নিজের ঘর যদি কাচের হয়, তাহলে নাকি অন্যের ঘরের জালনার কাচ লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে নেই। বহু পুরনো প্রবচন। তবু ভুলে যান অনেকে।
নওয়াজ শরিফরাও ভুলে গিয়েছেন সম্ভবত। নরেন্দ্র মোদী পাল্টা ঢিলটা ছুড়লেন তাই। বলা ভাল, নওয়াজ শরিফরাই সে সুযোগ করে দিলেন। ভারতের সত্তর তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাচীর থেকে নরেন্দ্র মোদী নওয়াজদের যে প্রত্যাঘাতটা করলেন, তা সামলাতে এ বার বিদ্রোহীদের সঙ্গে তড়িঘড়ি আলোচনায় উদ্যোগী হতে হচ্ছে ইসলামাবাদকে।
স্বাধীনতা দিবসে এই প্রত্যাঘাতটা যে হবে, তা বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তান সংক্রান্ত যে সব মন্তব্য করেছিলেন, পাকিস্তানের অন্দরে গুমরোতে থাকা স্বাধীনতার আকাঙ্খাগুলো হঠাৎই জল পেয়ে গিয়েছে তাতে। কখনও নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করতে শোনা যাচ্ছে নির্বাসিত বালোচ নেতাকে। কখনও ভারতের সহমর্মিতার প্রতি জয়ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে, গিলগিট-বাল্টিস্তানে। স্বাধীনতার দাবিকে দীর্ঘ দিন ধরে যে ভাবে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, ইসলামাবাদের বেপরোয়া দমননীতি সেনার বুটের তলায় যে ভাবে মানবাধিকারকে পিষে দিচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এ বার সে সবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছে, সুর চড়াতে শুরু করেছে। নিপীড়িত জনগোষ্ঠী বুকে বল পেয়েছে। এক শক্তিশালী সহমর্মীকে পাশে পাওয়ার অনুভূতি চারিয়ে গিয়েছে।
চেষ্টা ছিল ভারতের অন্দরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার। কিন্তু নিজেদের রাজত্বেই যে আগ্নেয়গিরি সুপ্ত রয়েছে অসংখ্য, তা ভুলে গিয়েছিল ইসলামাবাদ। প্রত্যাঘাতের কম্পনে লাভা উদগীরণ শুরু হতেই টনক নড়েছে। পুরনো ক্ষত থেকে ফের শুরু হওয়া রক্তপাত থামাতে এখন মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে ইসলামাবাদের কর্তাদের।
ঢিলটা না ছুড়লে নওয়াজ শরিফদের এই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হত না হয়তো। শিক্ষা কি নেবে ইসলামাবাদ? উত্তর দেবে সময়ই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy