Advertisement
E-Paper

মন্ত্রী হবেন বলে অনেকেই নতুন জামাকাপড় কিনে ফেলেছিলেন! স্বপ্নভঙ্গের গল্প ফাঁস করলেন দিলীপ

গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার কথা ভাবলেও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বিজেপির। সেই সঙ্গে রাজ্যের অনেক পদ্মনেতার মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নও ভেঙে যায়। সেই সময়ের কাহিনি শোনালেন দিলীপ ঘোষ।

BJP leader Dilip Ghosh says how was the preparation of party leaders before result of assembly election 2021

দিলীপ ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ১৬:০০
Share
Save

গত বিধানসভা নির্বাচনে আশাভঙ্গ হয়েছিল বিজেপির। ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখলেও বিধায়কের সংখ্যা প্রয়োজনের থেকে অনেক দূরে থমকে গিয়েছিল। তবে শুধু দল হিসেবে বিজেপির নয়, দলের অনেক নেতারও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ২০২১ সালের ২ মে। তার আগে থেকেই বিজেপির অনেক নেতা-মন্ত্রী হবেন বলে নতুন জামাকাপড়ও কিনে ফেলেছিলেন! জয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার স্বপ্ন যাঁরা দেখেছিলেন, তাঁরাও হতাশ হয়েছিলেন। ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’ শোয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাঁস করলেন রাজ্য বিজেপির তৎকালীন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের স্বপ্ন তিনিও দেখেছিলেন বলে জানালেও দিলীপের দাবি, ক্ষমতায় বসার জন্য তিনি উদ্‌গ্রীব ছিলেন না। দলের সাফল্যের জন্যই ছিল তাঁর লড়াই। দিলীপ বলেন, ‘‘অনেকেই ভেবেছিল বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। প্রতিপক্ষও ভেবেছিল তারা হেরে যাচ্ছে। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক সেটা হল না।’’ একই সঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘বহু লোক মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য জামাকাপড় কিনে তৈরি ছিল।’’ সেই সময়ের কথা জানাতে গিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করত কে, কী মন্ত্রী হবে আপনি তার তালিকা বানিয়েছেন? আমি বলতাম, এটা আমার কাজ নয় দাদা। দলকে সরকারে আনা আমার দায়িত্ব। যদি হয়ে যায় ভাল। তালিকা বানানোর অন্য লোক রয়েছে।’’ তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও তাঁর কাছে আগাম তালিকা নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন দিলীপ।

কিন্তু এত প্রস্তুতি, কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্যোগ, তার পরেও কেন বাংলার ক্ষমতাদখলের কাছাকাছিও যেতে পারল না বিজেপি? প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ‘‘যদি হয়ে যেত, আমার ভাল লাগত। আমরা খেটেছিলাম অনেক। ভেবেছিলাম অন্তত একশোর বেশি আসন হয়ে যাবে।’’ হারের কারণ নিয়ে দলে ময়নাতদন্ত হয়েছে? দিলীপ বলেন, ‘‘নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তবে সবাই সব শুনতেও চায় না।’’ তিনি নিজে আত্মসমীক্ষা করেছিলেন? দিলীপ বলেন, ‘‘ফল তো আমার হাতে নেই! কাজ যা করার ছিল করে দিয়েছি। তার পরে সবাই আমায় দোষ দিয়েছে। অথচ আগে (হারার আগে) আমি খুব ভাল ছিলাম।’’ সেই সময়ে তাঁর উপরে সব দোষারোপ নিয়ে কথায় আক্ষেপের সুর থাকলেও দিলীপ জানান, তিনিও এতটা খারাপ ফলের আশা করেননি। তিনি বলেন, ‘‘এতটা খারাপ হবে ভাবিনি।’’

সোজাসুজি সমালোচনা না করলেও তাঁর আমলের মতো বিজেপি ‘এগোচ্ছে না’ বলেও মনে করেন দিলীপ। তাঁর আমলে কোনও ‘হ্যাচাপ্যাচা’ লোককে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখন যাঁরা সাংসদ, বিধায়ক হয়েছেন তাঁদের অনেককে তো আমি হাত ধরে নিয়ে এসেছি। টিকিট দিতে বলেছি দলকে। এখন যারা বিজেপির তাদের সবাই তো আমার সময়েই এসেছে। আমি খালি বলেছি লড়ো! আমি আছি।’’ এখন সেটা রাজ্য বিজেপিতে হয় কি? সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন দিলীপ। বলেছেন, ‘‘হচ্ছে হয়তো। আমি অন্যের কাজে নাক গলাই না। নিজের কাজ নিজে করি। কেউ পরামর্শ চাইলে দিই। নচেৎ নয়।’’ এখন আপনার পরামর্শ কেউ চাইছে না কেন? দিলীপ বলেন, ‘‘সেটা বলতে পারব না।’’

বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁর আমলেই বিজেপিতে আসেন। দিলীপের ‘পরামর্শেই’ তাঁকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেন। সে কথা উল্লেখ করে দিলীপ বলেন, তিনি নতুনদের সুযোগ করে দেওয়ার পক্ষে। তিনি বলেন, ‘‘সামনে কাউকে নিয়ে এলে তাঁকে জায়গা করে দিতে হয়। নতুন রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে আমি দিল্লির বাড়িতে আর সাংবাদিক বৈঠক করিনি। সুকান্ত দিল্লিতে না থাকলে হয়তো করেছি। তা ছাড়া নয়। আমি নেতা ছিলাম। কিন্তু এখন নই। এখন আমার কাজ নতুন নেতার সঙ্গে সহযোগিতা করা। সেটাই করি।’’

রাজ্য বিজেপিতে অনেকেই বলেন, দিলীপের প্রধান শত্রু তাঁর ‘ইগো’। কিন্তু স্বয়ং দিলীপ তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘ইগো তখনই হয়, যখন অন্যকে দেখে হিংসা হয়, জ্বলন হয়। কিন্তু লোকে তো আমাকে দেখেই জ্বলে! কারণ, আমি না চাইতেই অনেক পেয়েছি। ফলে আমার ইগো থাকার ব্যাপার নেই। আমার সমান তো কেউ হয়নি। তা হলে আর কাকে দেখে আমার ইগো হবে? তবে এটা সব সময় চাই, ভগবান যেন আমাকে রাজনীতির বোঝা না দেন।’’

দিলীপের নানা মন্তব্য নিয়ে নানা সময়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইদানীংকালেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এমন কিছু বলেছেন, যা শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্য নেতারা। তবে দিলীপের মাঝেমাঝে মনে হয়, ‘অপ্রিয়’ কথা না বলাই ভাল। আক্ষেপও হয়। সাক্ষাৎকারে দিলীপ বলেন, ‘‘অনেক সময়ে কিছু বলার পরে মনে হয়েছে সেটা না বললেই হয় তো ভাল হত। তা হলে আর বিতর্কটাই হত না!’’ তবে পাশাপাশিই নিজের কর্মপদ্ধতি নিয়ে গর্বিত দিলীপের দাবি, ‘‘আমি না ভেবে কোনও কথা বলি, সেটা কিন্তু নয়। আমি ভাবি, বলি এবং তার লাভ তুলি।’’ সাক্ষাৎকার শেষে এমনও বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময়ে বলবেন। ভেবেচিন্তেই বলবেন। লাভও তুলতে চাইবেন।

Politics Lok Sabha Election 2024 Dilip Ghosh BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।