Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: সমাবর্তনে ধর্ম কেন

এই ঘটনার দেড় শতাধিক বৎসর পরেও দেখছি, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রী ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে— বেদগান, স্বামী আত্মপ্রিয়ানন্দের দীক্ষান্ত ভাষণের মতো ধর্মীয় আচার!

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০০:৫৫
Share: Save:

১৮১১ খ্রিস্টাব্দে ছাত্র পি বি শেলি অক্সফোর্ডে খ্রিস্টধর্মীয় প্রচার-পীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে একটি প্রচারপুস্তিকা প্রকাশ করেন— ‘‘দ্য নেসেসিটি অব এথিজ়ম’’ (নাস্তিকতার প্রয়োজনীয়তা)! সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেলি ও তাঁর প্রচার-সহযোগী টমাস হগকে বিতাড়িত করেন, প্রচারপুস্তিকা নষ্ট করে দেন।

ধর্মনিরপেক্ষ জগতের সৌভাগ্য, শেলির মরণোত্তর কালে, শতাব্দীর শেষ দিকে, অক্সফোর্ড তাদের ছাত্র-কবির সশ্রদ্ধ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে, তাঁর মূর্তি স্থাপন করে এবং ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ডের গ্রন্থাগার শেলির পুত্রবধূর কাছ থেকে প্রচারপুস্তিকার একটি কপিও সংগ্রহ করে, আর উদারতার সঙ্গে বিলিও করে।

এই ঘটনার দেড় শতাধিক বৎসর পরেও দেখছি, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রী ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে— বেদগান, স্বামী আত্মপ্রিয়ানন্দের দীক্ষান্ত ভাষণের মতো ধর্মীয় আচার! যা রাজনীতির মতোই উদার জ্ঞানচর্চার পথের কাঁটা! বিভিন্ন ধর্মের, এমনকি নাস্তিক ছাত্রছাত্রীকেও কেন বেদগান শোনানো হবে? এ বার তো প্রতিবেশী রাষ্ট্রপ্রধান বেগম হাসিনা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মাননীয়া অতিথি হিসেবে!

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ বা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের যে কোনও আকাঙ্ক্ষাই কি চিরকালের ঐতিহ্য হিসেবে চলবে— একটি আধুনিক কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও?

নির্মল সাহা কলকাতা-২৯

বাস্তবোচিত

দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত গরমের জন্য নতুন করে ছুটি ঘোষণা করতে হয়। বর্তমানে পরিবর্তিত গ্রীষ্ম বর্ষার কথা বিবেচনা করে নতুন করে বাস্তবোচিত এই গ্রীষ্মকালীন ছুটি কি ঘোষণা করা যায় না?

আশিস সরকার ই-মেল মারফত

নার্সিং

‘নার্স ও আয়া’ (২০-৬) চিঠিতে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। বি এসসি নার্সিংয়ের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স (JENPAUH) দিতে হলেও ৯০ শতাংশ নম্বর বাধ্যতামূলক নয়। আর জিএনএম-এর জন্য শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে নেওয়া হয়। এ ছাড়া এএনএম-এ ভর্তি নেওয়া হয় কেবলমাত্র মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে। এগুলো সব নার্সিং কোর্স।

আনন্দ মোহন বিশ্বাস সিউড়ি, বীরভূম

রক্তবস্তি

‘রক্তাল্পতা কমাতে দাওয়াই ছাগরক্ত!’ (১৫-৬) শীর্ষক খবরের প্রতিবাদে এই চিঠি। খবরটির লেখার ভঙ্গির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই, যেখানে শুধু সমালোচনা নয়, বিদ্রুপ করা হয়েছে এমন একটি চিকিৎসাপদ্ধতিকে (রক্তবস্তি), যা বহু হাজার বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত এবং সফল ভাবে ব্যবহৃত। তাই এই পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। খবরে যেমন লেখা হয়েছে, এই পদ্ধতির উল্লেখ রয়েছে সেই প্রাচীন শাস্ত্র বা গ্রন্থগুলিতে, যার উপর আয়ুর্বেদ চিকিৎসাপদ্ধতি দাঁড়িয়ে আছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় শুধু উল্লিখিত হাসপাতালটিতে নয়, ভারতের আরও বহু হাসপাতালে, ভারত সরকারের ‘আয়ুষ’ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে। মনে রাখতে হবে, ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজ়েশন (হু) আয়ুর্বেদকে প্রাচীনতম চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ডা. বিলাস চন্দ্র সরকার এসিএমওএইচ অফিস দুর্গাপুর, আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসার

ডা. সুজাতা গুহ ফেলো, স্কুল অব কগনিটিভ সায়েন্স, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিবেদকের উত্তর:

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাপদ্ধতি ‘রক্তবস্তি’ নিয়ে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের দেওয়া চিঠির উত্তরে জানাই, গত ১৫ জুন প্রকাশিত খবরে ‘রক্তবস্তি’ প্রক্রিয়া নিয়ে বিদ্রুপ ও সমালোচনা করা হয়েছে বলে তাঁরা যে অভিযোগ করেছেন তা যুক্তিযুক্ত নয়। এটি শাস্ত্রে বর্ণিত পদ্ধতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে ভারতের একাধিক জায়গায় এটি অনুসৃত হচ্ছে সেটি আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবরে রয়েছে। তবে যে কোনও ‘অন্য রকম’ চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন ধারার চিকিৎসাপদ্ধতির বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন, সেটা প্রকাশ করাটা সংবাদপত্রের ধর্ম। প্রত্যেকের নিজস্ব মত থাকতেই পারে। আলোচনা-সমালোচনা সব সময় একটি বিষয় এবং লেখাকে ঋদ্ধ করে। লেখায় কোথাও কোনও পদ্ধতিকে বিদ্রুপ করা হয়নি। একটি পদ্ধতি যখন অনুসৃত হচ্ছে, তখন তা কতটা নিয়ম মেনে, হাইজিন মেনে হচ্ছে এবং তাতে রোগীর স্বাস্থ্যের হানির কোনও আশঙ্কা থাকছে কি না, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে রিপোর্টে। তা ছাড়া, যে কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি মানুষের শরীরে প্রয়োগের আগে মেডিক্যাল কাউন্সিলের অনুমোদন প্রয়োজন। সেটা এ ক্ষেত্রে হয়েছে না কি হয়নি এবং না হয়ে থাকলে তার কারণ কী, সেটাও মানুষকে জানানো প্রয়োজন। শেষে জানাই, লেখাটিতে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের বক্তব্যও বিস্তারে দেওয়া হয়েছে।

নোটবন্দি

যত দিন যাচ্ছে, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ছে। সম্প্রতি তথ্য জানার অধিকার আইনের একটি সূত্র ধরে জানা গেল, নোটবন্দি ঘোষণার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ পরিচালিত কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে ৭৪৫ কোটিরও বেশি টাকা জমা পড়েছে! শুধু তা-ই নয়, বিজেপির এক ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাডাডিয়া পরিচালিত কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে ৬৫০ কোটিরও বেশি বাতিল টাকা জমা পড়েছে। নোটবন্দি নিয়ে মোদী চোখের জলে ভেসে আবেগময় ভাষণ দিয়ে জনগণকে কষ্ট স্বীকার করতে বলেছিলেন ভবিষ্যৎ সুদিনের জন্য। অনেকে বলেছিলেন, নোটবন্দি নাকি দেশকে এক নতুন দিশা দেখাবে। ব্যতিক্রম ছিলেন এক এবং অদ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জোর গলায় প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, নোটবন্দি হল বিজেপির কালো টাকা সাদা করার এক অভিনব পরিকল্পনা! নোটবন্দির আগে বিজেপির যে সম্পদ ছিল, নোটবন্দির পরে তা বহু গুণ বেড়ে যায়। মমতা ঠিকই বলেছিলেন, নোটবন্দির ফলে একমাত্র লাভবান দল হল বিজেপি। এটি বিজেপি সরকারের এক জঘন্য আর্থিক কেলেঙ্কারি। মোদী বলেছিলেন, নোটবন্দি নাকি সন্ত্রাসবাদীদের কোমর ভেঙে দিয়েছে! অথচ কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে বিজেপি কাশ্মীরের জোট সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিল!

বিজন মজুমদার ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

ভাড়ায় বৈষম্য

সারা রাজ্যে পেট্রল, ডিজ়েল, মোবিল, যন্ত্রাংশের দাম, রাস্তাঘাটের অবস্থা একই হওয়া সত্ত্বেও হাওড়া বা দুই ২৪ পরগনার তুলনায় দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বাসভাড়া অত্যধিক কেন, তা রাজ্য পরিবহণ দফতরই বলতে পারবে। এই পার্থক্য কোথাও কোথাও আবার দ্বিগুণ বা তারও বেশি। সম্প্রতি বাসভাড়া সারা রাজ্যেই বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে বাসে ৬০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করলে হাওড়া বা দুই ২৪ পরগনার ভাড়া যেখানে ২১ টাকা, সেখানে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের ভাড়া হল ৪৬ টাকা!

যে জেলাগুলিতে ভাড়া বেশি, সেখানে আবার সন্ধ্যার পর অধিকাংশ রুটে বাস পাওয়া যায় না। খড়্গপুর–মেদিনীপুরের মতো মাত্র ১২ কিমি দূরত্বে অবস্থিত দু’টি গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে সন্ধ্যার পর বাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বরিষ্ঠ নাগরিক, প্রতিবন্ধী, মহিলাদের জন্য কার্যত কোনও সুবিধা কোনও বাসের মধ্যেই পাওয়া যায় না।

গৌরীশঙ্কর দাস সাঁজোয়াল, খড়্গপুর

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE