আর মাত্র কিছু ক্ষণের অপেক্ষা। তার পরেই বহরমপুরে প্রথম বার পা রাখবেন সেই কেন্দ্রের তারকা তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। দু’বার বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ইউসুফ ক্রিকেট জীবনে মারকুটে ব্যাটার হিসাবে পরিচিত ছিলেন। রাজনীতির ইনিংসের শুরুও কি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই করতে চান? উত্তর দেওয়ার আগে বহরমপুরের ‘পিচ’ দেখতে চান ইউসুফ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় সব অপেক্ষা শেষ করে বহরমপুরে নেমে পড়ছেন ইরফান পাঠানের দাদা ইউসুফ।
বুধবার রাতে কলকাতার মাটিতে পা রেখেছেন। বৃহস্পতিবার দিনের বেলা কলকাতা থেকে বহরমপুরে পৌঁছনোর কথা। ইউসুফকে দেখতে সকাল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছে বহরমপুরের তৃণমূলের পার্টি অফিসে। মুর্শিদাবাদ পৌঁছনোর পর দিনভর ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে ইউসুফের। তৃণমূল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নির্বাচনী কার্যালয়ে পৌঁছবেন ইউসুফ। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য বড় জমায়েতের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখান থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে লোকসভা ভোটের প্রচারের সূচনা করবেন পাঠান। তার পর জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের কৌশল নিয়ে বৈঠক। দুপুর ৩টেয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি। এর পর বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দু’টি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের যোগদান কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন পাঠান। জোড়া বিশ্বকাপজয়ী তারকা ব্যাটার ইউসুফকে ঘিরে বহরমপুরবাসীর উন্মাদনা কেমন, তা মেপে নিতে চাইছে বিরোধীরাও।
আরও পড়ুন:
তবে বহরমপুরের ‘টার্নিং পিচে’ পাঠানের আসল লড়াই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা এখানকার টানা পাঁচ বারের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সেই লড়াই যে সহজ হবে না, রাজনীতিতে সদ্য অভিষেক হওয়া পাঠান খুব ভাল জানেন। তবে ইউসুফের ভরসা আছে দলের উপর। তাঁর বিশ্বাস, দলগত ভাবে ভাল খেলেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। কলকাতায় পৌঁছে সাংবাদিকদের ইউসুফ বলেন, ‘‘দলের নেতারা পরিকল্পনা করবেন। সেই অনুযায়ী প্রচার হবে। আমি তাঁদের নির্দেশ মতোই কাজ করব।’’ অধীর প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে তুলে ধরে ইউসুফ বলেন, ‘‘দাদা আগেই বলেছেন, অধীরের বিরুদ্ধে লড়া মানে ব্রেট লি’র বিরুদ্ধে ব্যাট করা। কিন্তু আমি প্রস্তুত আছি।’’
আরও পড়ুন:
বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক চরিত্র বদলেছে অনেকটাই। একুশের নির্বাচনে এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা আসন খালি হাতে ফিরিয়েছে কংগ্রেসকে। ৬টি আসন জিতেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং একটি আসন পায় বিজেপি। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, এই জেলায় ৬৬ শতাংশ নাগরিক মুসলিম। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এ বারের নির্বাচনে ভোটের মেরুকরণ হলে অধীরকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।
আরও পড়ুন:
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে অধীরকে বাঁচিয়েছিল কান্দি আর বহরমপুর বিধানসভা। বর্তমানে কংগ্রেসের এক জনও বিধায়ক নেই এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে। অন্য দিকে, বহরমপুর জিততে মরিয়া রাজ্যের শাসক তৃণমূলও। সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে গুজরাতের ইউসুফকে প্রার্থী করা হয়েছে। সব মিলিয়ে, সর্বশক্তি দিয়ে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। এই লড়াইয়ে মমতা, অভিষেকের ভরসা ‘হার্ড হিটার’ ইউসুফের উপরেই।