ফাইল চিত্র।
ব্যাঙ্কক ও নিউ ইয়র্ক, ৫ এপ্রিল: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এক দিকে ধাক্কা খাচ্ছে পণ্য সরবরাহ, অন্য দিকে দাম বাড়ছে জিনিসপত্রের। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে বিভিন্ন দেশে আর্থিক সঙ্কট। এই ত্র্যহস্পর্শে চলতি বছরে এশিয়া মহাদেশের আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ হতে পারে বলে সতর্ক করল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। মঙ্গলবার প্রকাশিত রিপোর্টে এ বছর এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫ শতাংশে নামিয়েছে তারা। এর আগে যা ৫.৪% হবে বলে জানানো হয়েছিল। তারা বলেছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তা নামতে পারে ৪ শতাংশে।
এই যুদ্ধ যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে, তা এর আগেই জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং মূল্যায়ন সংস্থা। এমনকি, ভারতের মতো যে সব দেশ প্রয়োজনীয় জ্বালানির বড় অংশ বিদেশ থেকে কেনে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হতে পারে, এই হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল একাংশ। বিশ্ব ব্যাঙ্কেরও ধারণা, অতিমারিতে এশিয়ার যে ৮০ লক্ষ পরিবার ফের দারিদ্রসীমার নীচে নেমেছে, মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের জীবনযাপন আরও নিম্নমুখী হবে। তেমনই ধাক্কা খাবে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সংস্থাগুলি। বিশেষত, চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার গত বছরের ৮.১% থেকে এ বছর ৫ শতাংশে নামতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।
করোনার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্ব অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছে। বেড়েছে বিভিন্ন দেশের ঋণের অঙ্ক। এর পরে যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর মাত্রা ছাড়িয়েছে। এ নিয়ে সতর্ক করে জেপি মর্গ্যানের চেয়ারম্যান এবং সিইও জেমি ডিমন শেয়ারহোল্ডারদের পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, তেলের এই চড়া দর আরও ঠেলে তুলতে পারে খাদ্য ও বিদ্যুতের দামকে। সেই সঙ্গে করোনা যুঝতে বিভিন্ন দেশের সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত, আর্থিক মন্দা, রাশিয়ার উপরে পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞাও বিশ্বের সামনে চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের সমীক্ষা বলেছে, তেলের দাম পরোক্ষ ভাবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে চাহিদায়। এই কারণ দেখিয়ে ইতিমধ্যে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটেছে ফিচ, ইক্রা, মর্গ্যান স্ট্যানলির মতো রেটিং ও উপদেষ্টা সংস্থা। খোদ সরকার তা ৯.২% থেকে কমিয়ে করেছে ৮.৯%। আইএমএফ বলেছিল, গোটা বিশ্বই ঝুঁকির মুখে। তবে ভারতকে নিয়ে চিন্তা বেশি, কারণ বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের বিরাট বড় খদ্দের তারা। সংস্থাগুলিও কাঁচামালের চড়া দামে ধুঁকছে। তার উপরে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ মূল্যবৃদ্ধি যুঝতে সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটার চাপও পড়েছে অর্থনীতির উপরে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতে, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। উপরন্তু চিনে ফের নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোয় শাংহাইয়ের মতো শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বেজিংয়ের সঙ্গে যে সমস্ত দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গভীর, তারা এ যাত্রায় বেশি ধাক্কা খাবে। তারা বলছে, এই সঙ্কট কাটাতে আগামী মাসগুলিতে একসঙ্গে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সংস্কারের পথে হাঁটতে হবে দেশগুলিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy