মিঠুন চক্রবর্তী। — ফাইল চিত্র।
জল্পনা ছিল। সেই জল্পনায় জল ঢাললেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। জানিয়ে দিলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন না। দলের হয়ে প্রচার করবেন। বিজেপি ডাকলে ভিন্রাজ্যেও প্রচারে যেতে রাজি তিনি।
শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল মিঠুনকে। সোমবার সেখান থেকেই ছাড়া পেলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিঠুন জানালেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে তিনি লড়ছেন না। কেন, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘লড়ছি না। আমি যদি প্রার্থী হই, তা হলে ৪২টি আসনে কী হবে?’’ তিনি যে রাজ্য জুড়ে প্রচার করে বেড়াবেন, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। রবিবার মিঠুনকে হাসপাতালে দেখে বেরিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘‘এ বার ভোটে মিঠুনকে আমরা পুরোদস্তুর প্রচারে ব্যবহার করব।’’ সোমবার একই সুরে কথা বললেন মিঠুন। তিনি বলেন, ‘‘১ তারিখ (মার্চ) থেকে লাগাতার প্রচার করব। বিজেপির হয়েই করব। আমি আর কোন পার্টি করি? আমাদের রাজ্যের বাইরে অন্য রাজ্যে যদি ডাকে সেখানেও যাব।’’
সপ্তাহ কয়েক আগে জল্পনা শোনা গিয়েছিল, মিঠুনকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হতে পারে। মিঠুন যদিও এই নিয়ে কখনও মুখ খোলেননি। দলের তরফেও জানানো হয়নি। পরে এই জল্পনা জোরালো হয়, যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী স্লোগান দেন, ‘অব কি বার ৪০০ পার’। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, ৪০০ পার করতে ‘যোগ্য’ প্রার্থীর খোঁজ শুরু করেছে দল। এই আবহে গুঞ্জন শোনা যায়, লোকসভায় প্রার্থী হতে পারেন মিঠুন। সোমবার সেই জল্পনায় তিনি নিজেই জল ঢাললেন। জানালেন, দলের হয়ে মার্চের শুরু থেকে পুরোদস্তুর প্রচার করবেন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন ৭ মার্চ ব্রিগেডে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মঞ্চেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ মিঠুন। প্রথম বক্তৃতায় নিজেকে ‘জাত গোখরো’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ভোটের প্রচারে অংশও নিয়েছিলেন পুরোদস্তুর। এর পরে ২০২২ সালে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে জেলায় জেলায় সাংগঠনিক বৈঠকেও তাঁকে দেখা যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে তাঁকে বিশেষ দেখা যায়নি। গত ডিসেম্বরে রাজ্য বিজেপির ২৪ জনের কোর কমিটির বৈঠক হয়ে। কমিটির সদস্য হলেও সেখানে যোগ দিতে দেখা যায়নি মিঠুনকে। তখন তিনি ছিলেন আমেরিকায়। এ বার কি তবে তাঁকে প্রচারে দেখা যাবে, যেমনটা বিজেপি চাইছে? আগামী দিনেই মিলবে উত্তর।
২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমে মিঠুন কড়া আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূলকে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর হয়েও মমতার বিরুদ্ধে প্রচার করেছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। মিঠুনের জনসভার মূল আকর্ষণ ছিল তাঁর সংলাপ। সভায় কখনও নিজেকে ‘জাত গোখরো’, কখনও ‘ফাটাকেষ্ট’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। এই ধরনের মন্তব্যের জন্যই ২০২১ সালের ২ মে ভোটের ফলঘোষণার পর মিঠুনের বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মামলা খারিজের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। কোর্ট তাঁকে সহযোগিতার কথা বলে। ২০২২ সালের পুজোর পর কলকাতায় বিজেপি রাজ্য দফতরে বসে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘৩৮ জন তৃণমূল বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। তার মধ্যে আমার সঙ্গে ডিরেক্টলি (সরাসরি) ২১ জন।’’ মনে করা হচ্ছে, মিঠুনের এ সব মন্তব্যকেই আসন্ন লোকসভা ভোটে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। তাই প্রার্থী না করে তাঁকে প্রচারের কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy