গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের বিদ্রোহ নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর মত জানিয়ে দিলেন দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে অর্জুনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘‘অর্জুন তো এখনও বিজেপিরই এমপি (সাংসদ)। ও তো সাংসদ পদ ছাড়েনি। ব্যারাকপুরে আমাদের প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। ও খুব ভাল ছেলে। ইরিগেশন মিনিস্টার (সেচমন্ত্রী) হিসাবে কাজ করছে।’’
রবিবার ব্রিগেডে তৃণমূলের মঞ্চে ছিলেন অর্জুন। সেই মঞ্চ থেকেই ব্যারাকপুরের প্রার্থী হিসাবে পার্থের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল। রবিবার বিকেল থেকেই তাঁর ক্ষোভের কথা জানাতে শুরু করেছিলেন অর্জুন। তার পর ক্রমে সেই ঝাঁজ বেড়েছে। মঙ্গলবার তাঁর জগদ্দলের বাড়ির অফিস থেকে সকালে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে দেন অর্জুন। তার পর বিকেলে সেই জায়গায় চলে আসে নরেন্দ্র মোদীর ছবি। বুধবার সকালে অর্জুন খোলামেলা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ব্যারাকপুর থেকেই লড়বেন। নির্দল নয়, কোনও দলের হয়েই লড়বেন। তাঁর দাবি, গত বারের থেকে বেশি ভোটে জিতবেন। মমতা তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘ও (অর্জুন) কোন দলের হয়ে লড়বে, সেটা ওর স্বাধীনতা। তবে আমরা রাজনৈতিক ভাবেই লড়ব। পার্থ মানুষের সমর্থন পাবে।’’
মমতার বক্তব্য নিয়ে পাল্টা অর্জুন শিবির বলেছে, দাদা যদি বিজেপিরই সাংসদ হতেন, তা হলে তাঁকে ব্রিগেডে তৃণমূলের মঞ্চে উঠতে দেওয়া হল কেন? তাঁদের এ-ও বক্তব্য, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে কেউই কাউকে রুখতে পারে না। সেটা অর্জুন পাঁচ বছর আগের লোকসভা ভোটে দেখিয়ে দিয়েছিলেন।
২০১৯ সালের ভোটে ব্যারাকপুরে তৃণমূলের টিকিট চেয়েছিলেন অর্জুন। কিন্তু দীনেশ ত্রিবেদীকেই প্রার্থী করেছিলেন মমতা। সে বার ভোটের ২৮ দিন আগে অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেন। পদ্মশিবির তাঁকেই প্রার্থী করেছিল। অর্জুন হারিয়ে দিয়েছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশকে। কিন্তু সেই অর্জুনই ২০২২ সালের অগস্টে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে গিয়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলতেন, দিদির কাছ থেকে ফের টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েই তৃণমূলে ফিরেছেন। কিন্তু সেই তিনি টিকিট না পেয়ে বলেছেন, ‘‘বেকার আমার দেড় বছর সময় নষ্ট হল!’’ গত কয়েক মাস ধরে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে অর্জুনের সংঘাত বারংবার সংবাদ শিরোনামে এসেছিল।
মমতা বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল প্রার্থী বাছাই করেছে যোগ্যতার নিরিখে। দলের প্রতি আনুগত্য, কে কেমন কাজ করেন— বিবিধ সূচক বিবেচনা করেই প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। এবং এ-ও জানিয়েছেন, তিনি একা প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করেননি। যা করেছেন মিলিত ভাবে। তৃণমূলনেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অর্জুন যে দলে গিয়ে লড়ুন না কেন, তা নিয়ে তিনি ভাবিত নন। আর ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ বলছেন, ‘‘বন্ধু অর্জুনের প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল। আমার ধারণা, ও যে কাজ করবে, ভেবেচিন্তেই করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy