দেবেশ রায় ‘রাজ্যের অভিভাবক’ (২১-১১) শীর্ষক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘‘রাজেন্দ্রপ্রসাদ সংসদীয় গণতন্ত্রের অর্থ জানতেন না, তা নয়। তিনি হয়তো চাইছিলেন— এখনই হিন্দু কোড বিলের মতো আইনের দরকার কী! নেহরু ভাবছিলেন, হিন্দুত্ব যেন বেলাগাম হয়ে না ওঠে। রাজেন্দ্রপ্রসাদ কোনও মতপার্থক্য জানাননি।’’ মন্তব্যটি ঠিক নয়।
প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে অম্বেডকর যখন বিলটির খসড়া কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে পেশ করেন, তখনই অ্যাসেম্বলির সভাপতি হিসেবে রাজেন্দ্রপ্রসাদ বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর মত ছিল, এমন একটি বিল প্রয়োগ করার পূর্বে জনগণের মত যাচাই করা অবশ্যকর্তব্য। রাজেন্দ্রপ্রসাদের এই অভিরুচি দ্রুত হিন্দু জনমানসে ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজনার সঞ্চার করে।
এর পর ১৯৫০-এ রাজেন্দ্রপ্রসাদ যখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন, বিলটির বিষয়ে তিনি আরও এক ধাপ সুর চড়ালেন। নেহরুকে পত্র মারফত জানালেন, বিল যদি আনতেই হয়, সেই বিলের আওতায় সব ধর্মাবলম্বীদের আনতে হবে। সোজা কথায়, পরবর্তীতে প্রচারিত ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’ বিলই এক রকম চালু করতে চাইছিলেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ। জওহরলাল যা চাননি। তাঁর মত ছিল, সদ্য স্বাধীন সেকুলার রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুর মানসিক সুস্থিতি রক্ষা করাই জরুরি। ক্ষিপ্ত রাজেন্দ্রপ্রসাদ জানিয়ে দেন, এ ক্ষেত্রে বিলটি যদি সংসদে পাশও হয়ে যায়, বিলটিতে সই করবেন না তিনি।
সুতরাং, রাজেন্দ্রপ্রসাদ তাঁর ‘মতপার্থক্য’ জানাননি— কথাটি ঠিক নয়। বরং তাঁদের ‘মতপার্থক্য’ এত দূর গড়িয়ে ছিল, জওহরলাল প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলেন সে সময়। আর তাতেই রাজেন্দ্রপ্রসাদ পিছু হটতে বাধ্য হন (সূত্র: নেহরু: দি ইনভেনশন অব ইন্ডিয়া, শশী তারুর)।
অসীম সামন্ত
উত্তরপাড়া, হুগলি
লন্ডনে বাংলা
লন্ডনের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র এবং সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য সিটি লিট নামক একটি সংস্থা সমীক্ষা চালিয়েছিল। সমীক্ষায় নানা চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, লন্ডনের তিন লক্ষ বাসিন্দা কোনও-না-কোনও বিদেশি ভাষায় কথা বলেন; ৩% ইংরেজ বাংলা ভাষায় স্বচ্ছন্দে কথা বলতে পারেন। এই শহরে সবচেয়ে বেশি মানুষ কোন ভাষায় কথা বলেন, তার তালিকাটি এই রকম : ১) ইংরেজি, ২) বাংলা, ৩) পোলিশ, ৪) তুর্কি। ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে লন্ডনে ৭১ হাজার ৬০৯ জন বাঙালি বাস করেন। দ্বিতীয় সর্বাধিক কথিত ভাষা হিসেবে বাংলাকে সরকারি তকমা দেওয়া হল লন্ডনে। এটা বাঙালির পক্ষে গৌরবজনক। অথচ লজ্জার কথা, আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বহু বাঙালি ছাত্র প্রথম ভাষা হিসেবে বাংলাকে নির্বাচন করে না, তাদের অভিভাবকদেরও সম্মতি থাকে সে নির্বাচনে।
দিলীপ মজুমদার
কলকাতা-৬০
গ্যাস এলে
বিভিন্ন সতর্কবাণীতে বার বার বলা হয়, গ্যাস নেওয়ার সময় ওজন করে নেবেন এবং ক্যাশমেমোতে যে টাকা লেখা থাকবে সেটাই দেবেন। কিন্তু আদৌ তা হয় না। যখন গ্যাস ডেলিভারি বয় গ্যাস দিতে আসেন, তখন যা লেখা থাকে তার থেকে ন্যূনতম কুড়ি টাকা থেকে শুরু করে কমবেশি পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত বেশি নেন (এলাকাভেদে এক এক রকম)। এবং ওজন করে দেওয়ার কথা বলা থাকলেও, কখনওই গ্যাস ওজন করে দেন না। গ্যাসের মুখের ক্যাপ সিল করা থাকে যে প্লাস্টিক দিয়ে (গ্যাস কোম্পানির লোগো-সহ), যা আঁটোসাঁটো থাকার কথা, তাও বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, ঢিলে বা ছেঁড়া। যে সুতো দিয়ে ক্যাপ বাঁধা থাকে, তাও ছেঁড়া, নোংরা বা অতি পুরনো। তখন ভাবি, এতে আদৌ ঠিক পরিমাণ গ্যাস আছে তো?
বিপ্লব ঘোষ
গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
রসুন
‘রসুন কতটা খাওয়া উচিত’ (পত্রিকা, ৩০-১১) লেখাটির প্রেক্ষিতে জানাই, সতেজ রসুনে অ্যালিসিন নয়, থাকে অ্যালিন ও উৎসেচক অ্যালিনেস। স্বাভাবিক অবস্থায় সেই না-থেঁতো-করা রসুনে অ্যালিন এবং অ্যালিনেস মিশ্রিত হতে পারে না। রসুন পিষে বা চিবিয়ে খাওয়ার সময়, তার মধ্যে থাকা অ্যালিন ও অ্যালিনেস পরস্পরের সংস্পর্শে আসামাত্র অ্যালিসিনে রূপান্তরিত হয়। রসুনের অধিকাংশ ঔষধিগুণের মূলে এই অ্যালিসিন। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উপস্থিতির জন্যই রসুনের স্বাদ ঝাঁজালো।
কৃষ্ণা মাহাতো
রামকৃষ্ণ পল্লি, হাওড়া
স্মার্টসিটি ?
অনেক আশা নিয়ে মধ্যবিত্ত বাঙালির মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে কয়েক জন মানুষ মিলে নিউ টাউন-এ বাসস্থান পাওয়ার আশায় জমির জন্য দরবার করি ২০০০ সাল নাগাদ। ২০০৮ নাগাদ জমি বরাদ্দ হয় এবং নির্মাণ শুরু করি ২০১০ নাগাদ। ৩২ জন সদস্যের মনকষাকষি, কিছু সভ্যের মৃত্যু, ক্রমবর্ধমান নির্মাণ-খরচ, স্থানীয় সিন্ডিকেটের ভালবাসা— সব সামাল দিয়ে ২০১৯-এ ইমারতটা খাড়া হয়েছে এবং বাস করার জন্য এনকেডিএ-র সবুজ সঙ্কেতও পাওয়া গিয়েছে প্রায় ছ’মাস আগে। কিন্তু এসইডিসিএল, বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে নারাজ। তাদের নির্দেশ, ট্রান্সফর্মার বসানোর জন্য আমাদের প্রকল্পের মধ্যেই তাদের জমি দিতে হবে। প্রকল্পের মধ্যে এমন কোনও জমি নেই এবং এনকেডিএ-র নিয়মে, জমির কোনও রকম বাড়তি ব্যবহার প্রকল্পের মধ্যে করলে তা অবৈধ। হিডকো-র জমি বিক্রির শর্ত অনুযায়ী, নর্দমা সংযোগ, বিদ্যুৎ, পরিবহণ— এ সব ব্যবস্থা প্রকল্পের অন্তর্গত এবং সে জন্য উন্নয়নের খরচও নেওয়া হয়েছে। হিডকো-র বক্তব্য, অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান-এ বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বহু আগেই বণ্টন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় উপরোক্ত দুই সংস্থাকেই পত্র মারফত সমাধানের জন্য বহু আবেদন নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সারা নিউ টাউন যখন ঝকঝকে আলোর মালায় সজ্জিত, তখন কয়েক কোটি টাকায় তৈরি আমাদের এই বৃদ্ধ বয়সের আবাসন অন্ধকার ভূতের বাড়ি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই কি তবে স্মার্টসিটির নাগরিকদের ভবিষ্যৎ?
প্রদীপ ঘোষ
কলকাতা-৩৯
চুল ও শিক্ষা
‘চুলের কেতা’ (২৬-১১) চিঠিটির সঙ্গে একমত নই। প্রথমত, ছাত্রের চুলের ছাঁট নষ্ট করে তাকে লেখাপড়ার দিকে টেনে আনার চেষ্টা করা হয়নি, তাকে ভদ্র সমাজের উপযোগী ব্যবহার ও সহবত শিক্ষার পাঠ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, জীবনের নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকলে, চুলের কেতা যে বাঁচার অবলম্বন হয় না, সেই শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। তৃতীয়ত, যে কোনও পেশা বেছে নেওয়া আর স্কুলে পড়ার সময় ছাত্রদের আচরণ শেখার মধ্যে বিরোধ থাকবে কেন? শিক্ষার্থীরা পরে ‘হোয়াইট কলার’ চাকরি করুক আর না-করুক, সুস্থ, রুচিশীল নাগরিক তৈরিই শিক্ষকদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
ব্রতী সমাদ্দার
কৃষ্ণনগর, নদিয়া
‘পেশেন্ট’
প্রায়ই হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে, ডাক্তারবাবু বা সিস্টারদের বলতে শুনি, ‘এই পেশেন্টটার’, ‘ওই পেশেন্টটার’ ইত্যাদি ইত্যাদি। মানছি, একই সঙ্গে বহু রোগীর চিকিৎসা করতে হয় তাঁদের, কিন্তু একটু সম্মান দেখিয়ে রোগীদের সম্পর্কে ‘এই ভদ্রলোক’ বা ‘এই ভদ্রমহিলা’ বলা যায় না কি?
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-২৬
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy