খনি থেকে কয়লা অন্যত্র পরিবহণের জন্য এ বার নিজস্ব রেল ওয়াগন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোল ইন্ডিয়া। ২০২০ সালের মধ্যে ২ হাজার ওয়াগন কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই বাবদ যা খরচ হবে, তার পুরোটাই বহন করবে তারা। এই প্রথম ওয়াগন কেনার পরিকল্পনা হাতে নিল দেশে কয়লা উৎপাদনের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা।
দেশে কয়লার চাহিদা মেটাতে উৎপাদন বাড়ানোর বড় মাপের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কোল ইন্ডিয়া। ওই পরিকল্পনায় ২০২০ সালের মধ্যে উৎপাদন দ্বিগুণ করে ১০০ কোটি টনে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। তা বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থা বা অন্য কোনও স্থানে সরবরাহ করতেই ওয়াগন কেনা হবে। উল্লেখ্য, চলতি আর্থিক বছরের শেষে ৫০ কোটি টনের মতো কয়লা উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
খনি থেকে কয়লা উৎপাদনের পরে তা নির্দিষ্ট স্থানে সরবরাহ করার ব্যাপারে ওয়াগনের অভাব চিরকালই বড় সমস্যা। ফলে কয়লা তোলা হলেও তা একটা বড় সময় ধরে পড়ে থাকে খনি মুখে। অন্য দিকে কয়লার অভাবে ব্যাহত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিভিন্ন কাজ। এত দিন ওয়াগন পাওয়ার জন্য রেলের কাছেই আবেদন করত কোল ইন্ডিয়া। এ বার সমস্যা মেটাতে নিজেই উদ্যোগী কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দেশে চাহিদা যে-ভাবে বাড়ছে, তাতে ২০২০ সালে প্রয়োজন হবে ১২০ কোটি টন কয়লা, যার ১০০ কোটি টনই তৈরি করার কথা কোল ইন্ডিয়ার। বাকি প্রয়োজন মেটানো হবে মূলত নিজস্ব ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সংস্থার হাতে দেওয়া খনি (ক্যাপটিভ মাইন) থেকে। দেশে কয়লা উৎপাদন দ্রুত বাড়ানো সম্ভব না-হলে ওই চাহিদা মেটাতে অনেকটাই নির্ভর করতে হবে আমদানির উপর, যার খরচ বেশি। এই কারণেই কেন্দ্র কয়লা উৎপাদন বাড়ানোর উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। পরবর্তী ধাপে তা সংস্থায় পৌঁছে দিতেই এ বার নিজস্ব উদ্যোগ কোল ইন্ডিয়ার।
কোল ইন্ডিয়ার যে ১০০ কোটি টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশেষ ভূমিকা নেবে তার নিজস্ব শাখা সংস্থা সম্বলপুরের মহানদী কোলফিল্ডস এবং বিলাসপুরের সাউথ ইস্টার্ন কোলফিন্ডস (এসইসিএল)। পরিকল্পনা অনুযায়ী মহানদী কোলফিল্ডস উৎপাদন করবে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টন এবং এসইসিএল ২ কোটি ৪০ লক্ষ টন। কয়লা পরিবহণে রেল যোগাযোগ পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই এসইসিএল সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে দু’টি বিশেষ সংস্থা (স্পেশাল পারপাস ভেহিকল) গড়ে তুলেছে। এ ধরনের আরও সংস্থা গড়ে তোলা হবে বলে কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ওই সংস্থাগুলির কাজ হবে রাজ্য এবং রেলের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে রেল যোগাযোগ পরিকাঠামো গড়ে তোলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy