Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Principal

কলেজ অধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আবেদন জানানোর জন্য কী কী বিষয় না জানলেই নয়

একজন কলেজ প্রিন্সিপাল বা অধ্যক্ষ হলেন সেই প্রতিষ্ঠানের সর্বেসর্বা। কলেজের মূল প্রশাসনিক প্রধান পদটি তাঁরই। আর তাই এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেওয়া।

কলেজ অধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আবেদন জানানোর জন্য যোগ্যতা

কলেজ অধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আবেদন জানানোর জন্য যোগ্যতা সংগৃহীত ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ২১:০৫
Share: Save:

কলেজের অধ্যক্ষ বলতে অনেকেরই প্রথমেই যে মানুষটির কথা মনে আসে, যিনি কেবল একা হাতে সব সমস্যা সামলে নিতেই জানেন না, ছাত্রছাত্রীদের পথপ্রদর্শন করে জীবনের গভীর উপলব্ধির ব্যাপারেও সমৃদ্ধ করতে জানেন।

একজন কলেজ প্রিন্সিপাল বা অধ্যক্ষ হলেন সেই প্রতিষ্ঠানের সর্বেসর্বা। কলেজের মূল প্রশাসনিক প্রধান পদটি তাঁরই। আর তাই এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেওয়া। যদি, কখনও কলেজে পড়ানোর গতানুগতিকতায় ক্লান্তি আসে এবং প্রশাসনিক পদের প্রতি বিশেষ আকাঙ্ক্ষা থাকে, তা হলে নিঃসন্দেহে এই পদের চাকরিতে আবেদন জানাতে পারেন। এই প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ পদের চাকরির নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হল, যা আপনার কাজে লাগতে পারে।

কলেজ অধ্যক্ষের ভূমিকা :

একজন অধ্যক্ষ কলেজের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাজ তাঁদের করতে হয়। এ ছাড়াও যে যে ভূমিকা পালন করতে হয় অধ্যক্ষদের, তা হল--

পড়ানোর ক্ষেত্রে - বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের আলোচনার মাধ্যমে পাঠ্যসূচিকে কী ভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায় ও কী ভাবে নানা রকম পদ্ধতিতে একটি বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরা যায়, সেই বিষয়ে আলোকপাত করেন অধ্যক্ষরা। কী ভাবে শিক্ষার মান বাড়ানো যায়, বিভিন্ন প্রোগ্রামে কলেজকে আরও কি ভাবে সাহায্য করা যায় এবং বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের কলেজের নানা উদ্যোগে যুক্ত করা যায়, সে সংক্রান্ত বিষয়েও অধ্যক্ষদের ভূমিকা অনেক।

গবেষণা ক্ষেত্রে- গবেষণার জন্য সঠিক পরিকাঠামো গড়ে তুলে, গবেষণার নানা সামগ্রীর সরবরাহ ঠিক রেখে, অন্যান্য কলেজের সঙ্গে নানা গবেষণার কাজের মাধ্যমে আরও বেশি ভাবে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার ক্ষেত্রেও কলেজের অধ্যক্ষদের নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে।

আর্থিক ক্ষেত্রে- কলেজের আর্থিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কলেজে আর্থিক নীতি, কৌশল ও বাজেট তৈরী করার ক্ষেত্রেও অধ্যক্ষদের বৰুধ ভূমিকা থাকে।

এ ছাড়াও, কলেজ পরিচালনা করা, কলেজের মানোন্নয়ন করা, পর্যাপ্ত ও যথাযথ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের ভর্তি, শিক্ষার্থীদের কলেজ জীবনকে আরও সুন্দর করার ক্ষেত্রে, শিক্ষাকর্মীদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অধ্যক্ষদের ভূমিকা অপরিসীম।

পশ্চিমবঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন ও পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন-এই দুইয়ের দ্বারাই সম্পন্ন হয়। দু'ক্ষেত্রেই অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে মোটামুটি একই রকম যোগ্যতার মাপকাঠি ধার্য করা হয় ও বেতন কাঠামোও একই থাকে।

তাই এ বার জেনে নেওয়া যাক, নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা :

১. কলেজের অধ্যক্ষ পদে আবেদন জানাতে গেলে প্রার্থীদের কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান থেকে মাস্টার্সে ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে।

২. পিএইচডি ডিগ্রি থাকতে হবে ।

৩. ইউজিসি দ্বারা স্বীকৃত পিয়ার রিভিউড জার্নালে ন্যূনতম ১০ টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হতে হবে।

৪. ইউজিসি-র ধারার অ্যাপেন্ডিক্স ২-এ উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক/ শিক্ষিকাদের একাডেমিক ও রিসার্চ স্কোর অনুযায়ী, গবেষণায় ন্যূনতম ১১০ নম্বর পেতে হবে প্রার্থীদের। এই নম্বরটিকে অ্যাকাডেমিক পারফরমেন্স ইন্ডিকেটর বা এপিআই নম্বর বলা হয়।

কাজের অভিজ্ঞতা :

প্রার্থীদের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসর পদে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১৫ বছর পড়ানোর ও গবেষণার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

ভাষা :

পশ্চিমবঙ্গের কলেজগুলিতে অধ্যক্ষ পদে আবেদন জানাতে গেলে প্রার্থীদের সাধারণভাবে বাংলা ও ইংরেজি ভাষাতে কথা বলা ও লেখার ক্ষেত্রে পারদর্শী হতে হয়। তবে, এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ঠ প্ৰতিষ্ঠানে যে ভাষায় পড়ানো হয়, সেই ভাষায় পারদর্শিতার চাহিদাই থাকে প্রার্থীদের থেকে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিমাপক নম্বরে ছাড় :

সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রাপ্ত নম্বরের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড়, ১৯৯১-এর আগে যাঁরা মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করে পিএইচডি করেছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।

বয়ঃসীমা :

প্রার্থীদের বয়স ন্যূনতম ৪০ বছর ও সর্বোচ্চ ৫৫ বছর ধার্য করা হয়েছে। তবে, এ ক্ষেত্রে এসসি/এসটিদের ৫ বছর, ওবিসিদের ৩ বছর এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের ১০ বছর ছাড় দেওয়া হয়।

নিয়োগ প্রক্রিয়া :

প্রার্থীদের এই পদে স্বচ্ছ ও যথাযথ পদ্ধতিতে নিয়োগ করা হয়। প্রার্থী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তাঁদের মেধা, রেজাল্ট, কাজের অভিজ্ঞতা এবং আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া অন্যান্য নথির উপর বরাদ্দ নম্বরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ইউজিসি উল্লেখিত এপিআই নম্বরটি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউয়ের দিনক্ষণ প্রার্থীদের যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বেতন কাঠামো :

সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই পদে আনুমানিক বার্ষিক বেতন হল ১, ৪৪, ২০০ টাকা। বেতনের মধ্যে সরকার প্রদত্ত নানা রকম ভাতাকেও ধরা হয়। এই বেতনক্রমের সময়ে সময়ে বদলও ঘটে পারে।

এই পদে আবেদন জানানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন ও পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সরকারি ওয়েবসাইটটিতে নজর রাখতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু সংযোজন বা পরিবর্তনও ঘটতে পারে আবেদনের সময় অনুসারে। এই পদের জন্য সমস্ত আবেদন প্রক্রিয়াটিই অনলাইন মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

তাই, যদি দায়িত্বশীল পদটিতে আসীন হয়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আপনার থাকে, অন্য সমস্ত শিক্ষাগত ও পেশাভিত্তিক যোগ্যতার পাশাপাশি, তাহলে এই পদে অচিরেই আবেদন জানাতে পারেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy