১ জুলাই থেকে পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বাস পথে নামতে পারবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ সরকারি বাস পথে নামলেও বেসরকারি বাসের চলাচল নামমাত্র। পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে গেলে বাস মালিকদের লোকসানের পরিমাণ অনেক বেশি হবে। কারণ, বর্তমান বাজারে পেট্রল ও ডিজ়েলের দাম আকাশছোঁয়া। এখানেও সেই সরকারি-বেসরকারি দ্বন্দ্ব। সরকারি ছাপ থাকলে তাদের রোজগার বাঁধা। কিন্তু বেসরকারি বাস চললে তবে তার চালক, কন্ডাকটরদের কমিশনভিত্তিক রোজগার!
কিন্তু এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালালে তাদের সারা দিনের জ্বালানি খরচও উঠবে না। ফলে তারা বাধ্য হয়েই যাত্রীদের থেকে বেআইনি ভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। অথচ, দীর্ঘ দিন ধরে বাসমালিক অ্যাসোসিয়েশন ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আবেদন করছে। সরকার তাতে সায় দেয়নি। যদি পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়েই বাস চালাতে হয়, তবে ভাড়া বাড়ানো উচিত। কারণ, যেখানে যাত্রীরা একটা বাসেই গন্তব্যে পৌঁছতে পারতেন, সেখানে তাঁদের অটো, টোটো, ম্যাজিক গাড়ি প্রভৃতি একাধিক পরিবহণের মাধ্যমে যেতে হচ্ছে। ফলে, দিনপ্রতি কমপক্ষে ২০০-২৫০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। আবার এটি সময়সাপেক্ষও বটে। এমতাবস্থায়, বাসভাড়া কিছু পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে অনেকখানি। এবং ভোগান্তি কমানোর জন্য তাঁরা ওই বর্ধিত বাসভাড়া দিতেও অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না। রাজ্যবাসীর স্বার্থে সরকারের মধ্যস্থতায় বাসমালিক অ্যাসোসিয়েশন-এর সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে বাসভাড়া বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে হয়।
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি
গা-জোয়ারি নীতি
‘অনটন চরমে, বাসেই মিলল চালকের ঝুলন্ত দেহ’ (৯-৭) শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বলছি, জরুরি ভিত্তিতে সমস্ত রুটের বাস, মিনিবাসের ভাড়া বাড়িয়ে সব বাস পথে নামাতে সরকার সদর্থক পদক্ষেপ করুক। কোভিড হানার অনেক আগে থেকেই বর্তমান সরকারের ভাড়া না-বাড়ানোর গা-জোয়ারি নীতিতে পথে বাস কমেছে। সন্ধের পর এক্সাইড, পার্ক সার্কাস, মিন্টো পার্কের মতো জায়গায় বাসের সংখ্যা ক্রমশ কমে যায়। এখন ১০০ টাকা লিটারের তেল ভরে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে পুরনো ভাড়ায় পর্যাপ্ত বাস চলবে— এই নীতি চলে না। রুটের বাসের শ্লথ গতি, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রবণতা, বেপরোয়া গতি— এই সবই ভাড়া না বাড়ার ফলে তৈরি লোকসান চাপতে গিয়ে হয়। এখন যে পরিমাণ টাকা অটো, টোটোর পিছনে খরচ হচ্ছে, তাতে ৫-১০ টাকা বাসভাড়া বাড়লে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।
নিত্য দিন জনসেবার মুখরোচক বুলি ঝেড়ে বাস পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার পরিবারকে কেন বিপদের মুখে ঠেলছে প্রশাসন— এর কোনও উত্তর নেই! অটো, টোটো, ট্যাক্সি, ওলা-উবরের ভাড়া আর মেজাজ, দুই-ই বেড়ে চলাটাকে বোধ হয় পার্টিগত লাভের (আর্থিক ও রাজনৈতিক) কথা ভেবেই কিছু বলা হয় না। কোভিডকে হারাতে গেলে শুধু ভ্যাকসিন নয়, পর্যাপ্ত বাসভাড়া বাড়িয়ে সব রুটের বাসও চালু করতে হবে। যাতে বেশি সংখ্যক বাস অন্তত সিট অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে ছুটতে পারে।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
ট্রেনও চলুক
‘পরিবহণ সঙ্কট’ (৭-৭) সম্পাদকীয় প্রসঙ্গে জানাই, অতিমারি ও লকডাউন পরিস্থিতিতে গরিব, নিম্নবিত্তদের অবস্থা বেহাল। লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন। অনেকের বেতন কমেছে। কোভিড আক্রান্ত প্রিয়জনের চিকিৎসার জন্য অনেকেই ধার করতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাস, ভোজ্যতেল-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসমালিকদের স্বার্থে বাসভাড়া বৃদ্ধি কার্যত মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই দাবি উঠেছে, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের পেট্রোপণ্য নীতির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ভূমিকা নিক এবং জনগণের স্বার্থে পেট্রল, ডিজ়েলের উপর ট্যাক্স প্রত্যাহার করুক। প্রয়োজন হলে সরকার ভর্তুকি দিয়ে মানুষকে পরিবহণের এই দুঃসহ ভাড়া-বৃদ্ধির চাপ থেকে রক্ষা করুক। এরই সঙ্গে দাবি উঠেছে, লোকাল ট্রেন চালু হোক। পর্যাপ্ত লোকাল ট্রেন চললে দূরত্ববিধি মেনে সুষ্ঠু ভাবে যাতায়াত করা সম্ভব হবে।
স্বপন মুনশি
দুর্গাপুর-৫, পশ্চিম বর্ধমান
যানযন্ত্রণা
‘পরিবহণ সঙ্কট’ শীর্ষক সম্পাদকীয়টি পড়লাম। জ্বালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাসমালিকদের মধ্যে বাস চালানোর ব্যাপারে নিরুৎসাহ দেখা দিচ্ছে। সরকার জনগণের কথা চিন্তা করে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। সমস্যায় পড়ছেন মানুষ। উবর দর বৃদ্ধি করেছে। ওয়েটিং চার্জ বেড়েছে। ২০০ টাকা দেখালে মোবাইল নাড়িয়ে কী করে জানি না ২৯০ টাকা নিচ্ছে। এই অবস্থায় বাস ছাড়া উপায় নেই। বাসমালিক ও সরকারের উচিত জনসাধারণের কথা ভেবে একটা সন্তোষজনক সমাধানে এসে বাস চলাচলকে ত্বরান্বিত করা। মানুষ পরিবহণ সমস্যায় জর্জরিত।
রীতা পাল
কলকাতা-২৪
বিশেষ পরিষেবা
পশ্চিমবঙ্গের সব জেলা মিলিয়ে কয়েক হাজার বেসরকারি বাস চলে। বিগত কয়েক মাসে জ্বালানির দাম এত বেড়ে গিয়েছে যে, বাসমালিকদের পক্ষে আর বাস চালানো সম্ভব নয়। অন্যান্য জিনিসের দাম বাড়লে আমরা সেটা দিতে বাধ্য হই। তবে বর্ধিত বাসভাড়া কেন দেব না? বাস না চলার জন্য মানুষের কত অসুবিধা হচ্ছে, তা কি সরকার জানে না? এটি একটি বিশেষ পরিষেবা।
অমল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়
কোন্নগর, হুগলি
তেলের ছ্যাঁকা
এক দিকে করোনায় মৃত্যুমিছিল। অন্য দিকে লকডাউনে কাজ হারিয়ে পেটের টান। আমজনতা যখন খাদের কিনারে, তখনই হুহু করে চড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। ইতিমধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক-সহ দেশের ১৪টি রাজ্যে সেঞ্চুরি করেছে পেট্রল। বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে গত মাসেই পেট্রলের দাম ১০০ পেরিয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যেও পেট্রল সদ্য ‘শতরান’ হাঁকিয়েছে। ডিজ়েল লিটার পিছু ৯৩ ছুঁই ছুঁই। জ্বালানি তেলের দামে যেন ছ্যাঁকা লাগার জোগাড়! উল্লেখ্য, ২ মে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল বেরোতেই ধারাবাহিক ভাবে বাড়তে শুরু করে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম। জুলাই মাসেও বহাল রয়েছে সেই ধারা। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বাস, ট্রাক, লরি ও অন্যান্য পরিবহণের ক্ষেত্রে। ফলস্বরূপ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, আনাজ-সহ প্রায় সমস্ত কিছুর দামই ঊর্ধ্বমুখী। এই অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি রুখতে দেশের একাধিক অর্থনীতিবিদ পেট্রল-ডিজ়েলকে জিএসটি-র আওতায় আনার পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বরাবরই এই কাজ থেকে বিরত থেকেছে। মূল্যবৃদ্ধি থেকে রেহাই পায়নি রান্নার গ্যাসও। জুলাই মাসের প্রথম দিন রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নতুন করে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮৬১ টাকা। পরিসংখ্যান বলছে, গত সাত মাসে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ৩৮.৭৫ শতাংশ। ভর্তুকি তো প্রায় বিলুপ্তিরই পথে। আমজনতার নাজেহাল অবস্থা।
সুদীপ সোম
প্রফুল্লনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy