আদর্শ আচরণবিধিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বিষয়ে ছাড় দেয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল ছবি।
নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তিনি আদর্শ আচরণ বিধি মানছেন না। প্রায়ই এমন দাবি করতে শোনা যায় বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের কাছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে পদক্ষেপের আর্জিও করেন তাঁরা। অনেক ক্ষেত্রে কমিশন নীরব থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থাও নেয় কমিশন। ফলে এই সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে কমিশনের যুক্তি, সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে আদর্শ আচরণবিধির নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেখানে কাউকে রেয়াত করা হয় না। তাদের মতে, আদর্শ আচরণবিধিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বিষয়ে ছাড় দেওয়া রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্র এবং রাজ্যের মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ওই নিয়মের অনেক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। ফলে নিয়মমাফিক সেই সুবিধাই পান প্রধানমন্ত্রী।
নির্বাচন চলাকালীন বায়ুসেনার বিমান কোনও ভাবেই ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছে কমিশন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী-সহ কেন্দ্র এবং রাজ্যের অন্য মন্ত্রীদের জন্যই এর ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে আচরণ বিধিতে জানাচ্ছে কমিশন। এ ছাড়া প্রচারে কোনও সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না বলে নির্দেশ রয়েছে কমিশনের। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে সেই ছাড়ও রয়েছে। ভোট চলাকালীন কেবলমাত্র এক জন নন-গেজেটেড কর্মীকে ব্যক্তিগত এবং সরকারি সফরে নিয়ে যেতে পারেন অন্য মন্ত্রীরা। তবে ওই কর্মী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না। এই নিয়ম থেকেও প্রধানমন্ত্রীর অব্যাহতি রয়েছে।
নিরাপত্তার কারণে অনেক নেতা এবং মন্ত্রী বুলেটপ্রুফ-সহ অন্য গাড়ি ব্যবহার করেন। কমিশন বলছে, ওই সব গাড়ি ব্যবহার করা যেতেই পারে কিন্তু তার খরচ সরকার বহন করবে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা তাঁর রাজনৈতিক দলকে ওই খরচ দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে তা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্ৰুপ (এসপিজি)-এর আওতায় রাখা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, এই সময় প্রধানমন্ত্রী কোনও সফরে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনকেই হেলিপ্যাড তৈরি করতে হবে। কমিশনের বেঁধে দেওয়া তালিকা মেনে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল তার খরচ দেবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার সময় টেলিপ্রম্পটার-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করে দেন দূরদর্শনের কর্মীরা। নির্বাচনের বিধি মতে, তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রকের নিয়ম মেনে দূরদর্শনের কর্মীদের ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়ও দেয়নি কমিশন। সম্প্রতি মোবাইল ফোনে নরেন্দ্র মোদীর ‘বিকশিত ভারত’-এর বার্তা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে তৃণমূল-সহ কয়েকটি বিরোধী দল কমিশনে অভিযোগ জানায়। নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে ওই বার্তা পাঠানো বন্ধের নির্দেশ দেয়। কমিশনের এমন পদক্ষেপের নজির আগেও রয়েছে। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে মোদীর ছবি-সহ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিজ্ঞাপন ওই রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে ছিল। তখন কমিশন নির্দেশ দেওয়ায় ওই বিজ্ঞাপন সরে যায়। কমিশন জানিয়েছে, ভোটের প্রচারে কোনও সরকারি জায়গা ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি স্থানে রাখা যাবে না রাজনৈতিক ব্যানার, পোস্টার এবং পতাকা। আবার ভোট ঘোষণার পরে স্বাধীনতা ও প্রজাতন্ত্র দিবস নিয়ে শর্ত রয়েছে কমিশনের। বিধি বলছে, কোনও কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন ব্যক্তি ওই কেন্দ্রে স্বাধীনতা এবং প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজধানী এবং মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের রাজধানীতে সেই কর্মসূচি করতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy