গত গ্রীষ্মে ভোগান্তি হয়েছিল বিস্তর। কয়লার ঘাটতির জেরে উৎপাদন এতটাই ধাক্কা খেয়েছিল যে, বেশি দামে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনে রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটাতে হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে। এ বছর গরমে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে তড়িঘড়ি ঢাল হিসেবে কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। শীত পুরোপুরি বিদায় নেওয়ার আগেই।
নিগমের পরিচালন পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী গরমে, এমনকি তার পরেও ঘাটতির বিপদ এড়াতে ৩ লক্ষ টন কয়লা কেনা হবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। এ জন্য শীঘ্রই চাওয়া হবে দরপত্র। প্রশাসন সূত্রে খবর, কয়লা আমদানির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে নবান্নও।
বিদ্যুৎ শিল্পের একাংশের দাবি, বিশ্ব বাজারে কয়লার দাম এখন তুলনায় অনেকটা কম। উল্টো দিকে গ্রীষ্মে গ্রিডে বিদ্যুতের দাম প্রায় প্রতি দিন চড়তে থাকে। তাই সস্তায় আগাম কয়লা কিনে রাখলে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে তারা।
নিগমকে এখন কয়লার জন্য পুরোপুরি কোল ইন্ডিয়ার মুখ চেয়ে থাকতে হয়। কারণ, নিগমের নিজস্ব পুরনো খনিগুলি থেকে এখনও উত্তোলন শুরু হয়নি। রাজ্য বিদ্যুৎ কর্তাদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে গত বছর গরমে আচমকা বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায়, দেশের প্রায় প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেই কয়লা জোগাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল কোল ইন্ডিয়া। যে কারণে গ্রীষ্মে তো বটেই, তার পরেও পশ্চিমবঙ্গের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মাথা তুলেছিল প্রবল জ্বালানি সঙ্কট। ধাক্কা খায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও।
ওই কর্তাদের দাবি, কোল ইন্ডিয়ার কয়লাও চাহিদা মতো না মেলায় শেষ পর্যন্ত চড়া দরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনে পরিস্থিতি সামলাতে হয়। সূত্রের খবর, পুজোর সময় সামান্য কিছু কয়লা আমদানিও করতে হয়েছিল। এ বছর তাই রাজ্যের পরামর্শ মেনেই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না নিগম কর্তৃপক্ষ। প্রায় বছর চারেক বাদে নিগমের পর্ষদ কয়লা আমদানিতে ছাড়পত্র দিয়েছে। ধাপে ধাপে ৩ লক্ষ টন কিনে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মজুত করলেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে, বলছেন বিদ্যুৎ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy