কলকাতার নিউ আলিপুর এলাকায় একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন পড়ে কয়েক মাস আগে দাঁতের চিকিৎসার জন্য সেখানে হাজির হয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের মিষ্টি কথার ফাঁদে পড়ে বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম প্রতিষ্ঠানটিকে। একদা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ছিলাম। ফলে সিজিএইচএস প্রকল্পের আওতায় ওই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলেই ওখানে গিয়েছিলাম চিকিৎসা করাতে। কয়েক দিন চিকিৎসা করানোর পর বুঝতে পারি সেখানে অল্প বেতনে যে ডাক্তার দাঁতের চিকিৎসা করেন, তিনি আদৌ তেমন যোগ্যতাসম্পন্ন নন। ফলে চিকিৎসার নামে ওখানে এক প্রকার প্রহসন চলছে। অনেক অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও তাঁদের পরিবার সরকারি খরচে ওখানে চিকিৎসা করাতে আসেন এবং পরবর্তী কালে তাঁদের সঙ্গে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে আমার সঙ্গেও। আর সি টি করার অজুহাতে ওই চিকিৎসক দাঁতের অভ্যন্তরে সরু একটি সুচ ঢুকিয়ে ভেঙে ফেলেন। যার জন্য এক্স রে করার কথা আগে নিজে লিখে দিয়েও ওই চিকিৎসক তা পরে করাতে বারণ করেন। সেই ভাঙা সুচ আজও বার করা সম্ভব হয়নি, কারণ দাঁতের অনেক গভীরে সেটি এখন ঢুকে গিয়েছে। ক’দিন আগে আর এক হাসপাতালে এক্স রে করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। পরবর্তী কালে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে ঘটনাটি জানানো হলে, তিনি প্রথমেই ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করেন। পরে সমস্ত প্রমাণপত্র ইমেল করার পর বাধ্য হয়ে আর কথা বাড়াননি।
তাই যে প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার জন্য যাওয়া হচ্ছে, শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন না দেখে, তাদের সম্পর্কে আগে ভাল ভাবে খোঁজখবর নেওয়া একান্ত জরুরি। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিকে সিজিএইচএস-এর বাইরে রাখা হোক। অন্যথায় এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের ফাঁদে পড়ে সমস্যা বাড়বে সিজিএইচএস প্রকল্পের অন্তর্গত উপভোক্তাদের।
সৌমিত্র মজুমদার, রহড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
বহুতল নির্মাণ
দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্তর্গত দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজার মোড় এবং সেই সংলগ্ন এলাকায় আগাছার মতো বহুতল নির্মাণের প্রবণতা গত কয়েক বছরে বহু গুণ বেড়েছে। সম্প্রতি সেই অঞ্চলে এক বালিকা বিদ্যালয়ের গা ঘেঁষে চারটি বাড়ি প্রায় একই সঙ্গে ভাঙা হয়েছে এবং বহুতল তৈরির প্রক্রিয়া চলেছে। এদের মধ্যে দু’টির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে, এবং বাকি দু’টি শুরু হয়েছে। এই এলাকায় যে সমস্ত বহুতল নির্মাণ হয়েছে বা হচ্ছে, তার সব ক’টিই আট তলবিশিষ্ট। সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে সর্বোচ্চ মুনাফা নিশ্চিত করতে আগেকার পাঁচ-ছ’তলার পরিবর্তে সরাসরি আট তলবিশিষ্ট বহুতল বানানো হচ্ছে। এই রকম যত্রতত্র চিলতে জমির উপরে কয়েক জন অসাধু প্রোমোটারের বহুতল নির্মাণের প্রবণতা শহরটিকে ক্রমেই আরও বিশৃঙ্খল, ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত করছে। এদের না আছে বিশ্ব-উষ্ণায়নের সমস্যার তোয়াক্কা, না আছে বৃক্ষরোপণের বিষয়ে নজর। বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংসসাধন ছাড়াও এই বহুতলগুলির নির্মাণ সামগ্রী থেকে উৎপন্ন অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা বাতাসের দূষণমাত্রা মারাত্মক বাড়িয়ে দিচ্ছে। এদের মধ্যে দু’টি বহুতল এতটাই সরু গলির মধ্যে নির্মিত যে, অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে দমকলের গাড়ির প্রবেশ এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। এ সব ছাড়াও, স্কুল সংলগ্ন এলাকায় দমদম রোডের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার বেশির ভাগটাই এদের নির্মাণ সামগ্রীর দ্বারা দখল হয়ে থাকে। অসহায় পথচারী এবং ছাত্রছাত্রীদের এক রকম বিপদ মাথায় করেই মাঝ-রাস্তা দিয়ে হাঁটা-চলা করতে হয়। তা ছাড়া, এই রকম অবিরাম নির্মাণ কার্যের তীব্র আওয়াজ পড়ুয়াদের পঠনপাঠনেও বিঘ্ন ঘটাতে থাকে।
এই এলাকা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই পুরসভার কার্যালয় এবং নাগেরবাজার থানা অবস্থিত। দক্ষিণ দমদম পুরসভার আওতায় থাকা এই এলাকাগুলিতে ক্রমবর্ধমান প্রোমোটাররাজ পুরসভার মদতের দিকেই ইঙ্গিত করে। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং আধিকারিকদের কাছে আবেদন, এই ধরনের বহুতলগুলির নির্মাণ বৈধ কি না, তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা করা হোক। শুধু তা-ই নয়, এর পিছনে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পুরসভা বা সেখানকার আধিকারিকদের হাত রয়েছে কি না, নজর দেওয়া দরকার। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ছাড়া এই ধরনের প্রোমোটাররাজ বন্ধ করা অসম্ভব।
শ্রীপর্ণা চক্রবর্তী, কলকাতা-৭৪
গাড়ির বাধা
আমি বরাহনগরের বাসিন্দা। গোপাল লাল ঠাকুর মেন রোড থেকে আমার বাড়ি আসার যে রাস্তাটি রয়েছে, সেই রাস্তায় এই অঞ্চলের প্রশাসনের এক জন কর্তাব্যক্তি এবং আরও দু’তিন জনের গাড়ি রাখা থাকে প্রতি দিন। ফলে আমরা যাঁরা এই অঞ্চলে বসবাস করি, তাঁদের গাড়ি ভাড়া করে কোথাও যাওয়ার দরকার হলে হেঁটে গোপাল লাল ঠাকুর মেন রোডে গিয়ে গাড়ি ধরতে হয়। এখানে যাঁদের গাড়ি রয়েছে তাঁদের গাড়ি কোনও গ্যারাজে কিংবা অন্য কোথাও পার্ক করা উচিত। গাড়ির মালিকদের কি বিবেচনা করা উচিত নয় যে, পথে তাঁদের গাড়ি পার্ক করে রাখার ফলে অন্যদের অসুবিধা হতে পারে?
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, বিষয়টি বিবেচনা করে যথা সম্ভব তাড়াতাড়ি উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হোক।
কৃষ্ণেন্দু গুঁই, বরাহনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
অটো পরিষেবা
গড়িয়া-গড়িয়াহাট বা গোলপার্ক পর্যন্ত অটো রুটটি একটি ব্যস্ত রুট। অথচ প্রতি দিন সন্ধ্যা ৭টার পর গড়িয়াহাটে কিছু অটোচালক নির্দিষ্ট রুটের যাত্রীদের না তুলে রুটের বাইরের যাত্রী তোলেন বেশি উপার্জনের আশায়। কাটা রুটে বেশি লাভের আশায় তাঁদের গন্তব্য হয় ৮বি পর্যন্ত। আর লাইনে থাকা যাত্রীরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে থাকেন কখন একটি অটো আসবে। এই অসাধু অটোচালকদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
সুভাষ মণ্ডল, কলকাতা-৪৫
ছুটির ছবি
শীতে নিউ মার্কেট এলাকায় যাওয়ার ধুম লেগে যায় বাঙালির। গাড়ির পার্কিং না পেলেও চলে, সাধের অ্যাপ ক্যাব, মেট্রো আছে তো। বিরক্তি না দেখিয়ে মিশে যেতে হয় ভিড়ে, লক্ষ্যপূরণের আশায়। স্কার্ফের সঙ্গে টুপি, ঝোলা দুলের সঙ্গে লালচে পরচুলা অথবা মাত্র তিনশো টাকায় নরম পশমের শীতপোশাক হাতছানি দেয়।
ও দিকে মার্কেট চত্বর সরগরম। হাতে, কোলে শিশু, তাই বলে কি নিউ মার্কেট আসব না? সাহেবের মার্কেট ফুঁড়ে দেখতে হবে এক আজব জগৎ, নামকরা পুরনো বেকারি-র আখরোট কুচি দেওয়া ব্রাউনি, স্পেশাল ফ্রুট কেক। অন্য দিকে হরেক কিসিমের খাবার। রেজ়ালা থেকে রোল— মন চায় সব পেতে, সব খেতে। সানগ্লাস থেকে সস্তা ঘড়ি, খরচে পোষালে বিখ্যাত রুপোর দোকানে ঢুঁ। সে সব ঠিকানা না জানা থাকলেও এই চত্বর গমগম করে। ক্রিসমাসের পসরায় সাজে। টুপি, মোজা, মাথার আলো জ্বলা শিং, ক্রিসমাসের চিরচেনা গাছ হাত বাড়িয়ে ডাকে খুকুকে। খুকুর মা টুক করে দেখে নেয় পার্স— আর কতটা খরচ হলে বাড়ির পথটুকু বাসে পেরোনো যায়।
মন কিন্তু টেনে নেয় দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। নাতনির জন্য কাগজের খেলনা কিনে হাত ধরাধরি করে বাড়ি ফিরছেন। যৌবনের কলকাতা চেখে নিচ্ছেন ধূসর চশমায়। ‘যদ্দিন শ্বাস, তদ্দিন আশ’। আশার ছলনে গোটা জীবন পেরিয়ে যায়।
জয়ন্ত ভট্টাচার্য, কলকাতা-১০৩
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy