গুয়াহাটিতে ডিজি-সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।
সার্ক সম্মেলনে মোদী-শরিফ করমর্দনের পরেও যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ বিন্দুমাত্র গলেনি তা আরও এক বার স্পষ্ট করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। শনিবার গুয়াহাটিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজি-দের বার্ষিক সম্মেলনে ফের এক বার পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন তিনি। গোটা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পিছনে যে পাকিস্তানের মদত রয়েছে তা এ দিন বারে বারেই উঠে আসে তাঁর ভাষণে। পাশাপাশি, ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন আইএসআই-এর কার্যকলাপ নিয়েও সরব হলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ সমস্যার বিষয়টিও বাদ যায়নি।
গত এক বছরে দেশে মাওবাদী প্রভাব অনেক কমেছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন রাজনাথ। তবে, মাওবাদীরা অস্ত্র ছাড়লে কেন্দ্র আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাই ছিল ৪৯তম ডিজি-সম্মেলনের মুখ্য আলোচ্য বিষয়। এই প্রথম দিল্লির বাইরে ডিজিদের নিয়ে বৈঠক করলেন কোনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে রাজনাথ জানান, নতুন করে সংগঠন তৈরি করার প্রয়াস করছে আল-কায়দা। এ ব্যাপারে আরও বেশি সতর্কতার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, গোটা বিশ্বের কাছে মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএস দ্বারা চালিত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যুব সম্প্রদায়ের একাংশকে এই সংগঠন অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করছে।
তাঁর মতে, ভারত-পাক সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপের পিছনে পাক সীমান্তরক্ষী বাহিনীদেরই মদত রয়েছে। বার বার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে সীমান্তে সক্রিয় হয়েছে পাক বাহিনী ও জঙ্গিরা। এমনকী, কাঠমান্ডুতে সার্ক সম্মেলন চলাকালীন আর্নিয়াতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় মৃত্যু হয় তিন সেনা জওয়ান-সহ ১০ জনের। সেনা-জঙ্গি ওই সংঘর্ষের পরেই দিল্লি স্পষ্ট করে দেয়, সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হবে না। এ দিন একই বার্তা দেন রাজনাথ। তিনি বলেন, “হিংসাকে কোনও ভাবেই মদত দেবে না ভারত।” একই সঙ্গে দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার বার্তা দেন তিনি।
একই সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি গোষ্ঠীর তত্পরতার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। তাঁর মতে, শিল্প ও অর্থনীতিতে পরিকাঠামোগত অভাবই এই ক্রমবর্ধমান অশান্তির মূল কারণ। তবে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জেহাদি কার্যকলাপ রুখতে কেন্দ্র সব রকম ভাবে সাহায্য করবে বলে এ দিনের সম্মেলনে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঝাড়খণ্ড সফর শেষে রবিবার অসম সফরে আসছেন মোদী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুয়াহাটি এবং তার আশপাশের এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে ৩৫ কোম্পানি নিরাপত্তারক্ষী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy