—ফাইল চিত্র।
নিকষ, নিষ্ঠুর অন্ধকারে অবশেষে একটা আলোকবিন্দু। অস্তগামী সূর্যেরই দিগন্ত ওই পশ্চিম। কিন্তু দিগন্তে জমাট গাঢ় অন্ধকারটা যাতে দুর্ভেদ্য প্রাচীর না হয়ে ওঠে, তার জন্য একটা অন্তত সলতে জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা হল।
তীব্র বিদ্বেষ-বৈরিতায় ঠাসা কয়েকটা দিন পার করে অবশেষে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলল ভারত-পাকিস্তান। পশ্চিমের প্রতিবেশীর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে দূরভাষিক আলোচনা হল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার। ইসলামাবাদের তরফ থেকে গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে জানানোও হল যে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে দু’দেশ কথা বলতে শুরু করেছে।
২৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনার পদস্থ কর্তা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছে এবং পাক সেনাকর্তাকে সে কথা জানানোও হয়েছে।
সম্ভবত সেই ছিল শেষ কথা। তার পর থেকে শুধু হুঙ্কার, পাল্টা হুঙ্কার। আগুন হয়ে উঠছিল নিয়ন্ত্রণ রেখা ক্রমশ। প্রতি মুহূর্তে বিদ্বেষ-বিষের প্রবাহ বাড়ছিল দুই ‘সহোদর’-এর শিরা-উপশিরায়।
পৃথিবীটা কিন্তু দিনের শেষে বিদ্বেষেই ফুরিয়ে যায় না। সভ্যতার ব্যপ্তি বিপুল। তার অসীম পরিসরে এবং তাতে নিহিত অপার শক্তিতে বিদ্বেষের প্রাবল্য অনেক বারই অকিঞ্চিৎকর হয়ে পড়েছে। এ বারও তাই হল। ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব উপলব্ধি করলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের ভাষাটাই শেষ উচ্চারণ হতে পারে না। মানুষের ভাষাটা মহত্তর। অন্তিম প্রয়াস সেই পথেই হওয়া জরুরি।
দু’দেশের দুই দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তি নিজেদের মধ্যে উত্তেজনার প্রশমন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন আর তাতেই সব প্রতিকূলতায় ইতি পড়েছে, পরিস্থিতি তেমন নয় মোটেই। আগুন এখনও যথেষ্ট গনগনে। তার আঁচে এখনও অনেক ঘর পোড়ার আশঙ্কা। আগুন বাড়বে আরও, না প্রশমনের সজল, স্বচ্ছ ধারা নামবে নিয়ন্ত্রণ রেখায়, তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু প্রশমনের ইচ্ছাটা যে মন থেকে নিঃশেষে মুছে যায়নি, সে বার্তাটুকু অন্তত মিলল।
পদচারণা বা পদক্ষেপটা জীবনের দিকেই হওয়া উচিত, বিপরীত দিশায় নয়। এই কথাটা আমরা কেউই যে পুরোপুরি ভুলে যাইনি, সে বিষয়ে অন্তত আশ্বস্ত হওয়া গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy