(বাঁ দিক থেকে) প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম দেখেই অভিমান হয়েছিল তাঁর। তা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদান করছেন না। বুধবার তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজনৈতিক মহলে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা নস্যাৎ করে স্বপন বলেন, ‘‘যত দিন দিদি আছে দল (তৃণমূল) ছেড়ে কোথাও যাব না।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, রাজ্যের একটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন তিনি। দল টিকিট না দিলেও তিনি নির্দল হিসাবেই দাঁড়াবেন সেখানে।
মঙ্গলবার থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার ছোট ভাই স্বপন (বাবুন)-এর বিজেপিতে যোগদান করা নিয়ে নানা জল্পনা ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছিল রাজনীতির অলিন্দে। এরই মধ্যে হঠাৎ স্বপন দিল্লি চলে যাওয়ায় সেই জল্পনা আরও বেশি করে দানা বাঁধে। স্বপন নিজে এক পরিচিতের চিকিৎসার জন্য দিল্লিতে এসেছেন বলে জানালেও বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল, দিল্লিতে গিয়ে স্বপন দেখা করবেন অলিম্পিক্স সংস্থার প্রাক্তন সহ-সভাপতি নরেন্দ্র বাত্রার সঙ্গে। যিনি বিজেপির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এই নিয়ে যখন লোকসভা ভোটমুখী বাংলায় আলোচনার পারদ চড়তে শুরু করেছে, তখনই সেই জল্পনা নাকচ করলেন স্বপন। তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বিজেপিতে না গেলেও তাঁর নিজের দল যে ভাবে তাঁর পরামর্শকে গুরুত্ব দেয়নি, তাতে তাঁর অভিমান হয়েছে।
বুধবার এবিপি আনন্দকে স্বপন জানান, তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন না। তবে দলের প্রার্থিতালিকা দেখে অভিমান হয়েছে তাঁর। কারণ সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যাঁকে তিনি অপছন্দ করেন এবং একই সঙ্গে মনে করেন, তিনি লোকসভা ভোটের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নয়। কারণ প্রসূন এলাকার উন্নয়ন খাতে নিজের সাংসদ তহবিলের বরাদ্দটুকুও শেষ করতে পারেননি।
স্বপনের কথায় , ‘‘প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষটার প্রতি আমার অ্যালার্জি রয়েছে। মোহনবাগানের এজিএমে ও আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছিল, তা ভুলিনি। তা ছাড়া ওর যোগ্যতা নিয়েও আমার সংশয় রয়েছে। প্রসূনকে প্রার্থী করায় আমার মনে হচ্ছে, যে ক্লাস ফাইভ পাশ করতে পারে না, তাকে দিয়ে গ্র্যাজুয়েশন করানো হচ্ছে। প্রসূনের থেকে অনেক ভাল ভাল প্রার্থী ছিল। কিন্তু তাদের প্রার্থী না করে ওকে প্রার্থী করা হল। আমার মতে, ওর মতো বাজে লোককে না দেওয়াই উচিত ছিল।’’
যে দলের প্রার্থিতালিকা নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করছেন স্বপন, সেই দলের সর্বময় নেত্রী তাঁর নিজের দিদি মমতা। স্বাভাবিক ভাবেই স্বপনকে প্রশ্ন করা হয় তিনি কি দিদিকে এই অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন? স্বপন জানান, তিনি দলকে জানিয়েছিলেন। প্রশ্ন আসে, তবে কি তিনি দল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যেতে চান? এরই উত্তরে স্বপন বলেন, ‘‘দিদি যত দিন বেঁচে আছে বিজেপিতে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। দিদি যত দিন আছে আমি কোথাও যাব না। তবে আমি হাওড়ার ভোটার হয়েছি। নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াব। দিদিমণির সঙ্গে সরাসরি কথা বলব। দিদি আমার কাছে ভগবান। দিদির কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। দিদির কাছে আশীর্বাদ চাইব। দিদি হয়তো আমাকে না করবে। কিন্তু আমি দিদিকে বোঝানোর চেষ্টা করব কেন দাঁড়াচ্ছি।’’
১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তার ঠিক দু’দিনের মাথায় দিল্লিতে যান স্বপন। তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা শুরু হয় সেই সময়ানুক্রমের জন্যই। বস্তুত বুধবারও স্বপন দিল্লিতেই রয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল? তিনি দিল্লিতে কেন? কোনও বিজেপি নেতা কি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন? মুখ্যমন্ত্রীর ভাই অবশ্য তাঁর দিল্লি আসার কারণ হিসাবে পরিচিতের চিকিৎসার কথাই জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, বিজেপির অনেকের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ আছে। যোগাযোগ হয়ও। তার কারণ তিনি রাজনীতিতে আছেন। রাজনীতির সূত্রেই বিজেপির অনুরাগ ঠাকুর, কল্যাণ চৌবের মতো নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে হয় তাঁকে। তবে তার মানে এই নয় যে, তিনি দল বদলে বিজেপিতে যাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy