(বাঁ দিকে) মেদিনীপুরে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে রোড-শো মিঠুনের । কার্বলিক অ্যাসিড লেখা বোতল নিয়ে বিক্ষোভ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র
বছর তিনেক আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েই দলীয় সভামঞ্চ থেকে নিজেকে ‘জাত গোখরো’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন নেতা-অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। সেই অনুষঙ্গ টেনেই এ বার মিঠুনের সামনে অভিনব প্রতিবাদ মেদিনীপুর শহরে। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের সমর্থনে রোড-শো করছিলেন মিঠুন। সেই সময় কিছু যুবক হাতে প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। বোতলের উপরে সাদা টুকরো কাগজের উপরে লেখা ছিল ‘কার্বলিক অ্যাসিড’। তবে তা জাত গোখরোর মুখে দেওয়ার জন্যই কি না, সেটা লেখা ছিল না।
এই বিক্ষোভের পিছনে রাজনীতি রয়েছে কি না তা জানা না গেলেও বিজেপির দাবি, নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিক্ষোভকারীদের গলায় ঝোলানো ছিল ‘বাংলার মানুষ’ লেখা পোস্টার। কারও কারও হাতে ছিল রঙিন জল ভরা বোতলও। সেগুলির উপরেই লেখা ছিল কার্বলিক অ্যাসিড। বিজ্ঞানসম্মত্ত ভিত্তি তেমন একটা না থাকলেও গ্রামবাংলায় সাপ তাড়ানোর অব্যর্থ ওষুধ হিসাবে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহার হয়ে থাকে। মনে করা হচ্ছে সাপ তাড়ানোর সেই অনুষঙ্গ থেকেই ওই বোতল-বিক্ষোভ। প্রতীকী প্রতিবাদে ‘জাত গোখরো’ মিঠুনের মুখ বন্ধের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কয়েক জন বিক্ষোভকারীর হাতে ছিল ইংরেজিতে লেখা একটি পোস্টার, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, “বন্যপ্রাণের ক্ষতি করার কোনও উদ্দেশ্য আমাদের নেই।” আপাত ভাবে বন্যপ্রাণ বাঁচানোর বার্তা মনে হলেও আদতে স্বঘোষিত ‘জাত গোখরো’ মিঠুনকে খোঁচা দিতেই এই পোস্টার বানানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অত্যুৎসাহী কাউকে কাউকে আবার সাপের ফণার বিভঙ্গে নাচ করতেও দেখা যায়।
২০২১ সালের ৯ মার্চ ব্রিগেডে পদ্মশিবিরে যোগদানের পরেই নিজের বক্তৃতার মধ্যে তিনি তাঁর অভিনীত ছবির একটি জনপ্রিয় সংলাপ উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘‘আমি বেলেবোড়াও নই, জলঢোঁড়াও নই। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলেই ছবি।’’ এর পর প্রায় প্রতিটি জনসভাতেই এই জনপ্রিয় ‘ডায়ালগ’ ব্যবহার করেছেন মিঠুন। কখনও কখনও শ্রোতারাই এই সংলাপ বলার আবদার জুড়েছেন ‘মহাগুরু’র কাছে। অন্য দিকে, মিঠুনকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে একাধিক বার তাঁকে ‘জাত গোখরো’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে মিঠুনের আরও কিছু সংলাপ উস্কানিমূলক অভিযোগে মামলাও হয় কলকাতা হাইকোর্ট। তবে তা ধোপে টেকেনি। এ বার ভোটের প্রচারে সরাসরি ওই ‘ডায়ালগ’ অন্য ভাবে বলে একই কথা শোনাচ্ছেন তিনি। তা নিয়ে পাল্টা বলছে তৃণমূলও। তবে এই ভাবে কার্বলিক অ্যাসিড লেখা প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে প্রতিবাদ আগে কখনও দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে বঙ্গের ভোটে নতুন রঙ্গ নিয়ে এল মঙ্গলবারের মেদিনীপুর।
মঙ্গলবার সকালে মিঠুনের রোড-শো ঘিরে তুলকালাম হয় মেদিনীপুরে। জুতো-ইট-বোতল ছোড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের সমর্থনে রোড-শো করছিলেন তিনি। হঠাৎই বিজেপির মিছিলে ধেয়ে আসতে থাকে জল ভর্তি প্লাস্টিকের বোতল, জুতো, এমনকি ইটও। দেখা যায় প্রচারগাড়ি থেকে জুতো, বোতল না-ছোড়ার অনুরোধ করছেন অগ্নিমিত্রা। তার পরেও অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
বিজেপির অভিযোগ, এই বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য দায়ী তৃণমূল। শাসকদলের এক যুবনেতার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, পুলিশের সামনেই তৃণমূল এই কাজ করলেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। তৃণমূল অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আগামী শনিবার ষষ্ঠ দফায় মেদিনীপুর কেন্দ্রে ভোট। তার আগে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে মেদিনীপুরে প্রচারে আসেন মিঠুন। তৃণমূল মেদিনীপুরে প্রার্থী করেছে দলের বিধায়ক তথা অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy