প্রতীকী চিত্র।
রাত পোহালেই রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। তীব্র গরম এবং লোকসভা ভোটের আবহেই রাজ্য জুড়ে রবিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশন (ডব্লিউবিজেইই)-র আয়োজন করা হবে। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে। অর্থাৎ, হাতে আর ২৮ ঘণ্টাও নেই। রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, আর্কিটেকচার এবং ফার্মাসি নিয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য শেষ মুহূর্তে ঠিক কী কী বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে, সেই নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ—
১) প্রথমেই মনে রাখতে হবে, জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সাফল্য নিয়ে আসে। এই পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ‘পজ়িটিভিটি’ থাকলে কোনও বাধার সম্মুখীন হলেও সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে জয়লাভ সম্ভব। সমস্ত ক্ষেত্রে পেশাদারেরা কিন্তু এই আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সঙ্গী করেই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছন। তাই পরীক্ষার্থীদের সব সময় এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
২) পরীক্ষাকক্ষে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে প্রথমেই মনোযোগ সহকারে প্রশ্নপত্রটি ভাল ভাবে দেখে নিতে হবে। যাতে কোনও ভুল না হয়।
৩) পরীক্ষাকক্ষে ১০০টি-র মধ্যে ১০০টি প্রশ্নেরই উত্তর করব, এই মনোভাব না রেখে, যে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পরীক্ষার্থী আত্মবিশ্বাসী, সেগুলির উত্তর আগেভাগে লিখে ফেলতে হবে। তার পর বাকি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। এর ফলে সময়ের সদ্ব্যবহার করা যেমন সম্ভব হবে, তেমনই অযথা সময় নষ্টও হবে না।
৪) পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যে হেতু সমস্ত উত্তর লিখতে হবে, তাই সে ভাবে আগেই ভেবে নিতে হবে, কতখানি সময়ের মধ্যে কতগুলি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। যাতে পরীক্ষাকক্ষে তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন না পড়ে।
৫) যে হেতু রবিবার অ্যাডমিট কার্ড, আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া প্রার্থীর ছবি এবং সচিত্র পরিচয়পত্র থাকলে তবেই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি মিলবে, তাই সকালবেলা শেষ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা না করে পরীক্ষার্থীদের আগের দিনই সে সমস্ত জিনিস নিজেদের ব্যাগে গুছিয়ে নিতে হবে। এর ফলে পরীক্ষার দিন অনেকটাই চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
৬) অভিভাবকের কাছে অনুরোধ, তাঁরা যদি আগের দিনই নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রটি দেখে আসেন বা পরীক্ষার দিন কোন রাস্তা দিয়ে গেলে স্বল্প সময়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো সম্ভব হবে, সেই পরিকল্পনা করে রাখেন, তা হলে ওই দিন অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন তাঁরাও।
৭) রবিবার পরীক্ষার্থীদেরও সকাল ৯টা ১৫ থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যেতে হবে। একটু আগে পৌঁছলে তাঁরাও পরীক্ষাকেন্দ্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারবেন।
৮) এই পরীক্ষাটি যে হেতু উচ্চশিক্ষা লাভের প্রথম ধাপ, তাই পরীক্ষার্থীদের তরফ থেকেও দায়িত্বপূর্ণ এবং পেশাদারি মনোভাব প্রত্যাশা করা হবে। আশা করা হবে, পরীক্ষাকেন্দ্রে তাঁরা কোনও অসৎ উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করবেন না।
৯) সবশেষে বলতে চাই, এই তীব্র গরমে নিজেদের সুস্থ রাখতে হবে। হালকা খাবারদাবার, পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে হবে। সারা বছর ধরে যে হেতু পরীক্ষার প্রস্তুতি চলেছে, তাই শেষ মুহূর্তে অকারণ দুশ্চিন্তা করে শরীর খারাপ করলে চলবে না। বরং মন শান্ত রেখে পড়া জিনিসগুলিই আরও এক বার ঝালিয়ে নিতে হবে।
তাপপ্রবাহের প্রেক্ষিতে বোর্ডের তরফে কী কী বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?
১) এ বার পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে যতটা সম্ভব তাঁদের বাড়ির কাছাকাছি পরীক্ষাকেন্দ্র দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
২) বোর্ডের তরফে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের জন্য জল এবং ওআরএস-এর ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২) পরীক্ষার্থীরাও কোনও ট্রান্সপারেন্ট বা স্বচ্ছ জলের বোতল নিয়ে যেতে পারবেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও বাধা দেওয়া হবে না।
৩) পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আর্জি জানানো হয়েছে ডব্লিউবিএসইডিসিএল এবং সিইএসসি-র কাছে। তাঁরাও সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
৪) এ ছাড়া, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেনারেটারের ব্যবস্থা করার জন্য। এ বারের পরীক্ষায় পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে জেনারেটার থাকা বাধ্যতামূলক।
পরীক্ষার জন্য পরিবহণের বোর্ডের তরফে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?
বোর্ডের তরফে রাজ্যের পরিবহণ দফতরের কাছে সহযোগিতার আর্জি জানানো হয়েছে। দফতরের তরফেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিবহণের ব্যবস্থা করা হবে রবিবার। যাতে পরীক্ষার্থীদের কোনও দুর্ভোগ পোহাতে না হয়।
কলকাতা মেট্রো রেলের তরফেও রবিবার দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু করা হবে। পাশাপাশি, সারা দিনে উত্তর থেকে দক্ষিণে ‘ব্লু লাইন’-এ মোট ১৪০টি মেট্রো চলবে, যেখানে অন্য দিন ১৩০টি মেট্রো চলে।
পরীক্ষার জন্য নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা করা হয়েছে?
পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াও হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া রোমিং অবজ়ারভার রেডিয়ো ফ্রিকুয়েন্সি ডিটেক্টর (আরএফডি) নিয়ে ৯০ জন বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন। আরএফডি-র মাধ্যমে কেন্দ্রগুলিতে কোনও মোবাইল বা বৈদ্যুতিন যন্ত্র থাকলে তৎক্ষণাৎ জানা যাবে। পাশাপাশি, এ বছর সেন্টার ইনচার্জ ছাড়াও কিছু কেন্দ্রে অতিরিক্ত সেন্টার ইনচার্জও নিযুক্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy