Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

মমতা নিয়ে একই মনোভাব অধীরের

শনিবার কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে হুঁশিয়ারির সুরে জানান, যাঁরা দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ মানবেন না, তাঁরা বাইরে যাবেন।

অধীর চৌধুরী।

অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

অধীর আছেন অধীরেই।

দিল্লিতে তাঁর দল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণে এখনও অনড় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

রবিবার বহরমপুরে সাংবাদিকদের কাছে অধীর বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন যে তিনি দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছেন আর বাংলায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাই আমরাও দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটে, বাংলায় মমতার বিরুদ্ধে। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা খাতির করতে পারব না। এ নিয়ে আমার কোনও ইতস্তততা নেই। এ রাজ্যে যিনি আমাদের খতম করছেন তাঁর সঙ্গে তো দোস্তি করতে পারি না? তাই মমতা যেমন বলছে দিল্লিতে আমি ইন্ডিয়া জোটে আছি,বাংলায় সিপিএম ও কংগ্রেসের বিরোধিতা করি। আমরাও একই কথা বলছি।”

শনিবার কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে হুঁশিয়ারির সুরে জানান, যাঁরা দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ মানবেন না, তাঁরা বাইরে যাবেন। এ দিন অধীর সেই প্রসঙ্গ না তুলেও স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসকে খতম করা হয়েছে। ২০১১ সালে কংগ্রেসের সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসার পরদিন থেকে তিনি কংগ্রেসকে হত্যা করার অভিযানে নেমেছেন। তাই কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে আমরা তাঁর দয়া নিতে পারি না। এটা নৈতিকতার লড়াই, কংগ্রেসকে রক্ষার লড়াই।’’

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিঁধেছেন অধীর। অভিষেক সদ্য এক নির্বাচনী সভায় আশ্বাস দিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোট কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে বিপিএল তালিকাভুক্তদের বছরে ১০টি করে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার নিখরচায় দেওয়া হবে। এ নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করে বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, “ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে কী করবে, তা ঠিক করবে ইন্ডিয়া জোট। ইন্ডিয়া জোটের মালিক কি তিনি? নাকি আগ বাড়িয়ে ‘ইন্ডিয়া জোট’ ‘ইন্ডিয়া জোট’ বলে নিজেদের হারানো ভোটব্যাঙ্ক রক্ষা করতে চাইছেন তিনি। তিনি এক্তিয়ার-বহির্ভূত কথা বলছেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অধীরকে ‘মমতার সঙ্গে লড়াই করতে উপযুক্ত জায়গা খোঁজার’ পরামর্শ দিয়েছিলেন। তা নিয়ে অধীরের প্রতিক্রিয়া, ‘কে, কোথায়, কী বলছেন, সেই জ্ঞান নিয়ে অধীর চৌধুরী চলে না। আমি নিজের বিবেক, বুদ্ধি বিবেচনার দ্বারা পরিচালিত হই। মানুষের আশীর্বাদ, দোয়া আমার রাজনৈতিক পুঁজি।”

অন্যদিকে, খড়্গে-অধীর বিতর্ক নিয়ে তোলপাড় মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস শিবির। লালগোলা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি যদুরাম ঘোষ বলেন, “খড়্গেজী বলেছেন কংগ্রেস হাইকমান্ডের কথা। আর অধীর চৌধুরী যা বলেছেন তা প্রতিটি কংগ্রেস কর্মীর মনের কথা। তৃণমূল ও বিজেপির অত্যাচারের শিকার হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মী।” জেলার প্রাক্তন সভাধিপতি তথা কংগ্রেস নেতা শিলাদিত্য হালদার বলেন, “দলের কর্মীরা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আছেন। তৃণমূলের কত অত্যাচার সহ্য করে এ রাজ্যে কংগ্রেসের কর্মীরা দল করছেন, দিল্লিতে থেকে তা উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।” বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “অধীর চৌধুরী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। তিনিও দলের হাইকমান্ডেরই অংশ। কয়েকদিন আগে মালদহে প্রচারে এসে খড়্গেজী বলেছিলেন, বিজেপি যেমন কংগ্রেসের ঘর ভেঙেছে, মমতাও তেমনই কংগ্রেস ভেঙেছেন। তাই তৃণমূলকে একটি ভোটও দেবেন না। অধীর চৌধুরী বাস্তব কথা বলেছেন। এ রাজ্যে কংগ্রেসের রাজনীতির সমীকরণের বদল ঘটবে না।”

অন্যদিকে, এটি ‘কংগ্রেসের দলীয় ব্যাপার’ বলে মন্তব্য করেও কার্যত অধীরের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা সিপিএম। দলের মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, “জোটের দুই শরিকের কাছেই বিজেপি যা, তৃণমূলও তাই। দিল্লির রাজনীতি কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না এ রাজ্যে আমাদের জোটে।” আর তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন,“সারা দেশ আজ তাকিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। ইন্ডিয়া জোট তাঁর উদ্যোগেই হয়েছে। কংগ্রেস হাইকমান্ড তাঁর প্রতি আস্থা রাখায় সকলেই খুশি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE