Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গান, নাটক, আড্ডায় বর্ষবরণে বহরমপুর

বছরকে স্বাগত জানাতে মেতে উঠল জেলা সদর বহরমপুর। এলাকার নানা স্বেচ্ছাসেবী, নাট্য বা সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন ধরে শহরের নানা প্রান্তে অনুষ্ঠিত হল হরেক অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার চৈত্রের শেষ সন্ধ্যায় ‘সৃষ্টি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বহরমপুরের গোরাবাজ এলাকায় উকিলপাড়া দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে নাচ, গান ও আবৃত্তি-সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ দিনই বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে বহরমপুরের নাট্যদল ‘ঋত্বিক’-এর উদ্যোগে সারারাত ধরে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় অনুষ্ঠান।

বহরমপুর রবীন্দ্রভবনে ঋত্বিকের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

বহরমপুর রবীন্দ্রভবনে ঋত্বিকের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৭
Share: Save:

বছরকে স্বাগত জানাতে মেতে উঠল জেলা সদর বহরমপুর। এলাকার নানা স্বেচ্ছাসেবী, নাট্য বা সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন ধরে শহরের নানা প্রান্তে অনুষ্ঠিত হল হরেক অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার চৈত্রের শেষ সন্ধ্যায় ‘সৃষ্টি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বহরমপুরের গোরাবাজ এলাকায় উকিলপাড়া দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে নাচ, গান ও আবৃত্তি-সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ দিনই বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে বহরমপুরের নাট্যদল ‘ঋত্বিক’-এর উদ্যোগে সারারাত ধরে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় অনুষ্ঠান। তাদের ওই অনুষ্ঠান সাত বছরে পড়ল। এ বার মঞ্চস্থ হয় দুই বাংলার মোট চারটি নাটক। নাটকের মধ্যবর্তী সময়ে ছিল গান, আবৃত্তি ও কৌতুক।

ঋত্বিকের সম্পাদক মোহিতবন্ধু অধিকারী জানান, সদ্য শহিদ বাংলাদেশের দুই ব্লগার অভিজিত্‌ রায় ও ওয়াশিকুর রহমান বাবুর নামে ওই অনুষ্ঠান উত্‌সর্গ করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের নাট্যজগতের আলোক শিল্পী রায়হান আবেদিন। এ দিনের মঞ্চস্থ হওয়া নাটকগুলি হল বিভাস চক্রবর্তীর ‘অন্য থিয়েটার’-এর ‘৩১ ডিসেম্বর’, বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের নাট্যসংস্থা ‘নাট্যলোক’-এর প্রযোজনায় ‘নারী নশিমন’, কলকাতার নাট্যদল ‘অলটারনেটিভ লিডিং থিয়েটার’- এর ‘ঘরে ফেরার গান’, নদিয়ার নাট্যগোষ্ঠী ‘শান্তিপুর সংস্কৃতি’র নাটক ‘গন্ধ জালে’ ও বর্ধমানের ‘স্বপ্নাঙ্গন’ নাট্যসংস্থার ‘যশোদা মা’।

নাটক ছাড়াও বাউল, নানা ধরনের গান ও আবৃত্তি পাঠ করেন শিল্পীরা। মিরাক্কেল খ্যাত অতনু বর্মনের হাস্যকৌতুকে হল জুড়ে হাসির রোল ওঠে। সারারাত ধরে ওই ভাবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান রাজ্যে একমাত্র তারাই করে বলে ঋত্বিকের দাবি।

এ দিকে, ভাষা শহিদ দিবস ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করতে শহরের ২৪টি সাংস্কৃতিক সংস্থা মিলিত ভাবে গড়ে তুলেছে ‘কৃষ্টিপথ’ নামের একটি সংস্থা। ‘কৃষ্টিপথ’-এর উদ্যোগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্রসদনের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তার পর পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় তাদের উদ্যোগে রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। কৃষ্টিপথের অন্যতম আহ্বায়ক মলয় গুপ্ত বলেন, “২৪টি সাংস্কৃতিক সংস্থাই এ দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠিত হয় সমবেত নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, নাটকের গান। কবিরা স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।’’ কৃষ্টিপথ-এর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের নাট্যসংস্থা ‘নাট্যলোক’। এ ছাড়াও ছিল আধঘণ্টার বৈঠকি আসর। আসরে যোগ দেন নাট্য পরিচালক শক্তিনাথ ভট্টাচার্য, বাচিক শিল্পী মৃণাল রায় ও অভিজিত্‌ সরকার। আড্ডার ফাঁকে পুরাতনী ও সমকালীন সঙ্গীত পরিবেশন করেন অনিরুদ্ধ সিংহ, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও নমিতা হালদার।

বহরমপুরের রবীন্দ্রনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার দুপুর ৩টে থেকে নববর্ষ উদযাপন করে ‘মুর্শিদাবাদ জেলা কবিতা অ্যাকাডেমি’। প্রতি বছরের মতো এ বারও গল্প, কবিতা, গান, আলোচনা ও আড্ডায় নতুন বছরকে বরণ করা হয়। সংস্থার সম্পাদক কুশলকুমার বাগচী জানান, এ দিনের ওই আলোচনায় লোকসংস্কৃতি গবেষক পুলকেন্দু সিংহ এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হাসনাত, স্থানীয় সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক নারায়ণ সরকার ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক আকমল হোসেন যোগ দেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE