বাস ভাড়া বাড়লেই হইচই পড়ে যায়, কিন্তু অটো ভাড়ার বৃদ্ধি নিয়ে কোনও সময়ে কারও মাথাব্যথা চোখে পড়ে না। প্রতি বছর বাস ভাড়া বাড়ুক না বাড়ুক, অটো ভাড়া বাড়বেই। এ ছাড়াও যে কোনও অজুহাতে অটো ভাড়া বাড়ানো প্রায় প্রত্যেক দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত হলে ভাড়া বাড়ে, বৃষ্টি হলে বাড়ে, ভিড় হলে বাড়ে, কোনও কারণে একটু ঘুরে যেতে হলে বেশি ভাড়া দিতে হয়।
আর এখন তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে বেশ কিছু রুটে ভাড়া বেড়েছে। যেমন, সল্টলেক থেকে বিধাননগর স্টেশনের ভাড়া আগে পনেরো টাকা ছিল। এখন হয়েছে ২০ টাকা। সল্টলেক থেকে সব রুটেই এক লাফে চার-পাঁচ টাকা করে ভাড়া বেড়েছে। বাসের বদলে কোনও জায়গায় অটোতে যেতে হলে অনেক ক্ষেত্রে কমপক্ষে দুই থেকে তিন বার অটো পাল্টাতে হয়। প্রতি রুটেই যদি এ ভাবে চার-পাঁচ টাকা বেশি দিতে হয়, তা হলে সেটা বাস ভাড়া থেকে কত বেশি হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
শুধু কি অটো? রিকশা, যার সঙ্গে তেলের কোনও সম্পর্ক নেই, তার ভাড়াও কত বেড়েছে! অন্যান্য ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়লে যখন সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধে হয় না, তখন বাস ভাড়া বাড়লেই এত হইচই হওয়া কি যুক্তিসঙ্গত? বাস না চললে সেই পথ অটোতে যেতে হলে কত বেশি টাকা গুনতে হবে, তা বোধ হয় ভেবে দেখার সময় এসেছে।
দীপ দাস, কলকাতা-৬৪
ডিএ তরজা
সম্পাদকীয় “‘অর্থ’-হীন” (২৫-৬) প্রসঙ্গে এই চিঠি। সম্পাদকীয়টি পড়ে জানা যায়, কলকাতা পুরসভার কোষাগার তলানিতে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন ও অন্যান্য আর্থিক সুযোগসুবিধা আপাতত বন্ধ।
রাজ্যের প্রতিটি পুরসভা স্বশাসিত সংস্থা বলে রাজ্য সরকার তার দায় এড়াতে পারে না। কেননা আইনত স্বশাসিত সংস্থা হলেও পুরসভার কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা রাজ্য সরকারের অনুমোদনের ভিত্তিতে স্থির ও প্রদান করা হয়। অন্য দিকে, ওই দিনে পত্রিকার আরও একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়— ‘ডিএ মেলেনি, বেতন বন্ধ পাঁচ বিদ্যুৎকর্তার’। প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি স্বশাসিত সংস্থা হলেও কর্মীদের দাবি অনুযায়ী এগুলি লাভজনক সংস্থা ও সরকারি ভর্তুকির উপর নির্ভরশীল নয়। আদালতের রায়েও বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীদের এই যুক্তি কার্যত স্বীকার করা হয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-ও যে মৌলিক অধিকার এবং তা যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাজ্যকে মেটাতে হবে, কলকাতা হাই কোর্ট কিছু দিন আগেই সেই মর্মে রায় দিয়েছে।
এ দিকে, রাজ্য সরকারের তরফে সাফাইকর্মীদের পাওনাগন্ডার প্রতি রাজ্য সহানুভূতিশীল হলেও রাজ্যের বকেয়া টাকা কেন্দ্র না মেটালে কর্মীদের ডিএ দেওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি রাজ্যের নেই। রাজকোষের অবস্থা যখন এতটাই শোচনীয়, তখন সচিব থেকে শুরু করে ডিএম, এসপি, এসডিও, এসডিপিও প্রভৃতি সরকারি আধিকারিকদের নানা ধরনের ভাতার পাশাপাশি মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে কী করে নমনীয় মনোভাব থাকে রাজ্য সরকারের? আসলে ভাঁড়ার শূন্য হওয়ার বিষয়টি নিতান্ত অজুহাত। এই বিধ্বংসী করোনাকালে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বিধায়ক ও মন্ত্রীদের যে ভাবে দৈনিক ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে (মন্ত্রীদের দৈনিক ৩০০০ টাকা ও বিধায়কদের ২০০০ টাকা), তা সম্পূর্ণ নৈতিকতাবর্জিত ও স্বৈরাচারী মানসিকতার পরিচায়ক।
শুভেন্দু মজুমদার, কল্যাণী, নদিয়া
বিপন্ন সর্পকুল
সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের সর্বত্র, বিশেষত প্রত্যন্ত গ্ৰামীণ অঞ্চলগুলিতে অতি মাত্রায় বেড়েছে সাপুড়ে ও চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য। এরা দলবদ্ধ ভাবে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কেবল সাপের খেলাই দেখায় না, সমাজের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষজনের মনে অহেতুক ভীতি ও অন্ধবিশ্বাসের সঞ্চার ঘটিয়ে তাবিজ, মাদুলি, নানা গাছের শিকড় প্রভৃতি বেচে অসদুপায়ে আর্থিক উপার্জনও করে থাকে। তবে, এ সবের অছিলায় এদের প্রধান উদ্দেশ্য হল, গ্ৰামগঞ্জের ঝোপঝাড়, কৃষিখেত ও গর্তে বাসা বেঁধে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির সাপেদের শিকার। পরে সাপগুলির থেকে অবৈধ ভাবে তারা বিষ সংগ্ৰহ করে বাজারে বিক্রি করে। ‘জাতীয় বন্যপ্রাণ আইন ১৯৭২’ অনুযায়ী, এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আক্ষেপের বিষয়, বন্যপ্রাণ সুরক্ষা বিষয়ক এই ধরনের একাধিক আইন থাকলেও, প্রশাসনিক পর্যায়ে নিষ্ক্রিয়তার কারণে সে সব লঙ্ঘিত হয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।
এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গত ভাবেই প্রশ্ন ওঠে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে। কারণ, বন্যপ্রাণ বিশেষত সাপেদের সংরক্ষণ সম্বন্ধে আমজনতার মধ্যে সচেতনতার প্রসার ঘটাতে সরকারি তরফে কোনও সক্রিয় উদ্যোগের প্রয়াস সেই অর্থে প্রত্যক্ষ করা যায় না। যার ফলে, সাপুড়েদের লোভ-লালসার শিকার হয়ে উদ্বেগজনক হারে পরিবেশ থেকে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির অসংখ্য সাপ। সামগ্ৰিক পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রশ্নে যা কোনও ভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
তাই, গতানুগতিক পন্থায় কেবল আইন ও নীতি প্রণয়নই নয়, আক্ষরিক অর্থে সর্পকুলের সার্বিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নিয়মবিধিগুলি বাস্তবায়নের উপরে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। পরিকল্পনামাফিক নিয়মিত বন্যপ্রাণ সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি প্রত্যেক এলাকায় বন বিভাগের যোগাযোগ নম্বর সম্বলিত হ্যান্ডবিল বা লিফলেট বিলি করাও একান্ত প্রয়োজন।
দীনদয়াল বসু, নারিকেলবাড়, হাওড়া
বেআইনি ফি
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহু দিন ধরে পার্কিং ফি নিয়ে দুর্নীতি চলছে। গাড়ি পার্কিং-এর বর্তমান ফি প্রথম ৩০ মিনিটের জন্য ৪০ টাকা এবং এর পর ১২০ মিনিট পর্যন্ত ১০০ টাকা। এই হার বিমানবন্দরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) দ্বারা প্রাপ্ত। পার্কিং-এর প্রবেশদ্বারে প্রথমে ৪০ টাকা নেওয়া হয় প্রথম ৩০ মিনিটের পার্কিং চার্জ বাবদ। এর পর কেউ যদি ১২০ মিনিট পর্যন্ত গাড়ি রাখেন, তা হলে পার্কিং চার্জ হবে মোট ১০০ টাকা। এর মধ্যে যে হেতু ৪০ টাকা প্রবেশের সময় ইতিমধ্যে দেওয়া আছে, তাই তার সর্বমোট প্রদেয় হবে ৬০ টাকা, যেটা গাড়ি নিয়ে বেরোনোর সময় প্রস্থান দ্বারে দিতে হবে। অথচ, সেখানে পার্কিং-এর কর্মীরা জোর করে ১০০ টাকা আদায় করেন, গাড়ি রাখার সময়কাল ১২০ মিনিটের কম হওয়া সত্ত্বেও।
গত তিন বছরে ছ’বার বিমানবন্দরের পার্কিং ব্যবহার করেছি। প্রতি বারই ১২০ মিনিটের অনেক কম সময় লেগেছে। অথচ, সব বারই আমার কাছ থেকে বেআইনি ভাবে বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। পরে আমি এই বিষয়ে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে অতিরিক্ত টাকা ফেরত পেয়েছি। আশ্চর্যের বিষয়, প্রতি বারই পার্কিং লাইসেন্সধারীর তরফ থেকে আমাকে বলা হয়েছে যে, প্রস্থান দ্বারে নতুন লোক ছিল বলে ভুল করে বেশি টাকা নেওয়া হয়। এই ভুলের আর পুনরাবৃত্তি হবে না। অথচ, প্রতি বারই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে এবং পরে অভিযোগ জানালে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় এমন প্রতারণার ঘটনা এত বছর ধরে ঘটে চলেছে কী ভাবে, ভেবে অবাক লাগে। তাই কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এই প্রতারণা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি। আর, সাধারণ মানুষ, যাঁরা ভবিষ্যতে এয়ারপোর্ট-এর পার্কিং ব্যবহার করবেন, তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
সুবীর কুমার সাহা, কলকাতা-৫৪
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy