সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবির ভূমিকা। রাজ্যপালের ভূমিকা এবং কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু সরকারের করা মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখা বৈধ কাজ নয়। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে সাংবিধানিক বিধির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন বলেন, “এটা শুধু তামিলনাড়ু নয়, ভারতের সব রাজ্যের জয়।”
তামিলনাড়ু সরকারের পাশ করানো ১০টি বিলে রাজ্যপাল সম্মতি না-দেওয়ায় সেগুলি দিনের আলো দেখেনি। রাজ্যপালের এই ভূমিকার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, অনন্তকাল ধরে বিল ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল। সময়সীমা বেঁধে দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। এই সময়ের মধ্যে তাঁকে স্থির করতে হবে যে, তিনি কোনও বিলে সম্মতি দেবেন, বা তা আবার বিধানসভায় ফেরত পাঠাবেন, না কি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন।
এ ক্ষেত্রে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০০-র কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিলের কোনও আইনি বিষয়ে আপত্তি থাকলে, তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন রাজ্যপাল। তবে বিলটি পুরনো আকারেই আবার বিধানসভায় পাশ করানো হলে, তাতে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে বাধ্য। আর বিলে সাংবিধানিক বিচ্যুতি ঘটেছে, এমনটা মনে করলেই কেবল সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন রাজ্যপাল। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে যে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরামর্শ মেনেই চলতে হবে, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন ঘটনা নয়। বহু সময়ই সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। উল্লেখ্য যে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় পাশ হওয়া ২৩টি বিলে এখনও সম্মতি দেয়নি রাজভবন।