Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Swasthya Sathi

সম্পাদক সমীপেষু: চিকিৎসার মান?

রাজ্যের বেশির ভাগ নার্সিংহোমই পরিকাঠামোগত ভাবে অত্যন্ত দুর্বল। চিকিৎসাব্যবস্থাও অত্যন্ত নিম্ন মানের এবং বেশির ভাগ নার্সই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

সবাই যদি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়, তা হলে আর সরকারি হাসপাতালের কী প্রয়োজন? সরকারি হাসপাতালে তো বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। মানুষ যে ভাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোর জন্য লাইন দিচ্ছেন, তাতে এটুকু সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, তাঁরা এ বার সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি হাসপাতালমুখো হবেন।

কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়! আমাদের রাজ্যে বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা কতখানি উন্নত? যদি উন্নত হত, তা হলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসার জন্য ভিড় জমাতেন না। ভুঁইফোঁড় নার্সিংহোমগুলোর থেকে আমাদের রাজ্যে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা অনেক ভাল। চিকিৎসার নামে লোকঠকানো ও আকাশছোঁয়া বিল করা আমাদের রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির দীর্ঘ দিনের রেওয়াজ। এর পর যখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে, তখন সামান্য চিকিৎসাতেও ভুয়ো বিল হবে।

রাজ্যের বেশির ভাগ নার্সিংহোমই পরিকাঠামোগত ভাবে অত্যন্ত দুর্বল। চিকিৎসাব্যবস্থাও অত্যন্ত নিম্ন মানের এবং বেশির ভাগ নার্সই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। ফলে ওই সমস্ত নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হলে রোগীর প্রাণসংশয়ও হতে পারে। সুতরাং, সরকারের উচিত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে স্বাস্থ্যসাথীর অনুমোদন দেওয়ার আগে সেগুলির পরিকাঠামো ও চিকিৎসার মান দেখে নেওয়া। দেখা যাবে, খুব কমই অনুমোদনযোগ্য। কিন্তু আমাদের রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা স্কুলের অনুমোদন পাওয়াটা তো শুধুমাত্র মান দেখে হয় না। রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থবল— এ সবই আসল। অর্থাৎ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেই যে চিকিৎসার মান ভাল পাবেন, তার নিশ্চয়তা নেই।

কৌশিক সরকার

রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া

উন্নত কাঠামো

বিমা-নির্ভর চিকিৎসাব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে খাস আমেরিকায়। বিমা নির্ভরতা, বিশেষত করোনাকালে আমেরিকানদের অনেককেই চিকিৎসালাভ থেকে বঞ্চিত করেছিল। তার ফলে মৃত্যুমিছিল দীর্ঘতর হয়েছে সে দেশে। সে কারণে আমেরিকাতেই দাবি উঠেছে সাধারণের চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে। সম্প্রতি সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছিল। ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশও করোনা পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে বিমা প্রকল্প নয়, গুরুত্ব আরোপ করেছে জনস্বাস্থ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নে। অথচ, আমাদের রাজ্যে দেখছি এ সব ঘটনা থেকে কোনও শিক্ষাই নেওয়া হয়নি। অনেকের মতে, রাজ্যের বিপুল সংখ্যক নাগরিককে এই বিমার আওতায় আনার জন্য যে বিরাট খরচের বোঝা সরকারের ঘাড়ে চাপবে, তার আয়তন রাজ্যের স্বাস্থ্য বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে বিমার সুবিধা কত জন পাবেন, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। এমনও অভিযোগ আছে যে, অনেক চিকিৎসালয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডধারীকে ফিরিয়ে দিয়েছে সরকার বকেয়া সময়মতো মেটায়নি, এই অভিযোগে। তা ছাড়া চিকিৎসকদের একাংশ এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেছেন, প্রকল্পের বিমা-সুবিধা আত্মসাৎ করার জন্য অনেক নন-সার্জারি কেসের সার্জারি করা হয়েছে। এই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে সরকারের উচিত বিমার পরিধি না বাড়িয়ে সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও পরিষেবার উন্নতি ঘটানো।

প্রিয়রঞ্জন পাল

রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর

বিভ্রান্তি

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনের ফর্মে দুটো কলাম। একটা কলামে আছে, পরিবারের কোনও সদস্যের সরকারের স্পনসর করা স্বাস্থ্যবিমা আছে কি না। অন্যটিতে আছে, পরিবারের কোনও সদস্যের সরকারি স্বাস্থ্যভাতা আছে কি না। কিন্তু বিমা বা ভাতাভোগী সদস্য থাকলে সেই পরিবারের কার্ডপ্রাপ্তিতে কোনও সমস্যা হবে কি না, সেটার যেমন উল্লেখ নেই, তেমনই উল্লেখ নেই পরিবার কার্ড পেলে এই ধরনের সুবিধাভোগী সদস্যের চালু সুবিধায় কোন‌ও প্রভাব পড়বে কি না, সেই ব্যাপারে। এ ক্ষেত্রে আলোকপাত করা প্রয়োজন। নয়তো প্রকল্পে অসম্পূর্ণতা থেকে যাবে। টোল ফ্রি নম্বরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভ্রাট ঘটছে।

অমল চন্দ্র চৌধুরী

ক্ষীরগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান

চাকরি নেই

‘দুয়ারে সরকার’ থেকে বাদ পড়েছে নথিভুক্ত বেকারদের চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তৈরি ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পটি। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত বেকার ৩৫ লাখে পৌঁছে গেলেও কর্মসংস্থানের কোনও দিশা দেখাতে পারেনি প্রকল্পটি। সিএমআইই-র নভেম্বর, ২০২০ সালের হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার ১১.২ শতাংশ, যদিও রাজ্যে বেকারত্বের হার খাতায়-কলমে কমছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বাম শাসনকালে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের অস্তিত্ব ছিল, নাম লেখালে ডাক আসত। বর্তমান সরকারের শাসনকালে এক্সচেঞ্জের গুরুত্ব কমিয়ে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ককেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যদিও সেখান থেকে দীর্ঘ সাত বছরে নিয়োগ কতটা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শুধু ১০০ দিনের কাজ আর ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে কর্মসাথী, কর্মতীর্থের মতো প্রকল্পে নাম লেখানোই কি রাজ্যের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ? শিক্ষিতদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে রেখে কাদের দুয়ারে যেতে চায় সরকার!

সুজাতা মাইতি মণ্ডল

তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর

অর্থহীন

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে গত ৬ জানুয়ারি কোন্নগরের একটি শিবিরে গিয়েছিলাম ছেলের ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য। কিন্তু আমাকে ফর্ম দেওয়া হয়নি। বলছে অনলাইনে ইনকাম ট্যাক্সের ফাইল আগে জমা দিতে হবে এসডিও অফিসে সংশ্লিষ্ট দফতরে। বাৎসরিক আয় সন্তোষজনক হলে তবেই আবেদন করার জন্য ফর্ম পাওয়া যাবে এবং আবেদন করা যাবে। কিন্তু মণ্ডল কমিশন রিপোর্টে তো কিছু পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল ওবিসিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। সেখানে আয়ের কথা কিছুই বলা হয়নি। আমরা বারুজীবী সম্প্রদায়। বারুজীবী ওবিসি অন্তর্ভুক্ত। আমার দাদার ছেলে ইতিমধ্যেই ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়ে গিয়েছে। সেই সুপারিশমতো ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়েছিলাম ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হল। তা হলে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির করে কী উপকার হল, যদি পরিষেবার জন্য এসডিও অফিসে দৌড়তে হয়।

অতীশচন্দ্র ভাওয়াল

কোন্নগর, হুগলি

রেশন কার্ডে ভুল

রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ষাটোর্ধ্ব এক মহিলাকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডও নিতে দেখা গেল সংবাদমাধ্যমে। আবেদনের চার দিনের মধ্যেই তিনি কার্ড পেয়েছেন বলে সংবাদসূত্রে উঠে এসেছে। বোঝা যাচ্ছে, দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। কিন্তু গত বছর নভেম্বরে পরিবারের সকলের ডিজিটাল রেশন কার্ডে বিস্তর ভুল নিয়ে আবেদন করার এক বছর পরও কেন ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে পেলাম না, বুঝলাম না।

সেক ইমরান

গোলকুঁয়াচক, পশ্চিম মেদিনীপুর

বঞ্চিত পুরুষ

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠা মহিলার নামে। ফলে যে সব পরিবারে কোনও মহিলা সদস্য নেই, তার পুরুষ সদস্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টা রাজ্য সরকার বিবেচনা করলে অনেকে উপকৃত হবেন।

সুব্রত ঘোষ

কলকাতা-১০

অন্য বিষয়গুলি:

Swasthya Sathi Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy