Advertisement
E-Paper

নির্যাতিতাকে ভুলেছে হাথরস, ভোট জাতপাতেই

গত মার্চে হাথরস জেলা আদালত মূল অভিযুক্ত সন্দীপ সিংহকে সাজা দিলেও, বাকি তিন অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন ভোট নিয়ে মুখ খুলছে না মৃতার পরিবার।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৩
Share
Save

নারী নির্যাতনের ঘটনার জেরে গোটা দেশের ‘লজ্জা’ হয়ে উঠেছিল উত্তরপ্রদেশের হাথরস। দলিত কন্যাকে উচ্চবর্ণের পুরুষদের অত্যাচার করে হত্যা এবং ডিজ়েল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার সেই স্মৃতি কিন্তু সাড়ে তিন বছরেই ফিকে। আগামী ৭ মে লোকসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়ানো এই জনপদে জাতপাতই ভোটদানের ক্ষেত্রে বিচার্য। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিরোধী দলেরও দায় নেই নির্যাতিতার পরিবারের প্রতিবাদকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার।

দু’বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই মৃত কিশোরীর বাবা এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, “এখন তা-ও সুরক্ষা আছে, কয়েদি-জীবন কাটালেও আমরা টিকে তো আছি। এরা চলে গেলে ফের অত্যাচার শুরু হবে। এমনিতেই পোকামাকড়ের মতো রেখে দেয় দলিতদের। আগে থেকেই তলায় ঠেলে রেখেছে, পাছে কেউ না মুখ তুলতে পারে।” এই ঘটনায় অভিযুক্তদের সাজা হলে, গ্রামেরই একাংশের প্রতিশোধ-প্রবণতা বাড়বে, এমনটাই আশঙ্কা পরিবারের। মৃতার বাবার কথায়, “কিন্তু তবুও আমরা চাই দোষীদের শাস্তি হোক। কিন্তু জেলা আদালতে খুব ধীরে চলছে মামলা। আগে সাপ্তাহিক শুনানির ডাক পড়ত, এখন ডাক পড়ে মাসে।”

গত মার্চে হাথরস জেলা আদালত মূল অভিযুক্ত সন্দীপ সিংহকে সাজা দিলেও, বাকি তিন অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন ভোট নিয়ে মুখ খুলছে না মৃতার পরিবার। তাদের সিআরপিএফের পাহারা দিয়ে রাখা হয়েছে এখনও। রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাও। নির্যাতিতার ভাই বলছেন, ‘‘যখন নিজেদের প্রয়োজন ছিল অনেক নেতাই দেখা করতে এসেছিলেন। এখন আর কেউ আসেন না। রাজ্য সরকারের থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলাম। তা উকিলের আর দৈনন্দিন খরচেই চলে যাচ্ছে। সরকারি চাকরির আশ্বাস সত্ত্বেও, তা মেলেনি।’’ গ্রামবাসীদের বক্তব্যের নির্যাস, এই এলাকা ছিল হিং এবং গুলাল তৈরির জন্য পরিচিতি। এখন ‘বিটিয়া কাণ্ডের’ জন্য কুখ্যাত হয়ে গিয়েছে। হাথরস কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী রাজ্যের রাজস্ব মন্ত্রী অনুপ প্রধান বাল্মিকী। সমাজবাদী পার্টি দাঁড় করিয়েছে যশবীর বাল্মিকী এবং বিএসপি-র প্রার্থী হেমবাবু ধানগড়। বিরোধী প্রার্থীরও প্রচারেও উঠছে না নির্যাতিতা কিশোরীর কথা।

হাথরস আসনটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এখানে দলিত এবং ঠাকুর উভয় সম্প্রদায়েরই সংখ্যা তিন লক্ষ করে। ব্রাহ্মণ দু’লক্ষ, দু’লক্ষ বৈশ্য এবং আশি হাজার মুসলমান। দলিতের মধ্যে জাঠভ সম্প্রদায়ের সমর্থন ব্যতিরেকে বিজেপি-র এখানে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য। এ বারেও তাতে কোনও বদল হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ১৯৯১ সাল থেকে এখানে বিজেপির একচ্ছত্র আধিপত্য। ২০০৯ সালে আরএলডি প্রার্থী জিতেছিলেন, কিন্তু সে বার আরএলডি ছিল বিজেপি-র জোটে। ১৯৯৬, ২০১৪ এবং ২০১৯ -এ তিন বার দলিতদের দল বিএসপি এখানে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। বিএসপি দলিত ভোটারদের দল, যাদের এখানে ভোট ব্যাঙ্ক যথেষ্ট বড়। হাথরসের এক গ্রাম প্রধান শশী কপূরের কথায়, ‘‘বহেনজি এবং দলের অন্য নেতারা এখানে বিজেপি-র মতো সক্রিয় নন। ফলে দলিতরা উচ্চবর্ণের দ্বারস্থ হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Hathras Uttar Pradesh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}