ব্যাঙ্কশাল আদালতে গোপাল তিওয়ারি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
গিরিশ পার্কে সাব ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডলের উপর গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত গোপাল তিওয়ারিকে ১০ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সহকারী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনকুমার সরকার।
শুক্রবার দুপুর ৩টে নাগাদ গোপালকে কড়া পুলিশি পাহারায় ব্যাঙ্কশাল কোর্টের লকআপে তোলা হয়। এ দিন আদালত কক্ষে অভিযুক্তের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী লোকেশ শর্মা বলেন, ‘‘ঘটনার পর প্রাথমিক ভাবে গোপাল তিওয়ারির নাম এফআইআর-এ ছিল না। তা হলে কেন তাকে গ্রেফতার করা হল?’’ যদিও সরকার পক্ষের আইনজীবী শুভেন্দু ঘোষ বলেন, গিরিশ পার্কের ঘটনায় ধৃত তিন ব্যক্তির গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে গোপালকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ দিন বিচারকের কাছে আর্জি জানিয়ে লোকেশবাবু জানান, ধৃত গোপাল তিওয়ারি অসুস্থ। সম্প্রতি তাঁর একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিক রোগী। সে জন্য চব্বিশ ঘণ্টা তাঁর স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে তাঁর আইনজীবীর উপস্থিতিতে গোপালকে জেরা করার আর্জি জানান অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার রাতে তেঘরিয়ার একটি হোটেল থেকে ধৃত গোপালের কাছ থেকে ১৭০০ টাকা-সহ ‘হনুমান চালিসা’ পওয়া গিয়েছে। এ দিন আদালতে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর কথায়, ‘‘গোপালের কাছ থেকে জিনিসপত্র বাজেয়াপ্তের তালিকায় পুলিশ হনুমান চালিসা দেখাচ্ছে। হনুমান চালিসা পুজো করার বিষয়। যে কোনও মানুষের কাছে হনুমান চালিসা থাকতে পারে। হনুমান চালিসা ‘সিজার লিস্ট’-এর অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হতে পারে না।’’ সরকারপক্ষের আইনজীবী বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘স্যর, গোপাল দীর্ঘ দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। পুলিশের ভয় ছিল বলেই গোপালের পকেটে হনুমান চালিসা রাখা ছিল।’’
পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল গিরিশ পার্কে গুলিচালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গোপাল। পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশের নাগাল এড়াতে ফোন না করে দীর্ঘ দিন নিজের মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত গোপাল। গোপালের স্ত্রী বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোপালের খোঁজ পেতে ওই হাসপাতালেও গোয়েন্দা মোতায়েন করা হয়েছিল। তার আগেই তাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গিরিশ পার্কে সাব ইনস্পেক্টরকে গুলি চালানোর ঘটনার পরে, গত ২০ এপ্রিল ট্রেনে গোপাল উত্তরপ্রদেশের টুন্ডলার উদ্দেশে রওনা দেয়। সেখান থেকে পঞ্জাবের কাপুরথালায় যায় সে। পরে পঞ্জাব থেকে বেঙ্গালুরু ও মুম্বইয়েও থাকে সে। দিন চারেক আগে মুম্বই থেকে কলকাতায় আসে গোপাল। স্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়েই গোপাল কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy