প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ পি চিদম্বরম। ছবি: পিটিআই।
দেশ জুড়ে সমাজের নানা ক্ষেত্রে ভয়ের পরিবেশ কাজ করছে, কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। সমসময়ে বিরোধীরা প্রায়ই এমন অভিযোগ করে থাকেন। কলকাতায় এসে সেই সুরেই নাম না করে কেন্দ্রকে বিঁধলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ পি চিদম্বরম। দেশে ভয়ের আধিপত্য চলছে— এই ভাষাতেই তিনি সরব হলেন। পাশাপাশি, বিজেপি এবং ইউপিএ জমানার অর্থনীতি, সাম্প্রতিক আবহে বিরোধীদের জোট-রাজনীতি নিয়েও তাঁর মতামত জানান চিদম্বরম।
চিদম্বরম শনিবার কলকাতায় এসেছিলেন একটি সাহিত্য সম্মেলনে, তাঁর নতুন বই ‘দি ওয়াটারশেড ইয়ার: হুইচ ওয়ে উইল ইন্ডিয়া গো?’ সম্পর্কে আলোচনা করতে। সেখানেই ‘হোয়্যার টু নাও’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি ‘নির্ভয়ে থাকা আমার অধিকার’— বিলকিস বানোর এই উদ্ধৃতিটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তার পরেই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের উদাহরণ দিয়ে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, “মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে, তার পুরো সত্তাকে গ্রাস করছে ভয়। আমি কিছু বলতে পারব না, লিখতে পারব না এবং আইন ভাঙবে না, এমন কিছু আমি করতেও পারব না! চলচ্চিত্র, বইয়ের উপরে নিষেধাজ্ঞা নেমে আসছে। ভারতবর্ষে ভয়ের আধিপত্য চলছে। এটা গণতন্ত্রের বিপরীত ধারণা।”
দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাঁর বক্তব্যের বড় অংশ জুড়ে ছিল কংগ্রেস ও বিজেপির আমলে দেশের অর্থনীতির তুলনা। ভারতীয় অর্থনীতির পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলার সময়পর্বটি নিয়ে সরকারের শীর্ষ স্তরের নানা দাবিকেও এ দিন ফের বিঁধেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৯-এর ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, পরের পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০২৪-এর মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি এই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলবে। আবার আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) রিপোর্টকে হাতিয়ার করে মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অনন্ত নাগেশ্বরন ২০২৩-এর জুনে দাবি করেছিলেন, ২০২৭-এর মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো সম্ভব। এই ভাবে বার বার সময়পর্বটি বদলে যাচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিদম্বরমের কটাক্ষ, “এ যেন গতিশীল গোলপোস্ট!”
এ হেন অর্থনীতি বা সামাজিক অবস্থার কথা বার বার বলছে বিরোধী দলগুলিও। লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারাতে দেশের বিরোধী দলগুলি তৈরি করেছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। বিহারে নীতীশ কুমার ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে আবার বিজেপির এনডিএ জোটে ফিরে গিয়েছেন। বাংলায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের একা লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এ সবের জেরে বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে চর্চা চলছে। এই আবহে নির্দিষ্ট কোনও দলের প্রসঙ্গ এড়িয়েই চিদম্বরমের স্পষ্ট বার্তা: “মোদী জিতলে বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেবে। আমি আশা করি, এই দলগুলি সেটা বুঝবে।”
পাশাপাশি, জ্ঞানবাপী-বিতর্কে আইনজীবী চিদম্বরমের অবস্থান, “এটা বিচারাধীন বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, ১৯৯১-এর উপাসনাস্থল আইন সব ক্ষেত্রে শক্ত ভাবে কার্যকর হওয়া দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy