‘এক ফোনেই নিশি ঠেকে আসছে ‘ভাই’’ (৩১-৩, বর্ধমান কাটোয়া সংস্করণ) খবরের প্রেক্ষিতে বলি, কালনা শহরে চলছে মদের হোম ডেলিভারি। স্রেফ তিনটি শব্দ খরচ করলেই হবে। শুধু বলতে হবে, একটা ছোট ভাই। এই ভাবে মেজো ভাই, বড় ভাই। সঙ্গে সঙ্গে চলে আসবে কাগজে মোড়া মদের বোতল, দিশি, বিদেশি, যেমন চাই। এই ডেলিভারি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। দোকানে গেলে হ্যাপা। নির্দিষ্ট টাইমে দোকান বন্ধ। প্রশাসন জানে কিন্তু কিছু করতে পারছে না।
এর জন্য দায়ী সরকার। তার কোষাগার ভরাবার জন্যে মদের দেদার লাইসেন্স দিয়েই চলেছে। সরকারের আবগারি শুল্ক ৬৭ শতাংশের বেশি। বিহার মদ বন্ধ করেছে। বাংলা কেন পারবে না?
হাজী মাওলানা গোলাম মুস্তাফা পাতিলপাড়া, বর্ধমান
শিক্ষক বিপন্ন
‘ভাবিয়া দেখুন’ )১৯-৪) শীর্ষক সময়োপযোগী সম্পাদকীয়র জন্য ধন্যবাদ। শিক্ষামন্ত্রীর “গায়ের জোরে কোনও আচরণবিধি চাপাইয়া দেওয়া হইবে না” গোছের প্রতিশ্রুতির কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা শিক্ষকদের কাছে নেই। নিশ্চয় স্মরণে আছে, ২০১৭-র শিক্ষা বিল ২০১৬-র ডিসেম্বরে এক বার বিধানসভায় পেশ করার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু প্রতিবাদের ফলে তা সম্ভব হয়নি। বিলের কপি বিধায়কদের মধ্যে বিতরণ করার পরেও তা বিধানসভায় পেশ হয়নি, প্রত্যাহৃত হয়। তখনও মন্ত্রী বলেছিলেন, এমন বিল যে পেশ হবে, তা নাকি তিনি জানতেন না। পরে ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে দু’একটি শব্দ পরিবর্তন করে প্রায় হুবহু ওই বিলকে আইনে পরিণত তাঁরা করেছিলেন। ফলে এই বিধির ক্ষেত্রেও যে একই পরিণতি হবে না, নিশ্চয়তা কোথায়? উল্লেখ্য ,ওই ২০১৭-র শিক্ষা আইনের খসড়া বিধিই এখন তৈরি হচ্ছে। গায়ের জোরে যদি তাঁরা আচরণবিধি না চাপাতে চান, তা হলে আইন প্রণয়নের আগেই বা শিক্ষক-শিক্ষাবিদ-পড়ুয়াদের মতামত নিলেন না কেন?
এই বিধির মাধ্যমে তাঁরা উচ্চশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের দশটা-পাঁচটা কাজের ঘণ্টায় বাঁধতে চাইছেন। তাঁদের কি ন্যূনতম ধারণা আছে, এক জন এই স্তরের শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে ঢোকার আগে পাঠনের বিষয়বস্তু প্রস্তুত করতে কত সময় দিতে হয়? বা গবেষকের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে এক জন অধ্যাপককে গ্রন্থাগার, রেফারেন্স জার্নাল বা রেফারেন্স বইয়ের সঙ্গে কত ঘণ্টা নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হয়? বায়োমেট্রিক প্রয়োগ করে শিক্ষকদের সাত ঘণ্টা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আবদ্ধ রাখলে এই কাজ সম্ভব হবে? ঠিকই, কিছু কালো ঘোড়া আছে, যারা এর সুযোগ নেয়। তাদের জন্য অন্য ব্যবস্থা হোক। কিন্তু তার জন্য সমস্ত পঠন-পাঠন-গবেষণার পরিবেশকে ধ্বংস করা হবে কেন? বর্তমান সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে ‘শিক্ষকদের উপস্থিতি বাড়াতে চাইছি, দায়বদ্ধ করতে চাইছি’— কথাগুলো আপাত ভাবে শুনতে ভাল হলেও, এর কুফল সুদূরপ্রসারী। এর মাধ্যমে এই পেশার খুঁটিনাটি সম্পর্কে যাঁরা ততটা ওয়াকিবহাল নন, তাঁদের মনে শিক্ষকদের সম্পর্কে অশ্রদ্ধা সৃষ্টি করা যাবে, দেখানো যাবে সরকার শিক্ষার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কত চিন্তিত। কিন্তু শিক্ষার মঙ্গল কিছু হবে না।
বিধির সর্বাপেক্ষা আপত্তিজনক ধারাটি হল, শিক্ষকরা এখন থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত কোনও বিষয় বা রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললে বা প্রবন্ধ লিখলে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। অন্য এক ধারায় বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের আচরণ যদি কেবল সরকারের চোখে অনিষ্টকর মনে হয়, তা হলেই তিনি বরখাস্ত হতে পারেন। অর্থাৎ এই সরকার আইন করে শিক্ষকদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে। মতপ্রকাশের অধিকার মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার। যুগে যুগে দেশে দেশে এই অধিকারের পক্ষে লড়াই হয়েছে। আমাদের দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনে তার ভূরি ভূরি উদাহরণ আছে।
ব্রিটিশ সরকার যখন কার্লাইল সার্কুলার জারি করে শিক্ষক ও ছাত্রের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিল, তখন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কলেজের শিক্ষক-পড়ুয়ারা দেশবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। রাজ্য সরকারে আসীন দলটি যদি তখন ক্ষমতায় থাকত, তা হলে রবীন্দ্রনাথদের কী দশা হত, তা ভেবে অনেকেই শঙ্কিত!
এ সব কিছুর উপরেও গুরুত্বপূর্ণ হল, এই বিধির ধারাগুলোর মাধ্যমে শিক্ষকদের চরম অসম্মান করা হচ্ছে। শিক্ষকতা অন্য যে-কোনও পেশা থেকে ভিন্ন মাত্রার, শিক্ষকরা যে জ্ঞানের স্রষ্টা, তাঁরাই যে ভবিষ্যৎ নাগরিক গড়ে তোলেন— এই স্বীকৃতি না দিয়ে তাঁদের ভাবমূর্তিকে ধুলোয় মিশিয়ে দিলে, শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল রাখবে কে?
তরুণকান্তি নস্কর কলকাতা-৩২
গাপ্পি
‘ডেঙ্গি নিধনে পুকুরে গাপ্পি’ (১৮-৪) শীর্ষক খবরে পড়লাম দক্ষিণ দমদম পুরসভার পুকুরগুলিতে ২৫ হাজার গাপ্পি মাছ ছাড়া হল। ২২৫টা পুকুরে এক লক্ষের বেশি এই মাছ ছাড়া হবে। এতে দমদম পুরসভার খরচ হবে কয়েক লক্ষ টাকা। গাপ্পিদের বংশবৃদ্ধির হার অত্যধিক। এরা সর্বভুক। অন্যান্য মাছ, শৈবাল ও উপকারী জলজ প্রাণীর লার্ভা, যা পায় তা-ই খায়। এমনকি নিজের বাচ্চাদেরও খায়। অনেক উপকারী প্লাঙ্কটন খেয়ে ক্ষতি করতে পারে। এই মাছ যদি নদী পুকুরে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, তা হলে দেশজ মাছের ক্ষতি হতে পারে। মানুষ এই মাছ খায় না। বাংলাদেশে ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে গাপ্পি মাছ চাষ করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোনও ফল পাওয়া যায়নি। সুতরাং গাপ্পি সম্পর্কে সব দিক ভাল ভাবে যাচাই করে চাষ করা বাঞ্ছনীয়। নতুবা আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রে ক্ষতি হতে পারে।
প্রভুদান হালদার বাসন্তী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
কংগ্রেসের পথ
‘মমতার সঙ্গে বোঝাপড়া চান রাহুল’ (২৬-৪) শীর্ষক প্রতিবেদনে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা
সম্পূর্ণ ভুল। যে মিটিংয়ের প্রসঙ্গে এই খবর লেখা হয়েছে, সেখানে হাজির ছিলেন মাত্র দু’জন ব্যক্তি— কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং আমি। প্রতিবেদনে প্রকাশিত গুলাম নবি আজাদজির মতামত পুরোপুরি তাঁর নিজস্ব। রাহুলজি ওই কথাগুলি কখনওই বলেননি। ‘‘কংগ্রেস কখনও কারও কাছে মাথা নত করেনি, করবেও না’’— এটাই ছিল রাহুল গাঁধীর বার্তা।
অধীর চৌধুরী সাংসদ, লোকসভা; প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, পশ্চিমবঙ্গ
প্রতিবেদকের উত্তর: রাহুল গাঁধী অধীর চৌধুরীকে কী বলেছেন, সংবাদ প্রতিবেদনে সেটা জানানো হয়েছে। অধীরবাবুকে তিনি লড়তে বলেছেন, মাথা নত করতে মানা করেছেন— সেটাও লেখা হয়েছে। আবার কংগ্রেস হাই কম্যান্ড আসলে কী চাইছেন, সেটাও নেতারা আমাদের জানান। এক দিকে রাহুল গাঁধী রাজ্য স্তরে অধীরবাবুকে যেমন রাজ্যে গিয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে বলেছেন, অন্য দিকে মমতার সঙ্গেও বোঝাপড়ার রাস্তা খোলা রাখতে চান তিনি। সেটা হল জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা।
ভ্রম সংশোধন
দেবযানী চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারে (‘অভিনয়ের পরিসরটা ছোট হয়ে আসছে’, ৩০-৪, আনন্দ প্লাস) অভিনেত্রীর স্বামীর নাম লেখা হয়েছে অরিজিৎ। ঠিক তথ্যটি হল: তাঁর স্বামীর নাম শ্রীমন্ত চট্টোপাধ্যায়। দেবযানী চট্টোপাধ্যায় এবং অরিজিৎ চৌধুরী হলেন যুগ্ম ভাবে ‘গোল্ডেন আই’ সংস্থার কর্ণধার। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy