মৌসম বেনজির নুর, তৃণমূল সাংসদ, রাজ্যসভা। — ফাইল চিত্র।
এ বার অভিমানী মৌসম বেনজ়ির নুর। উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে প্রত্যাশা ছিল তাঁর। কিন্তু দল ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসমের দাবি, টিকিট পেলে ওই কেন্দ্রে তিনিই জিততেন। যদিও দিনের শেষে নিজেকে দলের ‘অনুগত সৈনিক’ হিসাবে দাবি করে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। মৌসম বলেছেন, ‘‘নিজের প্রত্যাশা থাকলেও দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা মেনেছি এবং সেটা মেনেই চলব।’’ দলবদলের সম্ভাবনাকেও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মৌসমকে মালদহ উত্তর এবং দক্ষিণের জন্য তৈরি জেলা নির্বাচনী কমিটিতে রাখা হয়েছে।
গত ১০ মার্চ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’র র্যাম্প থেকে রাজ্যের ৪২ আসনের প্রার্থিতালিকা ঘোষিত হয়েছিল। উত্তর মালদহে তৃণমূল প্রার্থী করেছে প্রসূনকে। তার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না মালদহের গনি খান পরিবারের সদস্য তথা তৃণমূল সাংসদ মৌসমের। ইদানীং তৃণমূলের প্রচারেও মৌসমকে সে ভাবে দেখা যায়নি। গুঞ্জন দানা বাঁধছিল, মৌসম দলবদল করে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। ‘আত্মগোপন’ থেকে ফিরে মৌসম সাফ জানিয়ে দিলেন, দলবদলের জল্পনা ‘ভিত্তিহীন’। নিজের ব্যক্তিগত কাজে দু’দিনের জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন। তার পর অসুস্থতার কারণে কলকাতার বাড়িতে বিশ্রামে ছিলেন। যদিও টিকিট না পেয়ে তাঁর যে অভিমান হয়েছিল, তা গোপন করেননি রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘আমি উত্তর মালদহের দু’বারের সাংসদ ছিলাম, জেলা সভানেত্রীও ছিলাম। অবশ্যই আমার প্রত্যাশা ছিল। এর কারণ হল, গত বার আমি বিজেপির কাছে হেরে গিয়েছিলাম। একই পরিবার থেকে আমরা দু’জনে দাঁড়িয়েছিলাম, তাই ভোটটা ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছিল। এ বার টিকিট পেলে জিতব বলে আমার ধারণা ছিল। একটা প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছিল বিজেপিকে হারানোর জন্য। যাই হোক, আমাদের নেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে প্রার্থী হবেন। সেই সিদ্ধান্তকে দলের একজন সৈনিক হিসাবে আমি স্বাগত জানাই।’’ এর পরেই মৌসম আবার বলেন, ‘‘নিজের প্রত্যাশা থাকলেও দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাকে মেনেছি। সেটা মেনেই চলব। আমি অসুস্থ ছিলাম। ভাইরাল ফিভার হয়েছিল। খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম। তাই কলকাতায় ছিলাম। একটা কাজে দিল্লিতেও যেতে হয়েছিল। এখন মালদহে ফিরে এসেছি। আমাদের প্রার্থীর জন্য, দলের জন্য অবশ্যই আমি নামব। আমি আশা করি, এ বার দুটো আসনই তৃণমূল পাবে।’’
প্রসঙ্গত, দক্ষিণপন্থী দলে ভোটের আগে টিকিটপ্রত্যাশী অনেকেই থাকেন। তাদের কেউ টিকিট পান, আবার অনেকেই পান না। ঠিক যেমন, তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর টিকিট না পেয়ে অভিমান হয়েছিল অর্জুন সিংহ, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়দের। বিজেপি সাংসদ অর্জুন বিজেপিতে ফিরে গেলেও সায়ন্তিকার মানভঞ্জন হয়েছিল। তিনি দলের হয়ে আগের মতোই কাজ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন। ঠিক যেমন হল, মৌসমের ক্ষেত্রেও।
মৌসমকে গত লোকসভায় মালদহ উত্তরে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু সেখানে হেরে যান তিনি। তার পর মৌসমকে রাজ্যসভায় পাঠায় তৃণমূল। ২০২৬ সাল পর্যন্ত তাঁর সাংসদ পদে থাকার কথা। এর মধ্যেই লোকসভার টিকিট না পেয়ে মৌসমের দলবদল ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়। যদিও নিজে তাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিলেও উত্তর মালদহে প্রার্থী হতে না পেরে যে তাঁর অভিমান হয়েছিল, নিজের কথার মধ্যে দিয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মৌসম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy