Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Railway Recruitment Board

ভারতীয় রেলে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি করতে গেলে কী প্রয়োজন?

রেলব্যবস্থা চালু রাখার ক্ষেত্রে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা প্রচুর। আরআরবি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরির বিজ্ঞপ্তি খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।

ভারতীয় রেলে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি সংক্রান্ত তথ্য

ভারতীয় রেলে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি সংক্রান্ত তথ্য সংগৃহীত ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২২ ২২:১০
Share: Save:

পৃথিবীতে অন্যতম বৃহৎ পরিবহণ সংস্থা ভারতীয় রেল। সেই রেলব্যবস্থা চালু রাখার ক্ষেত্রে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা প্রচুর। আরআরবি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদের পরীক্ষাটি একটি কেন্দ্রীয় সরকারি পরীক্ষা। এই বছর রেলওয়ে বোর্ডের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। চাকরিপ্রার্থীরা রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য তথ্য দেখতে পারবেন। ভারতবর্ষের প্রতিটি জোনের জন্য আলাদা ভাবে এই পদগুলিতে নিয়োগ হয়।

যে চাকরির পদগুলির জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়, সেগুলি হল—

১. জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার

২. জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (আইটি)

৩. ডিপো ম্যাটেরিয়ালস সুপারিনটেনডেন্ট

৪. কেমিক্যাল অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট

এই পদগুলিতে চাকরির আবেদন জানানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা ধার্য করা হয়। সেগুলি নিম্নলিখিত—

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

চাকরিপ্রার্থীরা যে পদে আবেদন জানাবেন, তাঁদের-

১.সেই ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় তিন বছরের ডিপ্লোমা ডিগ্রি থাকতে হবে।

২.সেই ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় বিই বা বিটেক ডিগ্রি থাকতে হবে।

৩. ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিপ্লোমা বা ডিগ্রির অন্তিম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা এই নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন জানাতে পারবেন না।

৪.কেমিক্যাল অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে আবেদনের জন্য পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন সহযোগে স্নাতক স্তরে ৪৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

বয়ঃসীমা :

এই সব পদে আবেদন জানানোর জন্য চাকরিপ্রার্থীদের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৩৩ বছর হতে হবে। সাধারণত প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রেই নিম্নলিখিত ক্যাটেগরির প্রার্থীদের বয়সের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হয়। যেমন—

১.এসসি/ এসটি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ বছর

২.ওবিসি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩ বছর

৩. পিডাব্লিউডি অসংরক্ষিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ১০ বছর,ওবিসি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ১৩ বছর এবং এসসি/এসটিদের ক্ষেত্রে ১৫ বছর

একই রকম ভাবে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের ক্ষেত্রে, জম্মু-কাশ্মীরের চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে, রেলওয়ের গ্রুপ 'সি' ও 'ডি'-র নানা পদে ন্যূনতম ৩ বছর কাজ করেছেন, রেলওয়ের আধা প্রশাসনিক দফতরে চাকরি করছেন, বিধবা বা বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও বয়সের বেশ কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।

জাতিগত যোগ্যতা :

চাকরিপ্রার্থীদের এই পদে আবেদনের জন্য ভারতীয় হতে হবে। এ ছাড়াও, নেপাল ও ভুটানের অধিবাসীরাও আবেদন জানাতে পারেন। তিব্বতি শরণার্থী এবং অন্যান্য দেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরাও নির্দিষ্ট কিছু শর্তে আবেদন জানতে পারেন এই চাকরিতে।

পরীক্ষার ধরন :

এই পদের পরীক্ষাটি কম্পিউটারের মাধ্যমে নেওয়া হয়। দু’টি পেপারের উপর এই পরীক্ষা হয়।

প্রথম পেপারটিতে ১০০ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন (এমসিকিউ) থাকে। পরীক্ষা নেওয়া হয় গণিত, সাধারণ জ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান এবং সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও রিজনিং-এই বিষয়গুলির উপর। পরীক্ষার সময় ধার্য করা হয় ৯০ মিনিট। প্রতিটি ঠিক উত্তরে ১নম্বর দেওয়া হয় এবং ভুল উত্তরে ১/৩ নম্বর কেটে নেওয়া হয়।

দ্বিতীয় পেপারে মোট ১৫০ নম্বরের ১০০ টি প্রশ্নের পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার বিষয়গুলি হল— সাধারণ জ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপারে প্রাথমিক জ্ঞান, পরিবেশ ও দূষণ সংক্রান্ত প্রাথমিক জ্ঞান এবং টেকনিক্যাল দক্ষতা। পরীক্ষার সময় বরাদ্দ করা হয় ২ ঘন্টা। প্রতিটি ঠিক উত্তরে ১ নম্বর দেওয়া হয় ও ভুলে উত্তরে ১/৩ নম্বর কেটে নেওয়া হয়।

বিভিন্ন বিষয়ের উপর বরাদ্দ নম্বর :

প্রথম পেপারে-

১. গণিত-এ ৩০ নম্বর

২.সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও রিজনিং-এ ২৫ নম্বর

৩.সাধারণ জ্ঞান-এ ১৫ নম্বর ও

৪.সাধারণ বিজ্ঞান-এ ৩০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়।

দ্বিতীয় পেপারে-

১.সাধারণ জ্ঞান-এ ১৫ নম্বর

২. পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন-এ ১৫

৩.কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপারে প্রাথমিক জ্ঞান-এ ১০ নম্বর

৪.পরিবেশ ও দূষণ সংক্রান্ত প্রাথমিক জ্ঞান-এ ১০ নম্বর এবং

৫.টেকনিক্যাল দক্ষতা-এ ১০০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়।

নির্বাচন প্রক্রিয়া :

প্রথম দুটি ধাপের কম্পিউটারভিত্তিক পরীক্ষাতে পাশ করলে পরীক্ষার্থীদের নথি যাচাই ও ডাক্তারি পরীক্ষার পরই তাঁদের নিয়োগ করা হয়।

বিষয় :

নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম পেপারে যে পাঠ্যসূচি থাকে, তা হল:

১. গণিত: বডমাস,দশমিক ও ভগ্নাংশ, লসাগু ও গসাগু, অনুপাত, শতাংশ, সময় ও কাজ, সময় ও দূরত্ব ইত্যাদি।

২. সাধারণ বুদ্ধিমত্তা: সাদৃশ্য, কোডিং ও ডিকোডিং,সম্পর্ক, ভেন ডায়াগ্রাম ইত্যাদি।

৩. সাধারণ জ্ঞান: সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, ভূগোল, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভারতের অর্থনীতি, ভারতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ইত্যাদি।

৪. সাধারণ বিজ্ঞান: পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা।

দ্বিতীয় পেপারের পাঠ্যসূচিটি হল-

১. সাধারণ সচেতনতা: সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, ভূগোল, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাস, ভারতের সংবিধান, অর্থনীতি, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, খেলাধুলো ইত্যাদি।

২. পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন: দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচির বিষয়গুলি।

৩. কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন: কম্পিউটার ও তার গঠন, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস, এম এস অফিস, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি।

৪. পরিবেশ: পরিবেশের ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা, দূষণের বিরূপ প্রভাব, দূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশল, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।

৫. টেকনিক্যাল দক্ষতা: যে পদে আবেদন জানানো হয়েছে, সেই সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল দক্ষতা।

বেতন কাঠামো :

এই পদে প্রার্থীরা সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী ষষ্ঠ পর্যায়ের যে বেতনক্রম ধার্য করা হয়েছে, সেই অনুসারে বেতন পাবেন। ট্রেনিংয়ের সময় প্রার্থীদের বেতন হবে ১০,৯৭৪ টাকা মহার্ঘভাতা নিয়ে মোট ৪৬,৩৭৪ টাকা। ট্রেনিং শেষ হলে প্রার্থীরা মহার্ঘভাতা,বাড়িভাড়া বাবদ ভাতা ও বেড়াতে যাওয়ার ভাতা সহযোগে মোট ৬২,৩৮৬ টাকা পাবেন। এর মধ্যে কিছু টাকা ট্যাক্স বাবদ বাদ গেলে মোট ৫৫,০২৩ টাকা প্রার্থীরা পাবেন।

পদোন্নতি :

এই পদে চাকরিক্ষেত্রে পদোন্নতির সম্ভাবনাও রয়েছে। পদ্দোন্নতির ক্রমগুলি হলজুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার থেকে ইঞ্জিনিয়ার/ সেকশন ইঞ্জিনিয়ার, তার পর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার, এর পর ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার এবং এর পর ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার পদে উন্নতি হয় প্রার্থীদের।

তাই এই চাকরি পদটির প্রতি আগ্রহ থাকলে সমস্ত তথ্য দেখে নিয়ে আবেদন জানাতে পারেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy