শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ভিটামিন ডি খেতে বলছেন চিকিৎসক থেকে পু্ষ্টিবিদেরা। খাবারের মাধ্যমে খুব অল্প পরিমাণেই ভিটামিন ডি ঢোকে শরীরে। তাই সাপ্লিমেন্ট খেতে বলেন অনেক চিকিৎসকই। কিন্তু শুধু ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেলেই কি শরীরের বল বাড়বে? তা কিন্তু নয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ভিটামিন ডি তখনই ভাল কাজ করবে যখন তার সঙ্গে থাকবে আরও একটি খনিজ উপাদান। বেশির ভাগ ভারতীয়েরা কিন্তু, এই খনিজের ঘাটতিতেও ভোগেন। কী সেটি?
পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেলে তার সঙ্গে এমন খাবার খেতে হবে যাতে ম্যাগনেশিয়াম ভরপুর মাত্রায় রয়েছে। অর্থাৎ ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম মেলালে তবেই তা শরীরে ভাল কাজ করবে। কেবল রোগ প্রতিরোধ বাড়ানো নয়, স্থূলত্ব কমাতেও বড় ভূমিকা নেবে ম্যাগনেশিয়াম। ভিটামিন ডি ও ম্যাগনেশিয়ামের মিশেল জীবাণু সংক্রমণ থেকেও বাঁচাবে। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগ থেকে বাঁচতেও ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারই খেতে হবে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ ভারতীয়ই ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৬ শতাংশই ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভোগেন।পুরুষদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ এবং মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশের শরীরে স্বাভাবিক ভাবে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকার কথা, তা একেবারেই নেই। আর এই ঘাটতি কেবল ভিটামিনের নয়, ম্যাগনেশিয়ামেরও। কেবল ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খেলে যে এই ঘাটতি মিটে যাবে তা নয়, সে জন্য সঠিক ডায়েটও মানতে হবে।
আরও পড়ুন:
কী খেলে ঘাটতি মিটবে?
ভিটামিন ডি-র ৮০ শতাংশ আসে সূর্যের আলো থেকে। বাকি ২০ শতাংশ বিভিন্ন খাবার থেকে পাওয়া যায়। যে কোনও দানাশস্যেই যথেষ্ট ভিটামিন ডি থাকে। তাই রোজের ডায়েটে ওট্স রাখা ভাল। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি বেশি থাকে। তবে এখানে তো আর টুনা, কড মাছ পাওয়া যাবে না, সে ক্ষেত্রে ভেটকি, বাসা, পমফ্রেট মাছ ভাল।
সেই সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম আছে এমন খাবারও খেতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের সারা দিনে ৩১০ থেকে ৪২০ মিলিগ্রামের মতো ম্যাগনেশিয়াম দরকার। তাই খেতে হবে নানা ধরনের বাদাম, বীজ। প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম থাকে কলায়। এ ছাড়া থাকে পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি-ও। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি করে কলা রাখলে শুধু ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি দূর হবে না, উপকার মিলবে আরও। ম্যাগনেশিয়ামের জন্য খেতে পারেন পালং শাক, কাঠবাদাম, ডার্ক চকোলেট। জোয়ারের তৈরি রুটিতে ভরপুর ম্যাগনেশিয়াম থাকে। মটরশুঁটি, ঢেঁড়শ, ব্রোকোলিতেও থাকে ম্যাগনেশিয়াম। অঙ্কুরিত ছোলা খেলেও ম্যাগনেশিয়ামের চাহিদা মিটবে।