পার্থ ভৌমিক (বাঁ দিকে), অর্জুন সিংহ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রেই ভোটে দাঁড়াবেন বলে জানিয়ে দিলেন টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহ। এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নাম। টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ অর্জুনের বসার ঘর থেকে মঙ্গলবারই সরে গিয়েছে মমতা, অভিষেকের ছবি। সেখানে এসেছে মোদীর ছবি। এই প্রেক্ষিতে তাঁর আবার পদ্মে ফিরে যাওয়ার জল্পনা দানা বেঁধেছে। বুধবার অর্জুনকে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, পার্থের বিরুদ্ধে ব্যারাকপুরেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি, গত বারের থেকে বেশি ভোটে এ বার জিতবেন তিনি। অর্জুন বলেন, ‘‘পার্থ ভৌমিকের সিন্ডিকেট থেকে ব্যারাকপুরকে আমাকে বাঁচাতেই হবে।’’
ব্যারাকপুর লোকসভায় যে তিনি প্রার্থী হতে চান, তা ২০১৯ সালেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন অর্জুন। কিন্তু সে বার তৃণমূল তাঁকে ব্যারাকপুরের প্রার্থী করেনি। তিনি তার পর বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে প্রথম বার সংসদে প্রবেশ করেন অর্জুন। তার পর অবশ্য তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হয় অর্জুনের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শুরু হয় তৃণমূলে অর্জুনের ‘দ্বিতীয় ইনিংস’। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও ব্যারাকপুরে তাঁকে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। এতে আবার ক্ষুব্ধ হয়েছেন অর্জুন। তাঁর কথায় আবার দলবদলের সম্ভাবনা উঁকি মারছে। যদিও স্পষ্ট নয়, তৃণমূল ছেড়ে অর্জুন বিজেপিতে যাবেন কি না। এই প্রেক্ষিতে প্রায় প্রতি দিনই নিয়ম করে সংবাদমাধ্যমে ‘গরম-গরম’ বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ। বুধবার তাঁর দাবি, তিনি ব্যারাকপুরে পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধেই লড়াই করবেন এবং এ বার তাঁর জয়ের ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পাবে। পার্থের সিন্ডিকেট থেকে ব্যারাকপুরকে বাঁচানোই মূল উদ্দেশ্য বলে জানাচ্ছেন জগদ্দলের মজদুর ভবনের আদি বাসিন্দা। অর্থাৎ, একটা বিষয় পরিষ্কার, অর্জুনের তৃণমূল ত্যাগ কেবল সময়ের অপেক্ষা। তা হলে কি তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাব অবশ্য বুধবারও ভেঙে দেননি অর্জুন। তবে অন্য দলে যে যাচ্ছেন তা অর্জুনের কথায় স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘বিনা টিকিটে ছোটবেলা থেকে ট্রেনে উঠিনি কোনও দিন। ভোটে কেন কোনও দলের টিকিট না নিয়ে লড়ব? দলের হয়েই লড়ব। কোন দল তা আপনারা কিছু দিনের মধ্যেই জানতে পারবেন।’’ লড়াই তো করবেন, কিন্তু অর্জুন এ বারও লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হবেন কি? তার জবাবে ভাটপাড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘বাবা, মা যখন অর্জুন নাম রেখেছেন, লক্ষ্যভেদ তো হবেই!’’
অর্জুনের ভাবনায় যে কেবলই ব্যারাকপুর, বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে তা আরও একবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ব্যারাকপুর আমার জায়গা। আমি ব্যারাকপুরের লোকের জন্য ৩৬৫ দিন দিনরাত রাজনীতি করি। ব্যারাকপুরের লোকের জন্য সব সময় আছি। ব্যারাকপুরবাসীর জন্যেই চিরকাল থাকব।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’ শেষ হওয়ার পর থেকেই অর্জুনের ‘গোসা’ শিরোনাম দখল করে রেখেছে। মঙ্গলবার, রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম ফোন করেছিলেন অর্জুনকে। দু’জনের কথাও হয়। যদিও সেই কথোপকথন নিয়ে পরে অর্জুন দাবি করেন, তাঁকে অন্য এক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই পরবর্তী কালে তাঁকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু ববির ‘ললিপপে’ যে অর্জুন ভুলছেন না, সে কথাও সংবাদমাধ্যমে নিজেই জানিয়েছিলেন অর্জুন। বলেছিলেন, ‘‘আমি ললিপপে ভুলছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy