মন কি বাত-এ মোদী।
বোধোদয়টা অবশেষে হল। আলোচনাতেই সুরাহা রয়েছে কাশ্মীরের, ছররায় বা বুলেটে নয়। প্রধানমন্ত্রীর ‘মনের কথা’য় আবার তা উচ্চারিত হল। যদিও এ উচ্চারণ কাঙ্খিত ছিল অনেক আগেই। তবু, বিলম্বে হলেও বোধোদয় যে হয়েছে, আশালোকের বিচ্ছুরণ তাতেই।
আকাঙ্খায়, ইচ্ছায়, ধারণায়, চেতনায় এ বার আলাপচারিতার প্রয়োজনীয়তাটা যে বার বার উঠে আসছে, এটাই সবচেয়ে ইতিবাচক গত ৫১ দিনে। কাশ্মীর নিয়ে যা কিছু সমস্যা, তা আমাদের নতুন সমস্যা নয়। বছরের পর বছর, দশকের পর দশক এই পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝে আসছি আমরা। এ সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা গিয়েছে, বিভিন্ন কৌশলের ঘনঘটা এসেছে-গিয়েছে। কিন্তু বিকল্প পথ হিসেবে আলোচনার অস্তিত্বটাকে পত্রপাঠ অস্বীকার করার রাস্তায় আমরা কখনও হাঁটিনি। বরং কৌশল ছেড়ে দু’পক্ষই বার বার সে পথেই ফিরেছি। সম্প্রতি এই বিকল্প পথের অস্তিত্বকেই যেন অস্বীকার করতে চাইছিলাম। কিন্তু যা কিছু অমোঘ, অস্বীকার করতে চাইলেই যে তাকে অস্বীকার করা যান না, প্রধানমন্ত্রীর বেতার-বার্তায় শেষ পর্যন্ত সে উচ্চারণটা স্পষ্ট ভাবে শোনা গেল।
গত কয়েক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর অলিন্দ থেকে একটা সাদা পায়রা পায়ে চিরকুট বেঁধে নিয়ে যেন উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল উপত্যকার দিকে। ছররায় নয়, বুলেটে নয়, উপত্যকার আগুন নিভবে একমাত্র সহানুভূতিতে। এই উপলব্ধির উচ্চারণ শোনা যাচ্ছিল। কথার কথা না মনের কথা? হয়তো কিছুটা ধন্দ ছিল গোড়ায়। কিন্তু তার পরে বার বার সেই উপলব্ধিরই প্রতিধ্বনি। বার বার সেই বার্তারই অনুরণন। উপত্যকায় গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সংযমী বার্তা, জম্মু-কাশ্মীরের বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতায় সমবেদনার আদানপ্রদান, মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকেও উদার দৃষ্টিভঙ্গির বিনিময়— অন্ধকার দৃশ্যপটে একটা আলোকবিন্দু যেন বেড়ে উঠছিল ধীরে। মনে হচ্ছিল সবটা বোধ হয় কথার কথা নয়। অবশেষে ‘আকাশবাণী’ও বলল, এ প্রধানমন্ত্রীর ‘মনের কথা’ই।
প্রধানমন্ত্রী ‘একতা’ আর ‘মমতা’র মন্ত্র নিয়ে এগোনোর বার্তা দিয়েছেন। উপত্যকার যন্ত্রণার শরিক হতে চেয়েছেন। ভারতের ভারাক্রান্ত হৃদয় থেকে যেন পাথর নেমেছে আজ এক। এই পদক্ষেপ সর্বাংশে স্বাগত। উচ্চারণে যে সদিচ্ছা দেখা গেল, কার্যক্ষেত্রেও তারই রেশ দেখার অপেক্ষায় রইলাম। অপেক্ষায় রইল ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy