ইস্টবেঙ্গল ২ (প্রহ্লাদ, র্যান্টি)
টালিগঞ্জ অগ্রগামী ১ (বেলো)
টানা পাঁচ বার কলকাতা লিগের খেতাব জিতে নিল ইস্টবেঙ্গল। সব মিলিয়ে ৩৬ বার। মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে টালিগঞ্জ অগ্রগামীকে ২-১ গোলে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে লাল-হলুদ ব্রিগেড খেতাব নিশ্চিত করে নিল।
ম্যাচ যার, লিগ তার। আবার ড্র হলে চার বছর পরে বড় কোনও ট্রফির মুখ দর্শন করবে মোহনবাগান—এ দিন ম্যাচের আগে অবস্থাটা ছিল এমনই। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সবুজ-মেরুনের ঘরে যাতে ট্রফি না ঢুকতে পারে, তা ম্যাচের সাতাশ মিনিটেই নিশ্চিত করার দিকে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। অবিনাশের ক্রস থেকে প্রহ্লাদের দুরন্ত গোলে। যে দলের টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য সেই টালিগঞ্জ অগ্রগামী কিন্তু গোল শোধ দিয়ে দেয় তার সাত মিনিট পরেই। বেলো রজ্জাকের হেডে করা গোলে। সেই বেলোই আবার হেড করে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে এর পর র্যান্টিকে গোলের সুযোগ দিয়ে দেন ৩৭ মিনিটের মাথায়। ২৬ থেকে ৩৭— এই ১১ মিনিটেই ম্যাচের স্কোরলাইন ঠিক হয়ে যায়। এর পর টালিগঞ্জ গোল শোধ করার বহু সুযোগ পেলেও সফল হননি।
যে কোচ এই লিগ খেতাব জয়কে ‘মূল্যহীন’ আখ্যা দিয়েছিলেন, সেই আর্মান্দো কোলাসোকে এ দিন ম্যাচের শেষে উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা যায়। ম্যাচের পর সারা স্টেডিয়ামই এ দিন লাল-হলুদ পতাকা এবং জ্বলন্ত মশাল নিয়ে মেতে ওঠে। টানা পাঁচ বার কলকাতা লিগ খেতাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব ইস্টবেঙ্গলের অবশ্য প্রথম নয়। এর আগেও ১৯৭০ থেকে ’৭৬, টানা ছ’বার কলকাতা লিগে সেরার শিরোপা পেয়েছিল লাল-হলুদ বাহিনী।
ম্যাটাডোর ভর্তি লোক। বাসে জায়গা নেই। কাদাপাড়ার কাছে বাইপাসের ধার ঘেঁসে ফুটপাত দিয়ে যে শাস্তিতে হাঁটবেন, সেই উপায়ও বন্ধ! চার দিকে যেখানেই চোখ পড়েছে শুধু কালো কালো মাথা। হাতে পতাকা, মুখে স্লোগান— ডার্বি বাদে কলকাতা লিগের কোনও ম্যাচ ঘিরে এত উন্মাদনা-উচ্ছ্বাস শেষ কবে দেখা গিয়েছে, মনে করতে পারা মুশকিল। তবে এ-ও ঠিক যে, একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে তিন দলের ভাগ্য ঝুলে, সে-ও বহু দিন হয়নি কলকাতা লিগে। মঙ্গলবার সেই দিন ফিরে এল কলকাতার ফুটবলে, যা দেখে আইএফএ-র খুশি হওয়া উচিত।
এই উন্মাদনাকে এ দিন বাড়তি মাত্রা দেন আসন্ন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কলকাতার দল আটলেটিকো দ্য কলকাতার জার্সি পরে উপস্থিত হওয়া প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। পুজোর পর থেকেই যিনি সারা দেশের ফুটবল মাঠ মাতাবেন, সেই আটলেটিকোর অন্যতম কর্ণধার সৌরভ এ দিনের গোলকিপাররূপী আলভিটো ডি কুনহার বিরুদ্ধে যেমন পেনাল্টি শ্যুট আউটে অংশ নেন, তেমনই শট মেরে যুবভারতীর গ্যালারিতে নিজের সই করা ফুটবল পাঠিয়ে দর্শকদেরও মন মাতিয়ে দেন।
সব মিলিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা ফুটবল লিগের শেষ সন্ধ্যা যেমন নাটকীয়, তেমনই রঙিন হয়ে উঠল। যা বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বাড়তি পাওনা বইকি।
ছবি: উত্পল সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy