—ফাইল চিত্র।
কিছু দিন হল পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নতুন সিলেবাসের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যবইগুলি হাতে পাওয়া গিয়েছে। নব নির্বাচিত গল্প-কবিতাগুলিতে চোখ বোলাতে গিয়ে দেখা গেল সেখানে ভগিনী নিবেদিতা রচিত স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কিত দু’টি রচনা একাদশ শ্রেণির পাঠ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি রচনা মূলত স্বামী বিবেকানন্দ মা কালীকে কেমন ভাবে উপলব্ধি করতেন, সেই সম্পর্কে। সেখানে কালী ঠাকুরের রূপের সঙ্গে ব্রহ্মের সম্মিলনে কী ভাবে আধ্যাত্মবাদ আর পৌত্তলিকতাবাদ মিশে যায়, তা নিয়ে আছে মনোগ্রাহী আলোচনা। কিন্তু সেই দার্শনিক ভাবনাগুলির ভাবনির্যাসকে অন্তরে উপলব্ধি করতে গেলে চাই মনের পরিপক্বতা। ভাবার বিষয়, সবে মাধ্যমিক পাশ করে আসা সুকুমারমতি কিশোর-কিশোরীরা আদৌ মনের দিক থেকে এই ধরনের রচনার সারবস্তু গ্রহণে কতখানি সক্ষম। আরও একটি বিষয়, বহু ধর্মের ছাত্রছাত্রীর সম্মিলনে গঠিত শ্রেণিকক্ষে একটি বিশেষ ধর্মের দেবী সম্পর্কে এমন গভীর বিস্তারিত আলোচনা সমৃদ্ধ রচনা পঠনপাঠন কতখানি যুক্তিসঙ্গত, সেই বিষয়েও প্রশ্ন জাগে। এর মানে এই নয় যে, পাঠ্য অংশটি উগ্র মতের সমর্থক। কিন্তু একটি ধর্মের নানা শাস্ত্র সম্পর্কিত এমন সুগভীর আলোচনা অন্য ধর্মাবলম্বী ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিরক্তির উদ্রেক করবে না তো— এমনটাই ভাবনা অনেক শিক্ষক শিক্ষিকার, যাঁরা শ্রেণিকক্ষের বাস্তব চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সে সব বাদ দিলেও, অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে বলি, আদৌ এই ধরনের লেখা একাদশ শ্রেণিতে পাঠরতদের বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, ভেবে দেখতে অনুরোধ জানাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে।
অনির্বিত মণ্ডল, ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
স্কুলের দুর্দশা
এই রাজ্যের সরকার-পোষিত বিদ্যালয়গুলোর খুবই দুরবস্থা। এর অন্যতম উদাহরণ শ্রীরামপুর পুর অঞ্চলের বেশ কয়েকটি সরকার-পোষিত বিদ্যালয়, যেগুলি হয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে আর নাহয় ছাত্রাভাবে ধুঁকছে। এর মধ্যে কলোনি এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলোও আছে। এই সব ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রথম থেকেই সরকার-পোষিত ছিল না। সমাজের বিভিন্ন মানুষের বদান্যতায় পরাধীন ভারতবর্ষে নিরক্ষরতা দূরীকরণ এবং শিক্ষার প্রসারের জন্য এগুলি গড়ে উঠেছিল। অনেক গুণী মানুষ এই সব সাবেক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে দেশ ও দশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
অথচ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান হাল দেখলে অনুমান করা যায় যে, সরকারের সুনজরের অভাবেই আজ তাদের এমন ভগ্নদশা। সরকারের পরিকল্পিত অবহেলা ও ভ্রান্ত নীতি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে যেমন এখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে, তেমনই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকেও কোনও নজর দেওয়া হয়নি। এই সুযোগে বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলোর, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ অর্থের দিক থেকে সহজসাধ্য নয়। সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির এতই করুণ অবস্থা যে, সেখানে ছাত্রাভাবে অনেক বিভাগ উঠিয়ে দিতে হচ্ছে। কোনও কোনও বিদ্যালয়ে মাস্টারমশাই বা দিদিমণিরা যথেষ্ট ছাত্রছাত্রী না থাকায় স্টাফরুমে বসে অলসবেলা কাটিয়ে দিনের শেষে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। বেশ কিছু স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা আসছে শুধুমাত্র মিড-ডে মিলের জন্য। দিদিমণি মাস্টারমশাইরাও মিড-ডে মিলের ব্যাপারটা দেখে নিয়ে আর পড়াশোনার দিকে নজর দিচ্ছেন না। বরং দায়সারা গোছের দায়িত্ব সেরে বাড়িতে গিয়ে মন দিয়ে গৃহশিক্ষকতা করছেন।
প্রশ্ন হল, স্বাধীনতার সাতাত্তর বছর পরে কি আমরা এই শিক্ষাব্যবস্থা চেয়েছিলাম, যেখানে নীরবে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অপমৃত্যু ঘটবে আর বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভুঁইফোঁড়ের মতো গজিয়ে উঠে রমরম করে ব্যবসা চালাবে? দেশ ও প্রজন্মের স্বার্থে সরকারের কাছে আবেদন, প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি নজর দেওয়া হোক। শুধুমাত্র শিক্ষা নয়, ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের প্রতিও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে স্কুলের পরিবেশ এমন হোক যেখানে ছাত্রছাত্রীরা আসতে উৎসাহ পাবে। এই দশকের শপথ হোক— প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন হয়ে উঠতে পারে প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মন্দির।
দেবাশিস চক্রবর্তী, মাহেশ, হুগলি
সময় বদল
গত ৭ জুলাই থেকে আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও রবিবার কলকাতা থেকে দিঘা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ট্রেন চালু করা হয়েছে। কিন্তু সময়টা অনেকেরই অসুবিধার কারণ হতে পারে। কারণ, স্পেশাল ট্রেনটি কলকাতা থেকে দুপুর ২টোয় ছাড়বে এবং দিঘা পৌঁছবে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে। এর ফলে পর্যটকদের অযথা হোটেল ভাড়া দিতে হবে— শুধু রাতটুকু থাকার জন্য এক দিনের ভাড়া গুনতে হবে। আবার ফেরার সময়ও একই অসুবিধা যে-হেতু ফেরার ট্রেনটি সন্ধে ৭টা ১০ মিনিটে। দিঘাতে সব হোটেলের একই নিয়ম— সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টার মধ্যে ঘর ছেড়ে দিতে হবে। ফলে আবারও একটা দিনের ভাড়া গুনতে হবে ট্রেন ধরতে গেলে। এখানেই শেষ নয়। এই ট্রেনটি কলকাতায় পৌঁছবে রাত্রি ১১টা ৫৫ মিনিটে। সেই সময় স্থানীয় কোনও গাড়ি পাওয়া যাবে না, প্রিপেড বা অ্যাপ ক্যাবগুলি চড়া ভাড়া হাঁকবে। এর ফলে মানুষের এত রাতে বাড়ি ফিরতে অসুবিধা হবে। তাই অনুরোধ, ট্রেনগুলির সময় বদল করা হোক যাতে পর্যটকদের সুবিধা হয়।
তরুণ বিশ্বাস, কলকাতা-৩৫
ব্যয়ে লাগাম
বেশ কিছু বছর আগে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের নীচে একটা লাইন লেখা থাকত— ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অতিথি নিয়ন্ত্রণ বিধি প্রযোজ্য’। অর্থাৎ, কোনও এক সময় আইনের সাহায্যে অতিথির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যেত। খাদ্য সঙ্কটের কারণে এমন আইন এক সময় চালু ছিল। ১৯৭০-এর দশকে লোকে খুব একটা মানত না এবং সম্ভবত আশির দশকে ওই আইন প্রত্যাহৃত হয়। তবে, আজকাল বিয়ে বা ওই জাতীয় কোনও অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিত্তশালী মানুষেরা সম্পদ ও বৈভবের যে নির্লজ্জ প্রদর্শন করেন, তা বেশ দৃষ্টিকটুই লাগে। তবে শুধু বড়লোকদের বাড়ির অনুষ্ঠানেই এমন হয় না, এখন মধ্যবিত্তরাও অনেকে সাধ্যমতো বৈভব প্রদর্শন করতে পিছপা হন না। নিমন্ত্রিতের সংখ্যা ও প্লেটে পদের সংখ্যা যত বেশি হবে, ততই আনন্দ।
দেশের বহু মানুষ যখন আজও ঠিকমতো খেতে পান না, সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্য বেড়েই চলেছে, তখন বিয়ের নামে এই মচ্ছব আইন করে বন্ধ করা উচিত।
আশিস রায়চৌধুরী, শিলিগুড়ি
প্লাস্টিকে দই
আজকাল গ্রামবাংলা তথা শহর কলকাতায় দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু মিষ্টির দোকানে প্লাস্টিকের কৌটোর মধ্যে ফুটন্ত গরম দুধ ঢেলে তৈরি করা হচ্ছে দই। তার পর ওই দই ফ্রিজের মধ্যে রেখে দেওয়া হচ্ছে আর ওই প্লাস্টিকের কৌটোতেই ওই দুধদইতে পরিণত হচ্ছে। শুনেছি প্লাস্টিকে গরম খাবার রাখলে তাতে বিষাক্ত রাসায়নিক ক্রিয়া হয়ে থাকে। ফলে, এই দই আমরা যখন খাই, তখন একপ্রকার বিষই খাই। অথচ, কিছু দিন আগেও দেখেছি মাটির মালশায় ফুটন্ত দুধ ঢেলে তৈরি হচ্ছে দই। এই ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
স্বপন কুমার আঢ্য, ভান্ডারহাটি, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy