়ও করেছ?

উত্তর: শিবু আঙ্কল গান গেয়ে নাচতে নাচতে অভিনয় শিখিয়েছিল।

প্রশ্ন: হাতে কোনও অফার আছে?

উত্তর: হিন্দি ছবির অফার আছে। জাভেদ আলির সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছি। আরেকটা গানের কথাও আছে।

প্রশ্ন: গানের শুরু কী ভাবে?

উত্তর: চার বছর বয়স থেকেই গান গাইছি। বাবা-মা’র উত্সাহে গাইতে শুরু করি। তালিম শুরু গুরুজির (জয়ন্ত সরকার) কাছে। ধ্রুপদী সঙ্গীত এবং আধুনিক বাংলা গান শিখেছি। আস্তে আস্তে মিউজিকটা বুঝেছি। তিনটে রিয়্যালিটি শোয়ের প্রথমটায় থার্ড হলাম। দ্বিতীয়টায় সেকেন্ড। পরেরটায় ফার্স্ট।

প্রশ্ন: স্কুলে বন্ধুরা নতুন নাম দিল?

উত্তর: না, না। সবাই শ্রেয়ান বলে ডাকে। বড়রা কেউ কেউ মজা করে ‘ছোটে ওস্তাদ’ বলে। টিচাররা খোঁজখবর রাখেন। কোন ছবিতে কী গান গাইলাম, সব।

প্রশ্ন: একটা অ্যালবাম আছে না?

উত্তর: ২০১৫ সালের। নাম ‘ইচ্ছে আমার’। আমার প্রথম অ্যালবাম। পুরস্কারও পেয়েছে। এখন আর অ্যালবামের ভাবনা নেই।

প্রশ্ন: ইউটিউব চ্যানেল খুলেছ?

উত্তর: বেশ ভালই সাড়া পাচ্ছি। ১৫ হাজারের উপর সাবস্ক্রাইবার হয়েছে। রিমেক গান করেছি। এক-একটা গানে ১২ লক্ষ ভিউ হয়েছে।

প্রশ্ন: পছন্দের খাবার?

উত্তর: অবশ্যই মাংস। মাংস মানে চিকেনই। মাটন ততটা নয়। মাছটা আমি বেশি খাই না। পমফ্রেট মাছ আর চিংড়ি ভাল লাগে। ইলিশ তো আছেই। ভেলপুরি। ফুচকা ভাল লাগে।

প্রশ্ন: কার ছবিতে গান গাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে?

উত্তর: তেমন কোনও পছন্দ নেই। যিনি গাওয়াবেন, তাঁর গানই গাইব। গান গাইতে পারলেই হল।

এক রিয়্যালিটি শো-য়ে অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

প্রশ্ন: গান গাওয়া শুরু চার বছর বয়সে। এখন তোমার বয়স বারো। কি পরিবর্তন দেখছ?

উত্তর: কিছু পরিবর্তন তো হয়েছেই। এখন আমাকে দেখলে অনেকে ছবি তুলতে আসে। এটা ভাল লাগে।

প্রশ্ন: মেদিনীপুরের ডিএভি স্কুলে তোমার ক্লাস সেভেন। এরপর পড়াশোনা?

উত্তর: পড়াশোনা আর গান দু’টো একসঙ্গেই চলবে। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে আছে। কিন্তু মনে হয় না অত টাইম দিতে পারব। গান নিয়েই থাকার ইচ্ছে বেশি।

প্রশ্ন: পছন্দের গায়ক কে?

উত্তর: অরিজিৎ সিংহকে ভীষণ ভাল লাগে। এক শোয়ে ওঁর সঙ্গে প্রথম দেখা। সেটা বাংলার ছিল। উনিও ডাউন টু আর্থ। মুম্বই গিয়েছি। বাবাকে দেখেই উনি বলেছিলেন, আবার কেন শ্রেয়ানকে রিয়্যালিটি শোয়ে এনেছেন। গলায় চাপ পড়বে। বাবা তখন বলেছিলেন, সারা ভারতে একটা পরিচিতি হবে। তাই...। উনি গলা সাধার কথা বলেছিলেন।

প্রশ্ন: আশা ভোঁসলে কী বললেন?

উত্তর: আশাজি মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেছেন। শ্রীদেবীর সঙ্গে দু’বার দেখা হয়েছে। এ আর রহমান, শাহরুখ খান, সলমন খান, ক্যাটরিনা কাইফ-সহ অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে।

প্রশ্ন: তোমার নাকি গাড়ির শখ?

উত্তর: গাড়ি খুব ভাল লাগে। গাড়ি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। গাড়ির ম্যাগাজিন পড়ি। ছবি দেখি। রোলস রয়েস ভাল লাগে।

প্রশ্ন: বিদেশেও তো শো করেছ?

উত্তর: বিদেশে কয়েকটা শো করেছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছি।

প্রশ্ন: বন্ধুদের কথা বলো?

উত্তর: কাকে ছেড়ে কার কথা বলব। স্কুলে অনেক ভাল বন্ধু আছে। ওরা সব সময় আমার পাশে থাকে।

প্রশ্ন: আর বেস্ট ফ্রেন্ড?

উত্তর: বেস্ট ফ্রেন্ডের সেকশন তো আলাদা হয়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন: তুমি তো এখন স্টার?

উত্তর: না, না। এখন এসব ভাবার সময় নয়। ‘সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পে’ আশাজি বলেছিলেন, কোনও দিকে না ভেবে শুধু গান গেয়ে যেও। আমি সেটাই করি। রেওয়াজ করে যাই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE