চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক প্রায় শেষের দিকে। সোমবার বায়োলজি বা জীববিদ্যা-র পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিও প্রায় সাড়া। শেষ মুহূর্তে কোন কোন দিকে নজর দিতে হবে, তা নিয়েই রইল পরামর্শ—
প্রশ্নের ধরন: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার বায়োলজি-র প্রশ্নপত্রে ১৪টি এমসিকিউ এবং ৪টি এসএকিউ থাকে। প্রতি প্রশ্নে ১ নম্বর করে এমসিকিউতে থাকে মোট ১৪ নম্বর এবং এসএকিউতে থাকে মোট ৪ নম্বর। এ ছাড়াও পরীক্ষার্থীদের ২ নম্বরের ৫টি বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন, ৩ নম্বরের ৯টি ছোট প্রশ্ন এবং ৫ নম্বরের ৩টি বড় প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এর মধ্যে সমস্ত এসএকিউ-এর উত্তর দিতে হবে একটি বাক্যে। বাকি প্রশ্নগুলির উত্তরও হতে হবে ‘টু দ্য পয়েন্ট’।
সময় বিভাজন: পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েই প্রথম ১৫ মিনিট তা খুব মন দিয়ে পড়ে নিতে হবে। নির্বাচন করে নিতে হবে কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দেবে। এ ক্ষেত্রে ‘পার্ট’ প্রশ্ন যেন চোখ এড়িয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরীক্ষা শুরুর প্রথম ২৫ মিনিটের মধ্যে এমসিকিউ এবং এসএকিউ-এর উত্তর শেষ করতে পারলে ভাল হয়। পরবর্তী ৩০ মিনিটের মধ্যে ২ নম্বরের ৫টি প্রশ্ন, ৬৫ মিনিটের মধ্যে ৩ নম্বরের ৯টি প্রশ্ন এবং ৪৫ মিনিটের মধ্যে ৩টি ৫ নম্বরের প্রশ্ন শেষ করতে পারলে ভাল। এর পর তা হলে হাতে থাকবে ১৫ মিনিট। এই সময় মাথা ঠান্ডা রেখে রিভিশন করে নিতে হবে।
গুরুত্ব যেখানে: ২০২৪ সালের পরীক্ষায় যেই প্রশ্নগুলি আসেনি বা যে অধ্যায়গুলি থেকে কোনও প্রশ্ন আসেনি, সেই প্রশ্ন বা অধ্যায়গুলি ভাল করে পড়ে যেতে হবে। এ ছাড়া, এ বারের পরীক্ষায় ৫ নম্বরের বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন বা মানুষের যৌন জনন অধ্যায় থেকে ১টি প্রশ্ন আসতে পারে। প্রশ্ন আসতে পারে বংশগতি/অভিব্যক্তি এবং ইকোলজি ইউনিট থেকেও।
আঁকার প্রশ্ন আলাদা ভাবে না এলেও সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন বা মানুষের জনন থেকে প্রশ্ন এলে তার উত্তরে প্রাসঙ্গিক চিত্র আঁকতে হবে পড়ুয়াদের। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিনিষেক পদ্ধতি বর্ণনা, মানুষের নিষেক পদ্ধতির বর্ণনা, ইউজেনেসিস, স্পার্মাটোজেনেসিস, জৈবপ্রযুক্তি বিদ্যার অধ্যায় থেকে প্রশ্ন এলে পরীক্ষার্থীদের ছবি এঁকে বোঝাতে হবে। উপযুক্ত চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে ধাপে ধাপে শুধু ছবি এঁকেও উত্তর দেওয়া যায় , আলাদা ভাবে লেখার প্রয়োজন পড়ে না।
যে ভাবে পড়বে: পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন টেস্ট পেপার ও বিগত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নের সমাধান করে যেতে পারলে ভাল। সর্বোপরি, সারা বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকা যে ভাবে পড়িয়েছেন,যে যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন, তা মাথায় রেখেই পড়াশোনা করতে হবে।
যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে:
১) বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পড়াশোনা করলেই এই বিষয়ে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পাওয়া যেতে পারে।
২) পাঠ্যবই ভাল করে পড়া থাকলেই এমসিকিউ বা এসএকিউ-এর উত্তর দিতে পারবে পড়ুয়ারা।
৩) ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতে যে প্রশ্নগুলি এসে গিয়েছে, সেগুলিকে একেবারে বাদ দিলে চলবে না। ছোট/বড় প্রশ্ন হিসেবে আবার সেই প্রশ্নগুলি আসতেই পারে।
৪) যদি কোনও শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপের সম্পূর্ণ নাম লিখতে বলা হয়, তা হলে তা ইংরেজিতে লিখলেই ভাল।
৫) বিজ্ঞানসম্মত নাম অতি অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে হবে এবং নীচে দাগ দিতে হবে।
৬) পরীক্ষার খাতা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অযথা কাটাকুটি না করাই ভাল।
৭) উত্তর ক্রমানুসারে লিখতে হবে।
৮) এই বছরের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল— সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বি-নিষেক, রজঃচক্র, গ্রিফিতের পরীক্ষা, ট্রান্সলেশন, ট্রান্সক্রিপশন, উদ্ভিদ পর্যায়ক্রম, দূষণ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং ইত্যাদি।
৯) প্রতি বিভাগের প্রতি প্রশ্নের উত্তরের শেষে ‘এন্ডিং লাইন’ দিলে ভাল হয়।
(লেখিকা যোধপুর পার্ক গার্লস হাই স্কুলের জীববিদ্যা তথা সহ-প্রধানশিক্ষিকা)