Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভবিষ্যত্ প্রজন্ম প্রশ্ন করলে জবাব থাকবে তো, ডোনাল্ড ট্রাম্প?

ভুবনায়নের পথে হাঁটতে শুরু করছিলাম আমরা বেশ কয়েকটা বছর ধরে। সীমান্তের কাঁটাতার তার গাম্ভীর্য হারায়নি ঠিকই কিন্তু মানচিত্রের রেখাগুলোকে পেরিয়ে পরস্পরের হাত আরও শক্ত করে ধরতে শুরু করছিলাম আমরা।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

অনিবার্য ভবিষ্যতের অশনি সঙ্কেতকে অবজ্ঞা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি, সদম্ভেই। বস্তুত মহাপ্রলয়ের যাবতীয় আগাম ইঙ্গিতের থেকে চোখ সরিয়ে নিজের ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে ভাবলেন, বৃহত্তর বিপদের থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাঁচানো গেল। অন্ধ হলেন তিনি, আর্ষবাক্যটিকে ভুলেই, অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না।

ভুবনায়নের পথে হাঁটতে শুরু করছিলাম আমরা বেশ কয়েকটা বছর ধরে। সীমান্তের কাঁটাতার তার গাম্ভীর্য হারায়নি ঠিকই কিন্তু মানচিত্রের রেখাগুলোকে পেরিয়ে পরস্পরের হাত আরও শক্ত করে ধরতে শুরু করছিলাম আমরা। পারস্পরিক আদানে প্রদানে নিজেদের স্বার্থেই আমরা আরও বেশি আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছিলাম। এই গ্রহের সম্মিলিত স্বার্থই ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আওতায় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশকে এক মঞ্চে নিয়ে আসে। ইতির দিকে সম্মিলিত ছিল সেই যাত্রা।

দু’বছরের মাথায় সেই যাত্রার সুতো ছিঁড়ে দিলেন ট্রাম্প। আচমকা, এ কথা বলা যাবে না। নির্বাচনী বক্তৃতায় এই সুতো ছিন্ন করার ঘোষণাই করেছিলেন তিনি। যেমন ঘোষণা ছিল ভুবনায়নের উল্টো পথে হেঁটে নিজের দেশের নানা খোলা জানলা বন্ধের। বড় অংশের আমেরিকা এটা জেনেই তাঁকে জিতিয়ে এনেছে। ট্রাম্প তো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করলেন। সুতো ছেঁড়ার অনিবার্য কাজটা তো করলেন আমেরিকার বৃহদংশের মানুষ।

অতএব, প্রশ্নটা অনিবার্য ভাবেই আসবে, কোনও এক ডোনাল্ড ট্রাম্প নন, আসলে দরজা-জানলা বন্ধের কাজটা করেছেন মানুষই? আমেরিকার বৃহদংশ? ভবিষ্যত্ যদি অনিবার্য প্রলয়ের পথে এগোয়, এবং আমাদের দর্শক হিসাবেই সাক্ষী থাকতে হয়, সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা না যায়, আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারব তো?

ভবিষ্যত্ প্রজন্মের কাছে জবাবদিহির জন্য প্রস্তুত তো দোর্দণ্ডপ্রতাপ আমেরিকা?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE