‘দাবা অলিম্পিয়াডে প্রথম জোড়া সোনা, ইতিহাস ভারতের’ (২৩-৯) নিঃসন্দেহে ভারতীয় খেলার জগতে এক ঐতিহাসিক মূহূর্ত। বুদাপেস্টের সদ্যসমাপ্ত দাবা অলিম্পিয়াডে সোনা জিতে এই প্রথম ভারতের পুরুষ ও মহিলা দল বিশ্ব দাবায় তাদের ক্রমবর্ধমান আধিপত্যের ইঙ্গিত দিয়ে রাখল। এর আগে প্যারিসের প্যারালিম্পিক্সেও সাতটা সোনা-সহ ২৯টি পদক জিতে প্রথম কুড়ির মধ্যে (১৮তম) স্থান পেয়েছে। তবুও এ দেশের অধিকাংশ ক্রীড়াপ্রেমীর মনপ্রাণ জুড়ে রয়েছে ক্রিকেট। ক্রিকেটের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার জেরে এখনও হকি, ফুটবল, শুটিং বা দাবার মতো অন্যান্য খেলা সে ভাবে কল্কে পায়নি। বলা বাহুল্য, প্যারালিম্পিক্সে ভারত ভাল ফল করলেও, গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্সে তাদের ফল মনমতো হয়নি। একশো চল্লিশ কোটি লোকের দেশে একটাও সোনা আসেনি। এর অন্যতম কারণ এ দেশে অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রে পরিকাঠামো ভাল নয়। সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতি, দলবাজি ও অন্যান্য সমস্যা। ফলে কোনও ছেলে বা মেয়ের সাঁতার বা দৌড়ের মতো খেলায় প্রতিভা থাকলেও তাকে ঠিকমতো গড়ে তোলার ব্যবস্থা না থাকার ফলে অচিরেই সে তার প্রতিভা হারায়। প্রসঙ্গত, আগামী ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক্সে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তা কি এক দিকে খেলাটির জনপ্রিয়তা ও অন্য দিকে ব্যবসার সুযোগের ফলে? তা যদি না হয়, তবে দাবার মতো খেলাকেও এই ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তাপস সাহা, শেওড়াফুলি, হুগলি
ফিরুক ট্রাম
সম্প্রতি রাজ্য সরকার ঐতিহ্যবাহী ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, ট্রামের জন্য নাকি যানজট হয়, অফিসের দেরি হয়, আরও অনেক কিছু। যে সব রাস্তায় ট্রাম নেই, সেখানে কি যানজট হয় না? রাস্তায় যানজট ট্রামের জন্য হয় না, অনেক ক্ষেত্রেই হয় অবৈধ পার্কিং-এর কারণে। এ ছাড়াও রয়েছে বাসের রেষারেষি, ওভারটেকিং-এর আগ্রাসী প্রবণতা, প্রাইভেট চারচাকার দাপট ইত্যাদি। অন্য দিকে, ট্রামের ক্ষেত্রে পেট্রল, ডিজ়েল বা কোনও গ্যাস লাগে না। এক দিকে যেমন তা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে, তেমনই জীবাশ্ম জ্বালানি শক্তির সীমিত ভান্ডার সংরক্ষণেও সহায়ক। পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের অস্তিত্বই যে ক্রমশ সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে তা আমরা জানি। এই সময় যখন গোটা বিশ্ব পরিবেশ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত ভেবে চলেছে, সেখানে এই ট্রাম বন্ধ বা বর্জন করা নয়, তাকে আরও বেশি করে গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। তা না করে সরাসরি বন্ধ করার কথা প্রশাসন ভাবল কী করে? কলকাতার ট্রামকে শুধু ইতিহাসের পাতায় রেখে দিলে চলবে না। অবিলম্বে ট্রাম পরিষেবা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং যথাসম্ভব অধিক রুটে।
সুগত হাজরা, রামপুরহাট, বীরভূম
বোনাস-হারা
খবরে পড়লাম, পুজোর মুখে বন্ধ হয়েছে গিয়েছে হাওড়ার ভারত জুটমিল (‘হাওড়ায় বন্ধ চটকল, পুজোর মুখে কর্মহীন প্রায় ৬০০ শ্রমিক’, ২৭-৯)। তালা পড়ল হাওড়ার ল্যাডলো জুটমিলেও। ফলে কাজ গিয়েছে প্রায় সাত হাজার শ্রমিকের। প্রতি বছরই ঠিক পুজোর মুখে নানা অজুহাতে, বিশেষত শ্রমিক অসন্তোষ বা উৎপাদনে ঘাটতি দেখিয়ে মিল মালিকরা কারখানা বন্ধ করেন। চটকলের শ্রমিকরা সারা বছর ন্যূনতম বেতনে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে পরিবারের কোনও ক্রমে ভাত-কাপড়ের সংস্থান হয়। পুজোর আগে পরিবারের সদস্যরা তাকিয়ে থাকেন, বোনাসের টাকায় অন্তত একটা নতুন কাপড় হবে। কর্মচারীরাও পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু খুশির জোগান দেওয়ার আশায় থাকেন। মালিকরা সেই আশায় জল ঢেলে, ছল-চাতুরি করে, নানা অজুহাতে ঠিক পুজোর আগেই মিলে তালা লাগিয়ে শ্রমিকদের বোনাস থেকে বঞ্চিত করেন। সরকার উদ্যোগ করলে এই অমানবিক অব্যবস্থার সুরাহা হতে পারে।
স্বপন কুমার ঘোষ,মধ্য ঝোড়হাট, হাওড়া
কসরত বিনে
বদলে গিয়েছে গ্ৰামগঞ্জের রাস্তার হালচাল, এখন সর্বত্রই প্রায় কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা। ফলে এর উপর দিয়ে সহজেই ছুটে বেড়ায় টোটো অটো-সহ নানা ছোট গাড়ি। দু’-পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা দ্রুত যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এক মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই টোটো। এর কারণে অর্ধেক কিংবা এক কিলোমিটার হাঁটাতেও তৈরি হয়েছে মানুষের অনীহা। ফলে ‘ঘোড়া দেখে খোঁড়া’— বাংলার এই প্রবাদটির এখন আর শুধু কথার কথা নয়। তাড়া না থাকলেও এখন হাঁটতে আর রাজি নয় কেউ। ফলে শারীরিক কসরতের দিকটায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ভীষণ ভাবে।
এ দিকে শহরে অধিকাংশ মানুষের অবস্থা একই রকম। কারও অফিসে বসে কাজ, কারও বাড়িতে ল্যাপটপে কাজ। সব কাজ সেরে তখন আর ইচ্ছে হয় না শারীরিক কসরতের। রাত জেগে কাজের ফলে সকালে ওঠাও হয় না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাঙ্ক ফুড। অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধার ফলে বাজার-দোকান করার অভ্যাসও উঠে যাচ্ছে ক্রমশ। হাঁটাচলার অভাবে তাই শরীরে জমছে মেদ, যা আখেরে ডেকে আনছে নানা রোগ-অসুখ। তবে শুধু বড়রা নয়, ছোটদেরও অবস্থা এক। নিজেদের ঠিক রাখতে হলে শেষ পর্যন্ত শারীরিক কসরত ছাড়া গতি নেই— কথাটা তাড়াতাড়ি না বুঝলে শেষে সবারই ক্ষতি।
সনৎ ঘোষ, বাগনান, হাওড়া
পরিবেশ রক্ষা
অন্যান্য জায়গার মতো পূর্ব বর্ধমানের জেলা শহর বর্ধমানও দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে সীতাভোগ-মিহিদানার নগরী থেকে এক প্রকার ব্যানার-ফ্লেক্সের নগরীতে পরিণত হয়। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ব্যবসায়িক স্বার্থে অথবা পুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক প্রয়োজনে এই পদক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু এর ফলে যে শুধুমাত্র দৃশ্যদূষণই ঘটে তা-ই নয়, অনেক সময় তা পরিবেশকেও প্রভাবিত করে। বহু জায়গাতেই রাস্তার ধারের বা মণ্ডপের চার পাশের গাছগুলোতে পেরেক পুঁতে ব্যানার লাগানো হয়। জোরালো আলোর ব্যবস্থাও হয়। এতে গাছগুলিকে আশ্রয় করে থাকা নানা ধরনের পাখি-সহ জীববৈচিত্রের প্রচুর ক্ষতি হয়। পুজোর পরে ফ্লেক্স-বর্জ্যের স্তূপ তৈরি হয় বিভিন্ন স্থানে, সেগুলি পড়ে থাকে মাসের পর মাস। অপচনশীল দ্রব্য দিয়ে তৈরি ফ্লেক্সগুলি প্রখর তাপে গলে গিয়ে হয় বিষাক্ত গ্যাস ছড়ায়, নয়তো বর্ষায় জল জমে হয়ে ওঠে ডেঙ্গির আখড়া। পুজো আয়োজক ও প্রশাসনকে অনুরোধ, এখন থেকে জোর দেওয়া হোক ‘পরিবেশবান্ধব’ পুজোয়। গাছের গায়ে ব্যানার না টাঙিয়ে তা অন্য ভাবে চোখে পড়ার ব্যবস্থা করা হোক। পুজোর পরে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ করা হয় ফ্লেক্স-ব্যানারের বর্জ্য সরিয়ে ফেলার। নিজেদের আনন্দের খাতিরে পরিবেশ দূষণ বা জীববৈচিত্র নষ্টের অধিকার কারও নেই।
সন্দীপন সরকার, পাল্লা রোড, পূর্ব বর্ধমান
চড়া দাম
মহালয়ার আগেই প্রতি কিলো আলুর দর ছিল ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, বেগুন ১৫০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা, রসুন ৪০০ টাকা, লঙ্কা ২৫০ টাকা। পুজোর মরসুমে বাজারে দামের আঁচ নিশ্চিত ভাবেই বেড়েছে আরও। মধ্যবিত্তের তরফে প্রতিবাদ করে বলতে ইচ্ছে করে, ‘জাস্টিস ফর রান্নাঘর!’
মনোজ কুমার খাঁ,সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy