Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Entertainment News

বিয়ে কবে? ঐন্দ্রিলা বললেন...

‘মহুল’। অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনের এখন এটাই পরিচয়। সৌজন্যে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ফাগুন বউ’। তার সাফল্য নিয়েই আড্ডা জমল শুটিং শেষের মেকআপ রুমে। তবে ছুঁয়ে থাকল অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার সম্পর্কের সাতকাহন।

ঐন্দ্রিলা সেন।

ঐন্দ্রিলা সেন।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:১১
Share: Save:

‘মহুল’। অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনের এখন এটাই পরিচয়। সৌজন্যে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ফাগুন বউ’। তার সাফল্য নিয়েই আড্ডা জমল শুটিং শেষের মেকআপ রুমে। তবে ছুঁয়ে থাকল অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার সম্পর্কের সাতকাহন।

৭ সেপ্টেম্বর। আনন্দবাজারের সাক্ষাত্কারে অঙ্কুশ বলেছেন, ‘এক বছরের মধ্যে বিয়ে করব’। আপনাদের বিয়ের ডেট তা হলে ফাইনাল তো?
(মুচকি হাসি) আমাকে সবাই এই প্রশ্নটা করছে। ও নিজে থেকে কেন বলেছে জানি না। ওর বয়েসটা বেড়ে গিয়েছে বলে ও হয়তো ফিল করেছে বিয়ে করতে হবে। আসল কারণটা যদিও আলাদা (হাসি)।

সেটা কী?
ওর এক্স গার্লফ্রেন্ডদের পর পর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাদের বাচ্চারা অঙ্কুশ আঙ্কেল বলে ফোন করে এখন। সেটা থেকেই হয়তো ওর মনে হয়েছে এ বার বিয়ে করা উচিত। বা কোনও মহিলা হয়তো ওর লাইফে আছে যার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এ বার বিয়ে করবে ভেবেছে (অট্টহাসি)। তবে সত্যিই এখনও বিয়ের কোনও প্ল্যান হয়নি। হলে ডেফিনেটলি জানাব। কারণ আমাদের লুকোনের কিছু নেই।

কত বছরের সম্পর্ক আপনাদের?
সাত বছর। আসলে অঙ্কুশ আমাকেও বলছিল, সেটল করা কি উচিত? আমি বললাম মায়ের সঙ্গে কথা বলে দেখ। আমাকে বলে কোনও লাভ হবে না। মাকে বলতে হবে। তার পর কোনও ডিসিশন হলে দেখা যাবে।

আরও পড়ুন, আমার কাছে প্রচুর সিনেমার অফার নেই, বলছেন ইশা

অনেকদিন পর ‘ফাগুন বউ’-এ কাজ করছেন। খুবই জনপ্রিয় হয়েছে এই ধারাবাহিক। কামব্যাকে এই জনপ্রিয়তার রহস্য কী?
দেখুন, ‘সাত পাকে বাঁধা’র পর নিজের জন্য দু’বছরের একটা গ্যাপ চেয়েছিলাম। ওই সিরিয়ালটাও খুব পপুলার ছিল। রাস্তায় তখন কেউ ঐন্দ্রিলা বলে ডাকত না। এখনও ‘ফাগুন বউ’য়ের সেটেও লোকে ‘সাত পাকে বাঁধা’র চরিত্র ‘দুষ্টু’ বলে ডাকে। সেই ইমেজটা মুছতে চেয়েছিলাম পরের কাজটা করার জন্য। তা ছাড়া পর পর কাজ করতেও পারি না আমি। বরং একটা শেষ করে একটু রিল্যাক্স করতে চাই। নিজেকে গ্রুম করতে চাই। আর চার বছর গ্যাপের পর এই প্রজেক্টটা যে করলাম সেটা যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না, সেটার প্রমাণ এর জনপ্রিয়তা। তবে চার বছর গ্যাপ নিতে চাইনি। বাবার হঠাত্ মৃত্যু, আর তার পর আরও দু’বছর কেটে গিয়েছিল চোখের নিমেষে…। ফলে রহস্য কী জানি না, দর্শক ভালবাসছেন, ভাল লাগছে।


‘ফাগুন বউ’-এর শুটিংয়ে বিক্রমের সঙ্গে ঐন্দ্রিলা।

আপনি আর অঙ্কুশ তো মুম্বই গিয়েছিলেন, গ্রুমড হতে?
ইয়েস। মুম্বইতে যাওয়ার আগে এই হাউজ থেকেই অফার ছিল, করিনি। লীনা (গঙ্গোপাধ্যায়) আন্টিকে বলেছিলাম, টেলিভিশন করলে আমি তোমার সঙ্গেই করব। তখন বলেছিলাম, যে প্রজেক্টটার জন্য ডাকছ, আমার মনে হয় আমি পারব না। তোমার নেক্সট প্রজেক্টের আগে তো কিছুটা সময় আছে। আমি একটু গ্রুম করি নিজেকে। কলকাতা থেকে ডিটাচ হতে চেয়েছিলাম। কারণ এখানে থাকলেই নানা রকম কাজের অফার আসে। তাতে মাথাটা ঘুরে যায়। পাঁচ মাসের ভাল প্রসিডিওর ছিল আমাদের।

আপনার প্রথম হিট তো ‘সাত পাকে বাঁধা’?
দেখুন, ১৫ বছের হল ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রথম অভিনয় ‘বন্ধন’ সিনেমা বা ‘স্রোত’ নামের একটা ধারাবাহিক। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। যা যা কাজ করেছি ছোট থেকে সবাই দেখেছে কিন্তু। ‘রানি কাহিনি’, ‘খেলা’, ‘তিথির অতিথি’…। তবে অ্যাজ আ হিরোইন ‘সাত পাকে বাঁধা’ প্রথম হিট।

আরও পড়ুন, ‘মান্টো’ একটা আইডিয়া, আমি সেটাই দেখাতে চেয়েছি, বললেন নন্দিতা

এই যে আপনি আর অঙ্কুশ একই প্রফেশনে আছেন, কোনও সিদ্ধান্ত নিতে অঙ্কুশ কতটা সাহায্য করেন?
আমার কোনও ডিসিশনের ওপর ও কিছু চাপিয়ে দেয় না। আমার কিছু কনফিউশন হলে আমি ওকে ফোন করি। এটা করা উচিত নাকি উচিত নয়, জানতে চাই। মাও বলে অঙ্কুশের সঙ্গে কথা বল না…। ও আমার থেকে ছ’বছরের বড়। ম্যাচিওরিটি আলাদা। গাইড করে দেয়। ওর কথা হল, এই কাজটা করলে এগুলো নেগেটিভ, এগুলো পজিটিভ। এ বার তুমি দেখে নাও। আমাকে অনেকে বলেছে, তোকে অঙ্কুশ কাজ করতে দেয় না, না? আমি বলি, এ সব কোথা থেকে জানলে? ওর মেন্টালিটি হচ্ছে, তুমি কাজ কর, নাম কর। তোমার জায়গাটা সব সময় থাকুক।

এ তো পজিটিভ দিক, আর এক পেশায় দু’জনে থাকার নেগেটিভ দিক কী কী?
নেগেটিভ কিছু নেই। ডে ওয়ান থেকে আমরা খুব ওপেন। নেগেটিভ তাদেরই আসে যারা লোক দেখানো বন্ধু বলে একে অপরকে। হয়তো রিং সেরিমনি হয়ে যায়। তার পর বলবে, বয়ফ্রেন্ড আছে বলে কোনও প্রোডিউসার নিচ্ছে না, আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। এগুলো বুল শিট আমার কাছে। পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ আলাদা। ভাল কাজ করলে ডাক আসবেই। কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। তা হলে রিলেশনশিপটা কেন নেগেটিভ হবে? ঘুরছ, মজা করছ, অথচ কাউকে জানাবে না, এটা আমার খুব চিপ লাগে। যাদের ভেতরটা ফাঁকা তারাই হয়তো ভাবে, আমার বয়ফ্রেন্ড আছে জানলে প্রোডিউসার নেবে না।


অঙ্কুশের সঙ্গে একান্তে...।

ফিল্মি দুনিয়ায় কাস্টিং কাউচের কথা খুব শোনা যায়। আপনি ফেস করেছেন?
না। কোনওদিন কাস্টিং কাউচ ফেস করিনি। তবে এটা হয় না তা নয়, ডেফিনেটলি হয়। এখন যদি কেউ ভাবে, যা অফার আসবে করে নেব তা হলে মুশকিল। জানেন, আমার মায়ের কাছে কত ফোন এসেছে…।

মানে?
আমার মায়ের তো বয়স বেশি না। এখন একটু মোটা হয়েছে। আগে আরও স্লিম ছিল। ধরুন, কোনও খারাপ জায়গায় চলে গিয়েছি, জানতাম না। মা তো সব জায়গায় আমাকে নিয়ে যায়...। এ বার সেখান থেকে মায়ের কাছে ফোন এসেছে। আপনি একটু চলে আসুন…। আপনার সঙ্গে কথা আছে। একটা কথা কী জানেন, কোনও ভাল হাউজ, বড় হাউজ সিরিয়াল হোক বা ফিল্ম, কেউ কাস্টিং কাউচ করে না। আমি বড় হাউজের প্রায় সকলকেই চিনি। কেউ এমন নয়।

আরও পড়ুন, ‘অন্য হিরোরাও তো প্রোডিউসার হয়েছেন, ডিফারেন্স দেখতে পাচ্ছেন?’ বলছেন দেব

আচ্ছা, অঙ্কুশ আপনার বয়ফ্রেন্ড, এটা জানার পর এ ধরনের সমস্যায় আপনি পড়বেন না, এটাই তো স্বাভাবিক।
(কনফিডেন্টলি) না না, ওরকম হয় না। সাত বছর আগে তো কেউ জানত না অঙ্কুশ আমার বয়ফ্রেন্ড। তখন তো অনেকে বলতে পারত। আর আমার রগচটা বলে বদনাম আছে। লোকে বলে, আমি নিজের মেজাজেই চলি। ঠিকই, আমি নিজের মেজাজেই চলি। আর আমার মধ্যে ওই ইনসিকিয়োরিটিটা একদম নেই। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি, একটা মানুষও খারাপ নয়।

বদনামের কথা বললেন। নিজের সম্পর্কে আর কী কী বদনাম শুনেছেন?
রিসেন্টলি একটা আর্টিকেল দেখলাম। যাদের আর্টিকেল তারাই ফোন করে বলছে, তুই কিছু বল। তার পর ওরাই আমাকে লিঙ্ক পাঠাল। দেখলাম, সেখানে লেখা হয়েছে আমি নাকি ট্যানট্রাম কুইন (হাসি)। আমি আর মধুমিতা। মধুমিতার কথা আমি জানি না। আমারটা বলছি। আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন আমি কতটা পার্টিকুলার। আমি তখন যারা ফোন করেছিলাম তাদের বললাম, কোনও গসিপই তো বেরয় না। একটু যদি বদনামও না বেরোয়, তা হলে তো… (হাসি)।


এখনও পর্যন্ত মা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সব জায়গায় যান বলে জানালেন অভিনেত্রী

তা হলে আপনার দাবি, নায়িকা সুলভ ট্যানট্রাম আপনার নেই, তাই তো?
দেখুন, কোনও অ্যাডভানটেজ নিই না আমি। যেটা প্রয়োজন সেটা স্পষ্ট ভাবে বলি। হয়তো বললাম, জিম করে শুটে আসব। দেখো না কলটাইমটা যদি একটু ঠিক করা যায়। লীনা আন্টিকে তো প্রোডিউসার হিসেবে দেখিই না। উনি মায়ের মতো। আবদার করি আমি। তার মানে এটা নয়, আমার সাধারণ চেয়ারে হবে না, গদির চেয়ার দিতে হবে। আর আজ অবধি কখনও লীনা আন্টি আমাকে ফেরায়নি।

আপনার আর অঙ্কুশের একসঙ্গে কাজের অফার এসেছে কখনও?
হ্যাঁ। বাংলাদেশে কাজের অফার ছিল। তখন পুরো দায়িত্ব ওকে দিয়েছিলাম। কিছু ভাল ছিল। কিন্তু ও তখন ফিল্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ফলে ওয়ার্কআউট করেনি। এখানেও অনেক বার কথা হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ভাগ্যে না থাকলে হয় না।

এখানে ফিল্মের অফার ছিল?
হ্যাঁ। ভাল হাউজ থেকে অফার এসেছিল। আনফরচুনেটলি পরে সেই প্রজেক্টে এক বাংলাদেশি অভিনেত্রী ঢুকে পড়েন। লাইফে প্রথমবার সে সময় ইনসিকিওয়র্ড হয়েছিলাম।

আরও পড়ুন, শ্রীলেখা-সিধুর ‘দাম্পত‍্য’... দার্জিলিঙে?

কেন?
আমি ভেবেছিলাম, আমাকে কি ওঁর থেকেও খারাপ দেখতে?... (হাসি) আমার ভিসাও এসে গিয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম, প্রযোজককে বাংলাদেশি নায়িকা নিতেই হবে। বাংলাদেশি বলে উনি ভিসা পাচ্ছিলেন না। কিন্তু ওঁর জন্য আমি বাদ পড়েছিলাম।

ওয়েব এখন খুব ইন থিঙ্গ। সেখানে অফার নেই?
দেখুন, ওয়েবের অফার ছিল। তখন আমি মুম্বইতে ছিলাম। তবে ওয়েবের একটু ভাল কনটেন্ট পেতে হবে। ওই সেক্স বা ভায়োলেন্স শুধু থাকলে আমি করব না।

আপনাদের রিলেশন নিয়ে কোনও গসিপ শুনেছেন কখনও?
বহুবার। রিসেন্টলি শুনলাম আমার আর অঙ্কুশের ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছে। অঙ্কুশই লিঙ্ক পাঠিয়েছিল আমাকে। ‘ফিদা’র শুটে নাকি অঙ্কুশ-সঞ্জনার প্রেম। আমাদের সে কারণে নাকি ব্রেকআপ। আমরা নাকি রাস্তায় ঝগড়া করেছি। আমি ভাবলাম, বেসিক্যালি যাদের নিয়ে ঝামেলা হয় তাদের কথা তো কেউ বলে না… (হাসি)।


ঐন্দ্রিলা নাকি অঙ্কুশের ২২-২৩ নম্বর গার্লফ্রেন্ড!

সত্যিই যাদের নিয়ে ঝামেলা হয়, তারা কারা?
এই রে…। (সামান্য পজ) না, তেমন ঝামেলা নয়। ধরুন, কোনও নায়িকার সঙ্গে অঙ্কুশের মাখো মাখো নিউজ হল। তখন আমি বললাম, বাবা! একটু বেশিই মনে হচ্ছে… (ভুরু নাচিয়ে)। আর ও বলে, আমার হিরোইন, এটুকু তো হবেই।

আপনি কি ডমিনেট করেন অঙ্কুশকে?
না। ডমিনেট কেউ কাউকে করে না। আমার অ্যাটিটিউডের জন্য ও আমাকে ভয় পায়…।

কোনও স্পেশ্যাল নামে ডাকেন একে অপরকে?
না! ও একটা নাম দিয়েছিল আমার, হাম্পি। ভালবেসে দেওয়া নাম। প্রথম প্রথম আমিও খুব গদগদ ছিলাম। এখন দু’জনেই হাসি। এমনও হয়েছে শপিং মলে ও আমাকে ডাকছে, এই কালো জামা, কালো জামা… (হাসি)।

আরও পড়ুন, জন্মাষ্টমীতে নতুন খবর দিলেন অদিতি

অঙ্কুশই আপনার প্রথম বয়ফ্রেন্ড?
হুম। তবে ওর হিসেবটা একদম আলাদা।

সেটা কেমন?
কাকিমা মানে অঙ্কুশের মায়ের থেকে আমি যা জেনেছি আমি ওর ২২-২৩ নম্বর গার্লফ্রেন্ড হব হয়তো।

তাতে আপনার কোনও সমস্যা নেই?
না না। ওর এক্স গার্লফ্রেন্ডরা ওকে এখন ছেলের মতো ট্রিট করে। ও হয়তো ভাবে যে, আমাকে কাকু বলে ডাকছে যারা, তাদের হয়তো বাবা বলে ডাকার কথা ছিল… (অট্টহাসি)।

ছবি: ঐন্দ্রিলার ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE