দ্বাদশ শ্রেণির পর অনেকেই কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করলেও, পিছিয়ে আসেন কম্পিউটারে পারদর্শী না হওয়ার কারণে। একজন শিক্ষার্থীর কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হবে, পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় এই বিষয়, এই প্রতিবেদনে সেই সব বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
যোগ্যতা
- দ্বাদশ শ্রেণিতে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিত নিয়ে ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়।
- ভারত, নেপাল এবং ভুটানের নাগরিক হওয়া প্রয়োজন।
- শিক্ষার্থীদের বয়স ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। এসটি, এসসি, ওবিসি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সের ছাড় দেওয়া থাকে।
শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় যে দক্ষতাগুলি থাকা প্রয়োজন:
- বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা (অ্যানালিটিক স্কিল)
- পর্যালোচনামূলক চিন্তাভাবনা (ক্রিটিক্যাল থিংকিং)
- প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত দক্ষতা
- ওয়েব ডিজাইনের প্রাথমিক জ্ঞান
- মেশিন লার্নিংয়ের বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান
- অ্যালগরিদমের জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা গঠন এবং দক্ষতা (সলিড ডেটা স্ট্রাকচার এবংএক্সপার্টাইজ ফর অ্যালগরিদম)
পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়:
- আইআইইএসটি শিবপুর (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউড অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলোজি)
- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
- এইচআইটি কলকাতা (হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনলোজি)
- টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, কলকাতা
- দি ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া, কলকাতা
- হলদিয়া ইনস্টিটিউড অফ টেকনোলজি (এইচআইটি) হলদিয়া
- টেকনো মেন, সল্টলেক
- কেজিইসি নদিয়া (কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ)
- এনআইটি গভর্নমেন্ট (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনলোজি)
এই প্রতিষ্ঠানগুলি ছাড়াও আরও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা সিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
প্রবেশিকা পরীক্ষা
পশ্চিমবঙ্গের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে শিক্ষার্থীদের ওয়েস্ট বেঙ্গল জেইই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়া জাতীয় স্তরের ক্ষেত্রে জেইই মেন প্রবেশিকা পরীক্ষা-সহ আরও অনেক প্রবেশিকা পরীক্ষা রয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা অফলাইনে আয়োজিত হয়।গণিত, রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এমসিকিউ পদ্ধতিতে মোট ২০০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকে। ৪০টি প্রশ্ন থাকে রসায়ন বিষয়ে, ৪০টি পদার্থবিজ্ঞান এবং ৭৫টি প্রশ্ন থাকে গণিত বিষয়ের উপর। সময়সীমা ধার্যথাকে ৪ ঘন্টা। এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেধা তালিকার ভিত্তিতে প্রার্থীদের কাউন্সেলিং এর জন্য ডাকা হয়। কাউন্সেলিং এর পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।
সিএসসি কোর্সে মূলত যে বিষয়গুলি রয়েছে:
- কম্পিউটার আর্কিটেকচার এবং অর্গানাইজেশন
- ক্লাউড কম্পিউটিং
- ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
- অপারেটিং সিস্টেম
- কম্পাইলার ডিজাইন
- কম্পিউটার নেটওয়ার্কস
- অ্যালগরিদম ডিজাইন ও বিশ্লেষণ
- ডেটা স্ট্রাকচার এবং অ্যালগরিদম
- সফটওয়্যার টেস্টিং
কম্পিউটার সায়েন্স বিটেক ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছরের হয়। আটটি সেমিস্টারে ভাগ করা থাকে। উপরের এই বিষয়গুলি ছাড়াও আরও অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে সিএসসি কোর্সে।
পাশ করার পর চাকরির সুযোগ:
- সিস্টেম ডেটাবেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর
- কম্পিউটার প্রোগ্রামার
- ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট স্পেশালিস্ট
- ডেটা ওয়্যারহাউস অ্যানালিস্ট
- সিস্টেম ডিজাইনার
- সফটওয়্যার ডেভেলপার
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- কম্পিউটার অপারেটর
এক জন শিক্ষার্থী কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর উপরে উল্লিখিত চাকরির ক্ষেত্রগুলির মধ্যে কোনও একটি ক্ষেত্রকে বেছে নিতে পারেন। এবং উপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থায় নিযুক্ত হতেপারেন।