Advertisement
Back to
Assam Lok Sabha Election 2024

১৪-র মধ্যে ৯! হিমন্তের অসমে আগের শক্তিই ধরে রাখল বিজেপি, একই রইল কংগ্রেসের ফলও

এ বারও অসমে ন’টি আসন জিতেছে পদ্ম। তবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ২০১৯ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ বার পদ্মের প্রাপ্ত ভোটের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ।

হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ফাইল চিত্র।

রানা দত্তগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪ ২১:১৫
Share: Save:

অসমে এ বারও একই শক্তি ধরে রাখল বিজেপি। জিতলেও, আসনসংখ্যা কিন্তু বৃদ্ধি করতে পারল না বিজেপি। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে তাদের আসনসংখ্যার জয়ে ঠিক যেন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের প্রতিফলন দেখা গেল! এ বারও অসমে ন’টি আসন জিতেছে পদ্ম। তবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ২০১৯ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ বার পদ্মের প্রাপ্ত ভোটের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ।

ফলের নিরিখে কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ছবির পুনরাবৃত্তি। ২০১৯ সালে যেমন তিনটি আসন জিতেছিল তারা, এ বারও তিনটি আসনেই জয় পেয়েছে ‘হাত’। আবার অসম গণ পরিষদ (এজিপি) উঠে এসেছে এ বারের নির্বাচনে। একটি আসনে জিতেছে তারা। অন্য দিকে ইউনাইটেড পিপল্‌স পার্টি, লিবারেল (ইউপিপিএল) পেয়েছে একটি আসন। তবে এ বার কোনও আসনই পায়নি এআইইউডিএফ। ২০১৯ সালে তাদের দখলে ছিল একটি আসন।

উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে অসম বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবেই পরিচিত ছিল। বিশেষত, ২০১৬ সাল থেকে। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনই ২০১৬ সালের বিধানসভায় বিজেপির জয়ের বীজ বপন করে দিয়েছিল। ২০০৯ সাল থেকে এই রাজ্যে পদ্ম ফুটতে শুরু করে। সে বছরের লোকসভা নির্বাচনে চারটি আসন জিতেছিল বিজেপি। আরও বেশি আসন জয়ের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে বেছে নিয়েছিল তারা। ‘মোদী হাওয়া’য় ভর করে পর পর দু’টি লোকসভা ভোটে অসমের বেশির ভাগ আসন জিতে নেয় বিজেপি। ২০১৪ সালে রাজ্যের ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ৭টি। কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ পেয়েছিল ৩টি করে আসন। নির্দল একটি আসনে জিতেছিল।

Graphical representation

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

২০১৪ এবং ’১৯— দু’টি লোকসভা নির্বাচনেই অসমে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। বস্তুত, ২০১৪ সালের চেয়েও ২০১৯ সালে দু’টি বেশি আসন পেয়েছিল তারা। ঘটনাচক্রে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিপুল ভোটে জিতে অসমের শাসনক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদীর দল। তার উপরে ভর করে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে আসনসংখ্যা বাড়াতে খুব বেশি কষ্ট হয়নি বিজেপির।

দেশ: ৫৪৩৫৪৩

সংখ্যাগরিষ্ঠতা: ২৭২

  • দল
  • আসন
বিজেপি ২৪০
কংগ্রেস ৯৯
এসপি ৩৭
তৃণমূল ২৯
ডিএমকে ২২
টিডিপি ১৬
জেডিইউ ১২
শিবসেনা(উদ্ধব)
শিবসেনা(শিন্ডে)
এনসিপি(শরদ)
এলজেপি
ওয়াইএসআরসিপি
সিপিআইএম
আরজেডি
আপ
জেএমএম
আইইউএমএল
জেডিএস
জেকেএন
সিপিআই
আরএলডি
জেএনপি
সিপিআইএমএল
ভিসিকে
এজিপি
কেসি(এম)
আরএসপি
এনসিপি(অজিত)
ভিওটিপিপি
জ়েডপিএম
অকালি দল
আরএলটিপি
এসকেএম
এমডিএমকে
এএসপিকেআর
এআইএমআইএম
ইউপিপিএল
আপনা দল
এজেএসইউপি
ভারতএপি
এইচএএম (এস)
নির্দল

১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জিতেছিল ৯টি, কংগ্রেস ৩টি, অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) এবং নির্দল ১টি করে আসন পেয়েছিল। বিজেপি জিতেছিল তেজপুর, শিলচর, মঙ্গলদই, লখিমপুর, করিমগঞ্জ, যোরহাট, গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় এবং স্বশাসিত জেলা (অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট)। অন্য দিকে, কংগ্রেস জিতেছিল বরপেটা, কালিয়াবর এবং নওগাঁও। ধুবুরি আসন জিতেছিল এআইইউডিএফ এবং কোকরাঝাড় আসনে জয়ী হয়েছিলেন নির্দল প্রার্থী।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৩৬.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছিল ২৯.৯ শতাংশ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হারের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে ২০১৯ সালে আসনসংখ্যা বাড়লেও পদ্মের ভোটের হার খুব বেশি বাড়েনি। ২০১৪ সালে বিজেপি পেয়েছিল ৩৬.৪ শতাংশ। তবে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হার ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৯-এ অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এক ধাক্কায় ৩৫ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশে নেমে গিয়েছিল তারা।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের আগে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে মূলত কংগ্রেস এবং তাদের জোটসঙ্গীদেরই ‘আধিপত্য’ ছিল। দেশের অন্য প্রান্তে পদ্ম ফুটলেও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সে ভাবে দাঁত ফোটাতে পারছিল না তারা। তবে অসমে ২০০৯ সালে চারটি লোকসভা আসন জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে এই রাজ্যে ঝাঁপাতে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনকেই বেছে নিয়েছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জও ছিল ওই নির্বাচন।

অসমে কংগ্রেস দারিদ্র দূরীকরণ, মনরেগা, চা-বাগানের জনজাতি সম্প্রদায়ের উন্নয়নকে তাদের নির্বাচনী ইস্যু করে লড়াইয়ে নেমেছিল। কিন্তু বিজেপি নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ‘সিল’ করা, সংবিধানের ২৪৪ (এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কার্বি আংলং জেলার দাবি পূরণ-সহ বেশ কয়েকটি ইস্যুকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নামে। ফল বেরোনোর পরে দেখা গিয়েছিল, মোদীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইস্যুকেই বেছে নিয়েছিলেন অহমিয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE