নিকিতা গাঁধী।
চেন্নাইয়ের ডেন্টাল কলেজে পড়াশোনার ফাঁকে এ আর রহমানের সংগীত স্কুলে ক্লাসও চলত। সকালে কলেজ আর বিকেলে গান চালাতে অসুবিধে হয়নি কলকাতার মেয়ে নিকিতা গাঁধীর। ‘রাবতা’, ‘জগ্গা জাসুস’-এর পর নিকিতা এখন জনপ্রিয়। যদিও বলিউডে গাইবার আগে তিনি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির অনেকগুলো হিট ছবিতে গান করেছেন। শঙ্করের ‘আই’ এবং ‘ওকে জানু’র দক্ষিণী ভার্সান মণি রত্নমের ‘ও কাদাল কানমানি’তে গেয়েছিলেন নিকিতা।
ডেনটিস্ট আর গায়িকার কম্বিনেশনটা তো বেশ অদ্ভুত! নিকিতাকে কথাটা বলতেই একচোট হেসে নিলেন! মা বাঙালি আর বাবা পঞ্জাবি। ‘‘প্রত্যেক বাঙালি ঘরে যে রকম হয়, আমাদের বাড়িতেও সে রকম ছোট থেকেই গান শেখানো হয়েছিল। হিন্দুস্থানি ক্লাসিকাল সংগীতের পর নজরুলগীতিও শিখি,’’ বললেন নিকিতা। তাঁর বাবা সংগীতপ্রেমী। সেই সুবাদেই নিকিতার গানে আগ্রহ। অবশ্য ওড়িসি নাচও শিখেছিলেন। চেন্নাইয়ে ডেন্টাল কলেজে পড়তে গিয়েও গান ছাড়েননি। আর সেটাই নিকিতাকে এখন সুবিধে করে দিয়েছে। খোদ এ আর রহমানই তাঁকে দিয়ে প্রথম প্লেব্যাক করান। ‘‘সিদ্ধান্তটা একেবারেই রহমান স্যার নিয়েছিলেন। আমি তো সকালে কলেজ আর বিকেলে গান নিয়ে দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছিলাম। রহমান স্যার ইন্দো-জার্মান এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের জন্য ফ্রেশ গলা খুঁজছিলেন। আমার অডিশনের ভিডিয়ো ওঁর পছন্দ হয়। এর পর ওঁর সঙ্গে ছোট ছোট রেকর্ডিংয়ের সুযোগ পেতাম। স্ক্র্যাচ গাইতাম,’’ বলছিলেন কলকাতার লা মার্টিনিয়ার গার্লস স্কুলের এই প্রাক্তন ছাত্রী। রহমানের মতো সংগীত পরিচালকের সঙ্গ পাওয়াটা কম নয়। সুতরাং নিকিতা যতটা পেরেছেন, শিখেছেন তাঁর থেকে।
আরও পড়ুন: আমার দার্জিলিং
টিনএজ বয়স থেকেই ওয়েস্টার্ন মিউজিক শুনেছেন। কিশোরকুমার থেকে কৈলাশ খের কিংবা রেখা ভরদ্বাজের গান কিছুই বাদ পড়েনি তাঁর তালিকায়।
স্টেজ শো না প্লেব্যাক, কোনটা তাঁর কমর্ফট জোন? বললেন, ‘‘স্টুডিয়োতে গানের সময় অনেক বেশি সজাগ থাকতে হয়। স্টেজে কোথাও একটু কমবেশি হলেও সমস্যা হবে না।’’
কলকাতার মেয়ে অথচ বাংলা ছবিতে গান গাইবেন না, তা তো হয় না। সম্প্রতি অনীক দত্তর ‘মেঘনাদবধ রহস্য’ ছবিতে গান গেয়েছেন নিকিতা। তারই মিউজিক লঞ্চে কলকাতায় এসেছিলেন। এই ছবিতে তাঁর গান গাইবার পিছনের গল্পটা বললেন অনীক দত্ত। তাঁর মেয়ে নিকিতার স্কুলের জুনিয়র। সে-ই সাজেস্ট করে নিকিতাকে দিয়ে গান গাওয়ানোর। তাতে সায় দেন দেবজ্যোতি মিশ্রও। নিকিতা তখন নিজের কিছু গানের অডিয়ো পাঠান। এর পর আর দু’বার ভাবেননি অনীক।
মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে ভয়ানক প্রতিযোগিতা। একজন শিল্পী কিছু দিন চললেন। তার পর আবার অন্য একজনকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হল। তিন-চারটে হিট গান দিয়েই অনেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় একজন শিল্পীর কেরিয়ার কত দিনের? ‘‘চ্যালেঞ্জ তো সব জায়গাতেই। সিঙ্গার না হয়ে যদি ডেন্টিস্ট হতাম, তা হলে সেখানেও প্রতিযোগিতা থাকত,’’ আত্মবিশ্বাসী গলায় জবাব দিলেন নিকিতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy