শুভেচ্ছা: বাবার জন্মদিনে ইনস্টাগ্রামে মলদ্বীপ থেকে এই ছবি পোস্ট করেন অভিষেক।
সোশ্যাল মিডিয়া উপচে পড়ছে। বলিউডের সহকর্মীরা সকলে আপ্লুত অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত। চ্যানেলে চ্যানেলে তাঁর ছবি। কিন্তু ডন কো পকড়না মুশকিল হী নহী, নামুমকিন হ্যায়!
৭৫ বছরের জন্মদিনে অমিতাভ বচ্চন সপরিবার চলে গিয়েছেন মলদ্বীপে ছুটি কাটাতে। জন্মদিনের পার্টি তো নয়ই, এ বার দেওয়ালির উৎসবও হবে না জুহুর ‘জলসা’য়।
৭০ বছরের জন্মদিনে ধুমধাম হয়েছিল। ৭৫ বছরের বিশেষ দিনটা এত নিভৃতে কেন? ক’দিন আগে ব্লগে বলেই দিয়েছিলেন, জন্মদিন বা দেওয়ালি পালন করবেন না এ বার। মিডিয়াকে দেবেন না কোনও ‘খাদ্য’। বরং অমিতাভকে কথা বলছিলেন মৃত্যু নিয়ে। লিখেছিলেন, ভবিষ্যত আগেভাগে জানতে চান না তিনি। মৃত্যুর দিনক্ষণও না। জ্যোতিষশাস্ত্র যে ক্রমাগত জানাতে চায় এর পর কী, সেই ব্যাপারটাই ভাল লাগে না তাঁর।
অথচ এই অমিতাভই কিন্তু জ্যোতিষীদের কাছে এক বিরল নজির! তাবড় জ্যোতির্বিদরা বারবার বচ্চনের গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান নিয়ে কাটাছেঁড়া করে থাকেন। তাঁদের দোষও দেওয়া যায় না। ৭৫ বছরেও জনপ্রিয়তা আর প্রাসঙ্গিকতার শীর্ষাসনটি এ ভাবে ধরে রাখতে আর কে পেরেছেন! ফোর্বস-এর তালিকায় ধনী তারকাদের মধ্যে অমিতাভই একমাত্র ষাটোর্ধ্ব। দশটি পণ্যের এনডোর্সমেন্ট তাঁর ঝুলিতে। এখনও প্রতি ফিল্মে পারিশ্রমিক ১০ কোটির কাছাকাছি। বহুজাতিক সংস্থাগুলি দিনে ২ কোটি দিতে প্রস্তুত। রণবীর-আলিয়ারা দমছুট হয়ে যান অমিতাভর সঙ্গে পাল্লা দিতে! অমিতাভর ঠিকুজি- কুষ্ঠি নিয়ে চুলচেরা বিচার তো হবেই!
ম্যাজিকটা ঠিক কোথায়? বচ্চনকে নিয়ে একাধিক কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে স্যাম বালসারা-র। বিজ্ঞাপন সংস্থা ম্যাডিসন ওয়র্ল্ড-এর চেয়ারম্যান। তিনি বলছেন, ‘‘একই সঙ্গে দু’টি বিষয়কে অমিতাভ পণ্যের ভাবমূর্তির সঙ্গে জুড়তে পারেন। সর্বভারতীয়ত্ব এবং পরিণত বোধ। এইখানে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী।’’ কল্যান জুয়েলার্স-এর কর্তা রমেশ কল্যাণরামন বলছেন, ‘‘ব্র্যান্ড বচ্চন মানেই অচলা বিশ্বাস আর আস্থা।’’ সেখানে অমিতাভ একাই অমর, আকবর এবং অ্যান্টনি।
আস্থার এই দীর্ঘমেয়াদি প্রতীক একদিনে তৈরি হয়নি ঠিকই। কিন্তু শুধু তো তৈরি করা নয়, সেটা ধরে রাখার দুঃসাধ্যসাধনটা অমিতাভ করতে পেরেছেন। জ্যোতিষীরা মনে করান, অমিতাভ খাদের ধার থেকে ফিরে আসতে জানেন! এখানেই তিনি সবার চেয়ে আলাদা। রাজনীতিতে এসে বফর্স-এর কালি লেগেছিল তাঁর শ্বেতশুভ্র কুর্তায়। সেই কালি ঝেড়ে ফেলেছেন। রেখার সঙ্গে প্রণয় সামলেছেন নিপুণ ভাবে। কপর্দকশূন্য হয়েছেন এবিসিএল খুলে। সব ধার শোধ করেছেন। একদা-বন্ধু অমর সিংহ ‘বেইমান’ বলে গাল পেড়েছেন! কিন্তু বচ্চনের জনপ্রিয়তায় এতটুকু টাল খাওয়াতে পারেননি। অমিতাভ এমনই এক ব্যক্তিত্ব যিনি আজ নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— উভয়ের কাছেই সমান গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসভাজন।
৪২ বচ্ছর আগে বলেছিলেন, যেখানে তিনি দাঁড়ান, সেখান থেকেই লাইন শুরু হয়! পিছনের লাইন লম্বা হয়েছে। অমিতাভ আজও সবার আগে। জয়া বচ্চন শুধু সংসদ চত্বরে একবার সহাস্যে বলেছিলেন, ‘‘পয়মন্ত বাঙালি বৌ পেয়েছে তো অমিত! তাই সব বিপদ কাটিয়ে ও আজও উজ্জ্বল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy