দিলীপ ঘোষ।
বিজেপির হয়ে দেওয়াল লেখার কারণে দুর্গাপুরের শোভাপুর এলাকার দু’জনকে স্থানীয় একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঠিকাকর্মীর কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ নিজেও। যদিও তৃণমূল এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিলন মণ্ডল ও সুভাষ গোপ নামে ওই দু’জন গত ৪-৫ বছর ধরে ওই হাসপাতালে ঠিকাকর্মী হিসেবে কর্মরত। মিলনের বাবা জয়দেব মণ্ডল জানান, তিনি বিজেপির পুরনো কর্মী। তিনি দলীয় প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সমর্থনে দেওয়াল লেখেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সে জন্য ছেলেকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতারা বলেছেন, বিজেপি করলেই কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হবে। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছি।’’ সুভাষেরও দাবি, ‘‘আমি বিজেপির হয়ে দেওয়াল লিখেছি, সেই দোষে কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের নেতারা ডেকে বলেছেন, বিজেপি না ছাড়লে কাজ মিলবে না।’’
সোমবার চণ্ডীদাস বাজারে চা-চক্রে যোগ দিয়ে দিলীপের অভিযোগ, ‘‘গত কাল দেওয়াল লিখেছিলেন বলে আমার দু’জন কর্মীকে কাজ থেকে ছাঁটাই করে দিয়েছে। কে কোন দল করবে তুমি ঠিক করতে পারো না। এ ধরনের রাজনীতি যদি চলতে থাকে, দিলীপ ঘোষ কিন্তু ভোটের পরে সুদ-সহ হিসাব নেবে।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপির তো একটাই কাজ, কেউ হোঁচট খেলে বা পড়ে গেলেও তৃণমূলের ঘাড়ে দায় চাপানো। যাঁদের কাজ গিয়েছে, তাঁদের কাজের জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখুক, কাজে কোনও গাফিলতি ছিল কি না। কারও কাজ যাক, সেটা আমরা চাই না। আর আমরা তাঁদের তৃণমূল করার কথা বলবও না।’’
এ দিন দিলীপ পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সরব হন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গতকাল ফুলঝোড়ে চা খেতে গেলে, সেখানে তৃণমূলের লোকেরা গোলমাল করে। এটা পুলিশের দায়িত্ব নয়? আমি বসে রাস্তায় চা খেতে পারব না, লোকের সঙ্গে কথা বলতে পারব না?’’ তৃণমূলকে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমরা চা খেলে অন্যের কষ্ট হয়। তোরা চা খেলে কেউ সঙ্গে আসে না। চায়ের দোকানে পয়সাও দেয় না।’’ কীর্তি আজাদও প্রাতর্ভ্রমণে বেরোচ্ছেন, সে প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা আমাদের বহু বছরের অভ্যাস। উনি এবং ওঁর কর্মীরা চেষ্টা করছেন। কিন্তু যাঁরা রাত পর্যন্ত পার্টি করেন, খেয়ে ঘুমোন, তাঁরা কী করে প্রাতর্ভ্রমণ করবেন!’’ কীর্তির প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি যখন যা মনে আসে বলেন। ওঁর কথার কোনও মূল্য নেই।’’
এ দিন মেমারিতে প্রচারে গিয়ে দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের জায়গায় দখলদার উচ্ছেদ প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘বহু সরকারি জায়গা কব্জা হয়ে রয়েছে। দুর্গাপুরেও ডিএসপি-র জায়গায় লোকেরা বসে আছেন। পুনর্বাসন দিয়েই তাঁদের সরিয়ে দেওয়া উচিত। বহু দিন ধরে তাঁরা বাস করছেন। হঠাৎ করে তাড়িয়ে দিলে যাবে কোথায়? তাই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা উচিত।’’ তাঁর দাবি, ‘‘লোকেরা ছাড়তে রাজি আছেন। আমার মনে হয়, এ ধরনের উচ্ছেদ বন্ধ করা উচিত।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘এ সব ভোটের জন্য নাটক ছাড়া কিছু নয়। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ বলেছিলেন, উচ্ছেদ হলে বুলডোজ়ারের সামনে দাঁড়াবেন। তিনি তো চলে গিয়েছেন। এখন দিলীপ ঘোষ ভাবছেন, এ সব বলে ভোটটা পার করে নেবেন। ভুল ভাবছেন। উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া এক জনকেও তোলা যাবে না, এই দাবিতে আন্দোলন করছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy