এই কোভি়ড-১৯’এর ভয় এসে গিয়ে, ক্রিকেট ম্যাচে জোরে বোলাররা আর বল-এ থুতু, মুখের লালা, ঘাম ব্যবহার করতে পারবেন না (যা বলের পালিশ চকচকে রাখে, যে কারণে বল সুইং করে)। তা হলে উপায়? কেউ বলছেন,বলের এক দিকে ওজন বাড়ালে বলের সুইং পেতে সুবিধে হবে। আমার মনে হয়, এর ফলে বল হাওয়ায় কাঁপবে, আবার ফিল্ডিং করার সময় বল লাফাবে। কেউ আবার বলছেন, বল বিকৃতিকে আইনসিদ্ধ করা হোক। তা হলে ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ কী দোষে এত দিন শাস্তি পেলেন? তা ছাড়া, বল বিকৃত করলে পুরনো বলে রিভার্স সুইং-এর সুবিধা হয়, তখন আউটসুইং-ইনসুইং কম দেখা যাবে। আবার কেউ বলছেন, ক্রিম , মোমকৃৃত তরল পদার্থ ব্যবহার করা যেতে পারে। এখানেও একই প্রশ্ন, ইংল্যান্ডের বাঁহাতি পেস বোলার জন লিভারকে বাদ দেওয়া হয় ভেসলিনের সাহায্যে বলের সুইং করিয়েছিলেন বলে। তাঁকে কী বলা হবে?
আমার পরামর্শ, আরও একটু মোটা সুতো দিয়ে যদি বলের সিমের মাপ কমপক্ষে ২ সেন্টিমিটার বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তা হলে, চওড়া উন্নত সিম থাকলে, জোরে বোলার খুব ভাল সিম রোলিং করবেন ও বল ভাল যাবে, অবশ্যই সুইং বাড়বে, মাঝামাঝি ওভারগুলিতে অফ কাটার-লেগ কাটার বেশি দেখা যাবে।
সিম সেলাইগুলি (নতুন বলে তো বটেই) উঁচু থাকে, যা বাইরে থেকে দেখা যায়। কিন্তু বলের দুই ধারের মাঝখানে পাশাপাশি ও লম্বালম্বি ভিতর দিক থেকেও সেলাই থাকে, যা নতুন অবস্থায় দেখা যায় না। এই সেলাইও যদি আরও মোটা সুতো দিয়ে আরও চওড়া করা হয়, তা হলে বল যখন ক্রমশ পুরনো হবে, ভিতরের সেলাইও প্রকট হবে, যা রিভার্স সুইং-এর সহায়ক, আর বল বিকৃত করার কোনও প্রয়োজন নেই।
লাল বল, সাদা বল— দুইই তৈরির সময় কিছু সিন্থেটিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যাতে নতুন বলের চকচকে আস্তরণের সাহায্যে পেস বোলার সুইং করতে পারেন। এই কৃত্রিম পদার্থ আরও বেশি প্রয়োগ হয় গোলাপি বল তৈরির সময়। যার ফলে বল অনেক বেশি সুইং করে। এই রকম ভাবেই সব বল তৈরি হলে, ব্যাট-বলের লড়াই জমে যাবে।
আর একটা কথা মাথায় রাখা ভাল। টি-২০ ম্যাচে বল-এ থুতু, ঘাম প্রয়োগ খুব একটা জরুরি নয় (কারণ মাত্র ২০ ওভার খেলা হচ্ছে)। এক দিনের ৫০-৫০ ওভারের ম্যাচে দু’দিক থেকে দু’খানা বল ব্যবহার হয়, এক একটা নতুন বলে ২৫ ওভার চলে। সেখানেও থুতু, ঘাম অপব্যবহার না করে, উল্লিখিত পদ্ধতিতে নতুন বল তৈরিতে পরিবর্তন আনলে সমস্যার সমাধান হবে। প্রথম শ্রেণির (তিন দিনের) খেলায় ও টেস্ট ম্যাচে (পাঁচ দিনের খেলায়), ৮০ ওভার হওয়ার পরে, দ্বিতীয় নতুন বল পাওয়া যায়। এই ৮০ ওভার কমিয়ে ৫০ বা ৬০ ওভারের পরে যদি নতুন বল নেওয়া যায়, সেখানেও আর থুতু, ঘাম, মুখের লালা জরুরি থাকল না ।
সুশান্ত ভট্টাচার্য
কলকাতা-৫৩
বরং এ ভাবে
ক্রিকেট বল বিকৃত না করে বরং উইকেটে স্টাম্পের সংখ্যা তিনের জায়গায় চারটে করা হোক। অথবা ক্রিকেট ব্যাটের বদলে বেসবলের ব্যাট চালু করা হোক।
সচ্চিদানন্দ সিনহা
পাকুড়
দরকার ছিল?
একটি ছোট এলাকায় বিক্ষিপ্ত কিছু হিংসাত্মক ঘটনার জন্য যদি সমগ্র মহকুমায় পাঁচ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তা কি অমানবিক নয়? আজকের যুগে ইন্টারনেট যখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তখন হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার ক্ষতি করে, হাজার হাজার মানুষের কাজকর্মের (যার সঙ্গে রুজি-রোজগার জড়িত) ক্ষতি করে, প্রশাসনকে কয়েকটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে হল? মানুষ এখন এমনিতেই ঘরবন্দি। আতঙ্কে আছেন। এর মধ্যে আবার তাঁদের যদি জগৎ থেকেও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, তা হলে কী দশা হয়, সেটা প্রশাসন বুঝতে পারে না?
প্রশান্ত বসু রায়
চন্দননগর, হুগলি
সব দায়
‘সচেতনতার দায়’ (১৬-৫) শীর্ষক চিঠিতে লেখক লিখেছেন, আন্তর্জাতিক পথ রুদ্ধ করলে অতিমারি অনেকটা ঠেকানো যেত। কোন সময়ে এই পথ রুদ্ধ করা উচিত ছিল? ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, না কি মার্চ ? রুদ্ধ করার এই সঠিক সময়টা কী ভাবে শনাক্ত করা যাবে?
উনি বলেছেন, প্রশাসন মানুষকে ঘরবন্দি থাকতে বলছে, অথচ ঘরে ঘরে রেশন পৌছে দিতে পারেনি? শহর, শহরতলি, এতগুলি জেলা, এর প্রত্যেকটা জায়গার প্রতিটি নিরন্ন মানুষের ঘরে ঘরে কী ভাবে রেশন পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে? পুলিশ প্রশাসনের কর্মীদের সব অংশকে যদি এই কাজেই লাগানো হত, তা হলে তাঁদের অন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলি কী ভাবে সম্পন্ন হত? তা ছাড়া সব ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছনোর জন্য যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশকর্মী কি রাজ্য সরকারের আছে? প্রশাসনের অন্য বিভাগের কর্মীদের কাজে লাগানোর সুযোগ কতটা ছিল, বিশেষ করে এই অতিমারির সময়ে?
প্রশাসনের কাজের পর্যালোচনা অবশ্যই করতে হবে এবং করা দরকারও, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এবং তার প্রয়োগে অনেক খামতি থাকে। কিন্তু সব কিছুর সব দায় প্রশাসনের ঘাড় চাপিয়ে দেওয়ার আগে ভেবে দেখা দরকার, পৃথিবীর প্রথম সারির সব দেশ আজ হিমশিম খাচ্ছে এই অতিমারি সামলাতে, তাদের অতি দক্ষ প্রশাসন আর সচেতন নাগরিক নিয়েও। শুধু সমালোচনা করার জন্য সমালোচনা— এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়ে গিয়েছে।
শেখর চক্রবর্তী
কলকাতা-৮
‘ড্রামাবাজি’
পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে রাহুল গাঁধী দেখা করেছেন। নির্মলা সীতারামন তাকে ‘ড্রামাবাজি’ বলেছেন। দুর্দশাগ্রস্ত অসহায় হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো, পার্টি ফান্ডের মাধ্যমে তাঁদের পরিবহণের ব্যয় বহন করা অবশ্যই ‘ড্রামাবাজি’। ‘নতুন ভারত’-এর এই আবোলতাবোল পরিমণ্ডলে, চূড়ান্ত ব্যর্থ ব্যক্তিকে ‘দুর্দান্ত সফল’ রূপে চিহ্নিত করে আরাধনার বেদিতে প্রতিষ্ঠা দেওয়া হচ্ছে। হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েও অনুতাপ থেকে শত যোজন দূরে অবস্থান করা, আকস্মিক লকডাউনের মারাত্মক ভুক্তভোগীদের উদ্দেশ্যে বিন্দুমাত্র সহানুভূতি প্রকাশ না করা, রাজপথ বা রেলপথ বেয়ে ‘লং মার্চ’ করতে বাধ্য হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার মর্মান্তিক ঘটনাবলি সত্ত্বেও নূন্যতম অনুশোচনা প্রকাশ না করাটাই হল আজ ‘সভ্যতা’।
এই দেশে, এই পোড়া সমাজে, যেখানে দুর্বল মানুষের প্রতি সংবেদনশীল হওয়াটাই ‘দেখনদারি’ রূপে গণ্য, সেখানে রাহুল গাঁধীর মতো ‘ড্রামাবাজ’ আরও আবির্ভূত হোন।
কাজল চট্টোপাধ্যায়
পিয়ারলেস নগর, সোদপুর
সরলীকরণ
‘নীরা আজ ভাল আছে?’ (রবিবাসরীয়, ৩-৫) নিবন্ধে গৌতম চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘‘পরকীয়া নিয়ে সঙ্কোচ-টঙ্কোচ আমার নেই, চৈতন্যচরিতামৃত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, ‘পরকীয়াভাবে অতি রসের উল্লাস।’’’ উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটিকে অতিসরলীকরণ করে লেখার স্বার্থে প্রয়োগ করা হয়েছে। কারণ, উক্ত পঙ্ক্তিটির পরবর্তী চরণ হল : ‘‘ব্রজ বিনা ইহার অন্যত্র নাহি বাস।’’ অর্থাৎ কৃষ্ণদাস কবিরাজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বৃন্দাবনের শ্রীকৃষ্ণের লীলা ব্যতিরেকে এই ‘রতি’র অন্যত্র স্থান নেই, বা মর্যাদা স্বীকার্য নয়। তা ছাড়া, গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের আকর এই গ্রন্থে উপস্থাপিত ‘পরকীয়া’ রতির তাৎপর্য লৌকিক জগতের পরকীয়া রতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সুব্রত দাস
হিলি, দক্ষিণ দিনাজপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy